মিরাকেল হয় না কে বলেছে? ঐন্দ্রিলা শর্মা নিজের জীবন দিয়েই যেন বারবার সেটার প্রমাণ দিচ্ছেন। কয়েকদিন আগেই ঐন্দ্রিলা শর্মার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। হার্টবিট রেট নামতে শুরু করে। একটা সময় সেটা ৪০ এর নিচে নেমে যায়। মনিটরে তখন আর কোনও সংখ্যা নেই। কেবলই শূন্যতা। প্রিয়জনরা কাঁদতে শুরু করেছেন। মেয়েটা কি তবে সমস্ত লড়াই শেষ করে দিল? এত মানুষের প্রার্থনা, চিকিৎসকদের চেষ্টা বিফলে গেল? শুরুতে তাই মনে হয়েছিল। তবুও চিকিৎসকরা হার মানেননি। লড়াই চালিয়ে যান। যদি কিছু করা যায়।
এক মিনিট, দু মিনিট করে কয়েক মিনিট কাটে। তারপরেই ম্যাজিক ঘটে যায়। ম্যাজিক নয় তো কী! ঐন্দ্রিলার থমকে যাওয়া হৃদস্পন্দন ফেরত এল যে। চিকিৎসকদের চেষ্টায় সাড়া দিল লড়াকু মেয়েটা। মনিটর দেখাচ্ছে হার্টবিট রেট ১২০। কিন্তু ফের হার্টবিট কমতে শুরু করে। কমতে থাকে রক্তচাপ। হাসপাতালের নিউরো সার্জেন ডাকা হলে তিনি জানান, 'ঐন্দ্রিলা নেই। ও চলে গিয়েছে অনেকক্ষণ। এভাবে ওকে আটকিয়ে রেখো না। লেট গো হার পিসফুলি।'
সব্যসাচী, ঐন্দ্রিলার লড়াইয়ের সঙ্গী কিন্তু হাল ছাড়েননি চিকিৎসক বলার পরেও। সবাই তখন শেষের প্রহর গুনছে। ফেসবুকেও ততক্ষণে ছড়িয়ে গেছে 'খবরটা'। একা সব্যসাচী হাল ছাড়েননি, ঐন্দ্রিলার হাত ধরে মিরাকেলের অপেক্ষায় ছিলেন। আর সেটাই হল! সব্যসাচীর কথায়, 'কিন্তু রাখে বড়মা মারে কে?'
অভিনেতা তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে লেখেন, ' বিকেলে ঐন্দ্রিলার শরীর ঠাণ্ডা, হাত, পা, মুখ ফুলছে। হার্টবিট রেট ৪৬, বিপি ৬০/৩০। আগেরদিন ডাক্তারের কথাটা কেবলই মাথায় ঘুরছিল, ওর শরীরটাকে আটকে রাখার জন্য নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছিল। থাকতে না পেরে ওর মাকে বললাম এত কষ্ট দেখতে করছি না যে। শান্তিতে যেত। কিন্তু মুখে বললেও কী মন মানে? মায়ার টান যে বড় কঠিন।' ঠিকই তো, মায়ার টান কাটানো বড়ই কঠিন।
তবে নিয়তির অন্য কিছু ইচ্ছে ছিল বোধহয়। সেদিন রাত আটটায় আরও একবার মিরাকেল ঘটল। ঐন্দ্রিলার অসাড় হয়ে যাওয়া হাত নড়ল, হার্টবিট রেট বেড়ে ৯১! ১৩০/৮০ রক্তচাপ। শরীর ক্রমশ গরম হতে থাকে। নতুন করে বাঁচার লড়াইয়ে ফিরে আসেন ঐন্দ্রিলা।
বেঁচে থাকার লড়াই কাকে বলে এই লড়াকু অভিনেত্রী যেন প্রতিপদে আমাদের সকলকে দেখিয়ে দিচ্ছে। কী অদম্য জীবন শক্তি। কী অদম্য বাঁচার চেষ্টা। সব্যসাচী জানান, বর্তমানে ঐন্দ্রিলা আগের তুলনায় ভালো আছেন। একপ্রকার কোনও সাপোর্ট ছাড়া আছেন। ভেন্টিলেশনে থেকেও বেরোনোর চেষ্টা করছেন অভিনেত্রী।
ইতিমধ্যেই গায়ক অরিজিৎ সিং তাঁর চিকিৎসার সমস্ত দায়ভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। এই কারণে সব্যসাচী তাঁর পোস্টে ধন্যবাদ জানান অরিজিতকে।