ছোট থেকেই নবাবিয়ানার মধ্যে বড়ো হয়েছেন সইফ আলি খান। নবাবি আদব-কায়দা তাঁর কাছে জলভাত। পর্দায় তা ফুটিয়ে তুলতে আলাদা করে কোনও কিছু শেখবার প্রয়োজন নেই। আর সইফের এই নবাবিয়ানা ভীষণরকমভাবে কাজে এসে তাঁর আসন্ন সিরিজ ‘তাণ্ডব’-এর জন্য। সইফের চোখ ধাঁধানো পতৌদি প্যালেসে হামেশাই শ্যুটিংয়ের কাজ হয়ে থাকে, তবে রাজপ্রসাদের ভিতরে কোনওদিন শ্যুটিংয়ের অনুমতি দেন না সইফ। কিন্তু ‘তাণ্ডব’-এর জন্য সইফ প্রথমবার নিময় বদলেছেন।
আলি আব্বাস জাফর পরিচালিত এই ছবিতে এক বেপরোয়া রাজনীতিবিদের ভূমিকায় রয়েছেন সইফ। বাবা দেশের প্রধানমন্ত্রী, এবং বাবার মৃত্যুর পর সেই জায়গা নিতে মরিয়া সমর প্রতাপ সিং (সইফের চরিত্রের নাম)। প্রভাবশালী পরিবারের আভিজাত্য আর বনেদিয়ানা ফুটিয়ে তুলতে একটা রাজপ্রাসাদের প্রয়োজনীয়তা ছিল শুরু থেকেই।

মিড-ডে'কে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে সইফ জানিয়েছেন পতৌদির প্রসাদ ভাড়া দেওয়া এখনও তাঁকে বিচলিত করে তোলে। ‘আমি কখনও কখনও এটা শ্যুটিংয়ের জন্য ভাড়া দিয়ে থাকি, কারণ বছরের ৩৪০ দিন ওটা ফাঁকাই পড়ে থাকে। আজকাল ফিল্মের ক্রিউ মেম্বাররা নিঃসন্দেহে দায়িত্ব নিয়েই শ্যুটিং করে, এবং ভেন্যুর যথেষ্ট দেখভাল করে। তবে পতৌদির প্যালেসে শ্যুটিং করবার ভাবনা এখনও আমাকে নার্ভাস করে দেয়। আমি মূলত প্যালেস চত্বর ও বাইরের অংশই শ্যুটিংয়ের জন্য ভাড়া দিই, তবে তাণ্ডবের বিষয়টা ব্যতিক্রম (ভিতরে শ্যুটিং)', জানিয়েছেন সইফ।
'এই প্যালেসটা আমাদের লুকটা রাজকীয় করে দিয়েছে। আসলে ওখানে যে কেউ দাঁড়ালেই তাঁকে রাজকীয় দেখায়', যোগ করেন সইফ। উল্লেখ্য হরিয়ানার গুরুগ্রামে অবস্থিত পতৌদি প্যালেস। সইফের পূর্বপুরুষরা ওইখানকার নবাব ছিলেন। রাজপাট না থাকলেও আজও ওখানকার মানুষের কাছে নবাব বলেই পরিচিত সইফ আলি খান।
পতৌদির প্যালেস সম্পর্কে গত বছর মুম্বই মিররকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে সইফ জানান- এই সম্পত্তির কোনও নির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারণ করা কার্যত অসম্ভব কারণ পতৌদির প্যালেসের সঙ্গে অনেক আবেগ, অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। ‘আমার বাবা-ঠাকুরদাদের কবর রয়েছে ওখানে, ওই জয়গার পবিত্রতা আমার কাছে অন্যরকম- একটা আধ্যাত্মিক যোগ আছে ওই জমির সঙ্গে। ওই জমিটা তো কয়েক শ’ বছর ধরে আমাদের সম্পত্তি, তবে ওই হাভেলিটা আমার ঠাকুরদা (ইফতিকার আলি খান) বানিয়েছিলেন ঠাকুমার জন্য- ওটার বয়স একশো বছর। ওই সময় উনি পতৌদির নবাব ছিলেন- তবে সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে নবাবি প্রথা বিলুপ্ত হয়েছে। পরবর্তী সময়ে বাবা যখন ওই প্যালেস লিজে দিয়েছিল তখন অমন(নাথ) এবং ফ্রান্সিস (ওয়াকজিরাং) সেই হোটেল চালাতো। ওরা একেবারেই আমাদের পরিবারের মতো। আমার মায়ের সেখানে আলাদা কটেজ ছিল, উনি যে কোনওসময় সেখানে যেতে পারতেন', জানান সইফ আলি খান।
সইফ ছাড়াও তাণ্ডবে মুখ্য চরিত্রে রয়েছেন সুনীল গ্রোভার, মহম্মদ জিশান আয়ুব, ডিম্বল কাপাডিয়া, কৃতিকা কামরারা। ১৫ জানুয়ারি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আমাজন প্রাইমে স্ট্রিমিং শুরু হবে এই শো-এর।