অভিনেতা সইফ আলি খানকে ছুরিকাঘাত মামলায় অভিযুক্তকে বুধবার পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। শরিফুল ইসলাম শেহজাদ মোহাম্মদ রোহিলা আমিন ফকির নামের এই ব্যক্তিকে ১৯ জানুয়ারি থানে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাংলাদেশ থেকে আসা এই অবৈধ অভিবাসী অভিযুক্তকে ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়, যা শুক্রবার শেষ হওয়ার কথা ছিল।
মামলার শুনানি শেষে আদালত পর্যবেক্ষণ করে যে এই বিষয়ে যথেষ্ট এখনও কিছু তদন্তের প্রয়োজন আছে এবং অন্যান্য দিকগুলিও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এতে বলা হয়েছে যে অপরাধটি গুরুতর এবং দায়রা আদালত দ্বারা বিচারযোগ্য। ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত রিমান্ডের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
সইফকে ছুরিকাঘাত মামলায় অভিযুক্তের বাবার দাবি, তাঁর ছেলে নির্দোষ
‘আমরা গরিব হতে পারি, কিন্তু আমরা অপরাধী নই। বাংলাদেশে ও জীবিকার তাগিদে সাইকেল রিক্সা চালাতেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের আমলে এবং গত বছরের শুরুতে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমাদের গ্রামে অনেক রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছিল।’, বলেন অভিযুক্তের বাবা রুহুল ফকির। ‘যেহেতু আমার ছেলে খালেদা জিয়ার সক্রিয় সমর্থক ছিল, তাই তাকে অনেক প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হয় এবং তাই ও আরও ভালো উপার্জনের আশায় এবং একটু ভালো জীবনযাত্রার মানের খোঁজে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, তার ছেলের গ্রেফতারের বিষয়টি তিনি বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে 'কূটনৈতিক ইস্যু' হিসেবে তুলে ধরবেন। অপর এক সাক্ষাৎকারে রুহুল ফকির দাবি করেন, হামলার পর সিসি ক্যামেরার ফুটেজে যে সন্দেহভাজনকে দেখা গিয়েছে, সে কিছুতেই তাঁর ছেলে নন।
গত ১৬ জানুয়ারি ভোরে বান্দ্রায় সইফ ও করিনার বাড়িতে ডাকাতির চেষ্টার সময় একাধিকবার ছুরিকাঘাত করা হয় অভিনেতাকে। অস্ত্রোপচারের পাঁচ দিন পর সইফ আলি খানকে লীলাবতী হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বয়ান রেকর্ড সইফের
এদিকে পুলিশের কাছে বয়ানে সইফ জানিয়েছেন, সাতগুরু শরণ বিল্ডিংয়ের ১১ তলায় স্ত্রী করিনা কাপুরের সঙ্গে নিজের বেডরুমে ছিলেন তিনি। রাত আড়াইটে নাগাদ ছোট ছেলে জেহ-এর আয়ার চিৎকার শুনতে পান তাঁরা। চিৎকার তাদের জাগিয়ে তোলে এবং তারা সেই ঘরে ছুটে যান যেখানে তারা অনুপ্রবেশকারীকে দেখেছিল। আয়া - এলিয়ামা ফিলিপস - চিৎকার করছিল আর জেহ কাঁদছিল।
সইফ জানান যে, এরপর তিনি অনুপ্রবেশকারীকে থামানোর এবং ছেলে ও ছেলের আয়াকে বাঁচানোর চেষ্টা করার সময়, আততায়ী তাঁকে ছুরি দিয়ে আক্রমণ করে। এবং পিঠে, ঘাড়ে এবং হাতে বেশ কয়েকবার ছুরিকাঘাত করে। অভিনেতা আরও জানান, আয়া ও জেহকে নিয়ে পালানোর সময় তিনি ওই অনুপ্রবেশকারীকে ধাক্কা দিয়ে ঘরের ভিতরে ঢুকিয়ে দেন। সইফ জানান, এরপর তিনি অনুপ্রবেশকারীকে ছোট ছেলে জেহ-র ঘরেই তালাবদ্ধ করে দেন। পরে উপরের তলা থেকে কর্মচারীরা নীচে নেমে এলে, সবাই মিলে যখন দরজা খোলে, তখন দেখা যায় সে আর ওই ঘরে নেই।
মঙ্গলবার লীলাবতী হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে সইফ ফিরে আসেন তাঁর বান্দ্রার অ্যাপার্টমেন্টেই। সইফ, করিনা এবং তাদের দুই সন্তান তৈমুর ও জেহকে সাময়িক নিরাপত্তা প্রদান করা হয়েছে মহারাষ্ট্র পুলিশের পক্ষ থেকে। দু'জন কনস্টেবল নিষুক্ত করা হয়েছে।