গত মাসে সইফ আলি খানের উপর ঘটা হামলা নিয়ে চর্চার শেষ নেই। সইফ-করিনার অ্যাপার্টমেন্টে চুরি করতে ঢুকে অভিনেতার উপর ৬ বার চুরির কোপ মারে এক দুষ্কৃতী। সেই নিয়ে হইচই কাণ্ড। ১৬ই জানুয়ারি, ভোররাতে ঘটা সেই ঘটনায় ইতিমধ্যেই পুলিশের জালে বাংলাদেশি অভিযুক্ত শরিফুল ইসলাম।
ওই রাতের ঘটনার ঘনঘটা নিয়ে দেশবাসীর মনে প্রশ্নের অন্ত নেই। কীভাবে চোর ঢুকল, কেন রক্তাক্ত সইফকে নিয়ে হাসপাতালে গেল ৮ বছরের তৈমুর? পাঁচ দিনের মধ্যেই কীভাবে সইফ ফিটফাট হয়ে নিজের পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরলেন? এই সব প্রশ্নের জবাব দিলেন অভিনেতা। শুরুতে জানা গিয়েছিল সাইফ আলি খান একা, নিরস্ত্র অবস্থায় হামলাকারীর মুখোমুখি হয়েছিলেন। অন্যদিকে হামলাকারীর হাতে দুটি ছুরি ছিল। তবে নতুন এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা জানিয়েছেন, তিনি তলোয়ার হাতে হামলাকারীর পিছু নেন, তবে করিনা বাধা দেন।
দিল্লি টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সইফ আলি খান বলেন, হামলাকারীকে কোণঠাসা করার পর তিনি ও তার বাড়ির পরিচারিক হরি দেওয়ালে সাজানো দুটো তলোয়ার বের করেছিলেন। কিন্তু তারা এগুলো ব্যবহার করেননি। সইফ বলেন, 'যেন একটা চলচ্চিত্রের দৃশ্য ছিল যেখানে আমি রক্তে মাখামাখি ছিলাম এবং আমরা দেয়াল থেকে দুটি আলংকারিক তরোয়াল বার করি। আর সেটাই দেখল তৈমুর – আমি রক্তে মাখামাখি আর বাড়ির কাজের লোক হরি, ওর হাতে দুটো তলোয়ার। সুতরাং, সেই মুহূর্তে এটা কিন্তু বীরত্বপূর্ণ ছিল, অন্তত সেই মুহুর্তটি (হাসি)। আমরা বললাম- 'চলো ওকে ধরে নিয়ে আসি'। কিন্তু করিনা বললেন- ‘না, চলো আমরা বেরিয়ে যাই! কারণ তোমাকে এখন হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে, এবং আমাকে জেহকে এখান থেকে বের করতে হবে আশেপাশে ওর আরও সঙ্গী থাকতে পারে বলে আমার ভয় করছে’।
একই সাক্ষাত্কারে, অভিনেতা বলেছিলেন যে তিনি বাড়িতে অস্ত্র রাখতে বিশ্বাস করেন না এবং তিনি যে তরোয়ালগুলি ধরেছিলেন সেগুলিও কেবল ঘর সাজানোর তলোয়ার। বাড়িতে অস্ত্র রাখায় বিশ্বাসী নন সইফ, কারণ বাচ্চাদের হাতে পড়লে বিপদ ঘটতে পারে। তিনি বলেন, ‘পতৌদির চারপাশে বন্দুক আছে। রাজওয়ারা ও রাজস্থানীরা যাদের কাছে বন্দুক আছে তারা আমাকে মেসেজ করে বলছে যে তারা বিশ্বাসই করতে পারছে না যে লোকটা আমাকে ছুরি মেরে ওতো সহজে পালিয়ে গেছে। আমার বাবা তাঁর বিছানার পাশে শটগান নিয়ে ঘুমাতেন। তবে মাঝে মাঝে মনে হয়, বন্দুক থাকলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে’।
তৈমুর ও জেহর প্রতিক্রিয়া
সইফ জানান, 'বাচ্চারা ভালো আছে, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ। জেহ আমাকে একটা প্লাস্টিকের তলোয়ার দিয়ে বলল, 'পরের বার যখন চোর আসবে তখন এটা তোমার বিছানার পাশে রেখে দাও'। তিনি বলেন, 'গীতা আব্বাকে বাঁচিয়েছে এবং আব্বা আমাকে বাঁচিয়েছেন। নিরাপত্তা নিয়ে একটু চিন্তিত তৈমুর। সারা খুব আবেগপ্রবণ ছিলেন এবং ইব্রাহিমও খুব আবেগপ্রবণ ছিল, স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। দুজনেই আমার সাথে অনেক সময় ব্যয় করেছেন। তবে স্পষ্টতই, এটা সবার জন্য কিছুটা ধাক্কা। সইফ আরও বলেন, তাঁর স্ত্রী অভিনেতা কারিনা কাপুর 'খুব শক্ত' কিন্তু 'নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলো নিয়ে বিচলিত বেবো'।
লীলাবতী হাসপাতালে পাঁচ দিন চিকিৎসাধীন সইফের দুটি অস্ত্রোপচার হয়। তার চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসকরা জানান, তার পিঠ থেকে ছুরির একটি টুকরো বের করে মেরুদণ্ডের ফুটো হওয়া অংশ মেরামত করা হয়েছে। ২১ জানুয়ারি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান সইফ। চলতি মাসের শুরুর দিকে নেটফ্লিক্স ইন্ডিয়ার একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে এই প্রথম জনসমক্ষে আসেন তিনি। গলায় ব্যান্ডেজ বাঁধা ও হাতে সইফ তার আগামী ছবি 'জুয়েল থিফ'-এর প্রচার চালান পুরোদমে।