শুধু নেই হ্যাপি এন্ডিং, তবে সলমন খান ও সোমি আলির প্রেম কাহিনি যে কোনও বলিউডের চিত্রনাট্যকে হার মানাবে। নব্বইয়ের দশকে সলমন-সোমির রসালো প্রেম ছিল বি-টাউনের মুখরোচক খবর। তবে এই পাক তরুণীর হৃদয় ভাঙেন সলমন, তারপর বলিউডকেই অলবিদা জানিয়েছিলেন সোমি। নানান সময়ে প্রাক্তন প্রেম নিয়ে মন্তব্য করে থাকেন সোমি, তবে এবার এক্কেবারে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন ‘আও প্যায়ার করে’ নায়িকা।
দীর্ঘ ফিল্মি কেরিয়ারে কম নারীর সঙ্গে নাম জড়ায়নি সল্লু মিঁয়ার। সংগীতা বিজলানি, সোমি আলি,ঐশ্বর্য রাই বচ্চন, ক্যাটরিনা কাইফ থেকে ইউলিয়া ভান্তুর- তালিকাটা বেশ লম্বা। এবার নাম না করে সলমন খানকে সতর্ক করলেন প্রাক্তন প্রেমিকা সোমি, টেনে আনলেন ঐশ্বর্য রাই বচ্চনকেও। বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়ালে একটি পোস্ট লেখেন সোমি, লেখেন- ‘বলিউডের হারভে ওয়েনস্টেইন, তোমার মুখোশ একদিন খুলে যাবে। যে সমস্ত নারীদের সঙ্গে তুমি দুর্ব্যবহার করেছ, তাঁরা একদিন তোমার সমস্ত সত্যি ফাঁস করে দেবে। ঐশ্বর্য রাই বচ্চনের মতো’। এই পোস্টের ইঙ্গিত যে সলমন খানের দিকে তা বুঝতে খুব বেশি অসুবিধা হওয়ার নয়। এমনকী এই পোস্টের সঙ্গে যে ছবি সোমি ব্যবহার করেছেন সেটিও ‘মেয়নে প্যায়ার কিয়া’ ছবি থেকেই নেওয়া সেটাও বুঝে নিতে অসুবিধা হওয়ার নয়। যদিও এই পোস্ট ভাইরাল হতেই সেটি মুছে দেন সোমি।

উল্লেখ্য, হলিউড প্রযোজক হারভে ওয়েনস্টেইনের বিরুদ্ধে মিটু-র অভিযোগ এনেছিলেন চলচ্চিত্র দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত একাধিক মহিলা। পরবর্তীতে তিনি 'থার্ড ডিগ্রী রেপ' এবং 'ফার্স্ট ডিগ্রী ক্রিমিনাল সেক্সুয়াল অ্যাক্ট' এ দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। এবার সেই কুখ্যাত প্রযোজকের সঙ্গেই নাম না করে সলমনের তুলনা টানলেন সোমি।
সোমি নিজে একাধিক সাক্ষাত্কারে জানিয়েছেন, ১৯৯১ সালে ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’ ছবি দেখে সলমনের জন্য পাগল হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এরপর ভারতে ‘পালিয়ে’ এসে তিনি বলিউডে কেরিয়ার শুরু করেন কেবলমাত্র সলমনকে বিয়ে করবার স্বপ্ন নিয়ে। ‘বুলন্দ’ নামের এক ছবিতে সলমনের নায়িকা হওয়ার সুযোগ পান সোমি। শ্যুটিংও শুরু হয়েছিল ছবির, তবে মাঝপথে আটকে যায় সেই প্রোজেক্ট। তবে আটকায় সোমি-সলমনের প্রেম। দীর্ঘ আট বছর চুটিয়ে প্রেম করেন তাঁরা।

জানা যায়, সোমির সঙ্গে সম্পর্কে থাকাকালীনই ঐশ্বর্যর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় সলমনের। এর জেরেই ভাঙে দুজনের সম্পর্ক। ব্রেক-আপ প্রসঙ্গে বছরখানেক আগে জুম চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে সোমি জানিয়েছিলেন, ‘২০ বছর হয়ে গেছে আমাদের সম্পর্ক ভাঙার। ও আমাকে ঠগিয়েছিল এবং আমি সম্পর্ক ভেঙে দিই, এবং মুম্বই ছেড়ে চিরকালের মতো চলে যাই। হিসাবটা খুব পরিষ্কার’।
সাত বছরের ফিল্মি কেরিয়ারে ‘কৃষণ অবতার’, ‘অন্ত’, ‘আও প্যায়ার করে’, ‘আন্দোলন’, ‘তিসরা কৌন’-এর মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন সোমি আলি। ১৯৯৯ সালে সলমনের সঙ্গে প্রেম সম্পর্ক ভাঙার বেশ কয়েক বছর পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান সোমি। সেখানে নতুন করে উচ্চশিক্ষা শুরু করেন। এরপর লেখিকা, সমাজকর্মী হিসাবে নিজের পরিচয় করে তুলেছেন প্রাক্তন অভিনেত্রী।'নো মোর টিয়ারস' নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সোমি। কাজ করেন দক্ষিণ এশিয়ার পিছিয়ে পড়া দেশগুলোতে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে।