করোনারি ইনসাফিসিয়েন্সি-তে ভুগছেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায় আশঙ্কা চিকিৎসকদের। সেই কারণেই বুকে অস্বস্তি দেখা যায় অভিনেত্রীর। এদিন সন্ধ্যা রায়ের হাসপাতালে ভর্তির খবরে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তাঁর হাজরো অনুরাগী। তবে চিন্তার কোনও কারণ নেই, একদম স্থিতিশীল রয়েছেন ৭৯ বছর বয়সী অভিনেত্রী।
দক্ষিণ কলকাতার উডসল্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ। হাসপাতালের তরফ এদিন মেডিক্যাল বুলেটিন প্রকাশ করা হয়। সেখানে জানানো হয়েছে, গত ১৫ই জুন অর্থাৎ শনিবার বুকে অস্বস্তি-সহ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল প্রবীণ অভিনেত্রীকে। বুক ধড়পড় করছিল তাঁর।
ভর্তির পর দ্রুততার সঙ্গে তাঁর ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাফি করা হয়। ২৪ ঘণ্টা তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছ। করা হয়েছে সমস্ত প্রয়োজনীয় রক্ত পরীক্ষাও। সেইসব পরীক্ষার ভিত্তিতেই আপাতত চিকিৎসকদের ধারণা করোনারি ইনসাফিসিয়েন্সিতে ভুগছেন অভিনেত্রী। এর অর্থ হল অভিনেত্রী হৃদযন্ত্রের সমস্যা ধরা পড়েছে তবে সেটির প্রভাব খানিক কম। এই মুহূর্তে কোনওরকম অক্সিজেন সাপোর্টের দরকার পরছে না অভিনেত্রীর। ডাঃ এসবি রায় (ননইনভেনশন্যাল কার্ডিওলজি), ডাঃ সুস্মিতা দেবনাথ (ক্রিটিক্যাল কেয়ার) এবং ডাঃ পিকে মিত্র (ইনভেনশন্যাল কার্ডিওলজি)- তিন সদস্যের চিকিৎসকদের এই টিম তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বে রয়েছেন।
সাদা কালো থেকে রঙিন, বাংলা সিনেমায় দীর্ঘ ২৫ ধরে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন সন্ধ্যা রায়। বছর তিনেক আগে করোনা আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। ওদিকে ২০২২ সালের জুলাই মাসে স্বামী তরুণ মজুমদারকে হারান অভিনেত্রী। দীর্ঘদিন একসঙ্গে না থাকলেও কাগজে কলমে আলাদা হননি তাঁরা। ১৯৬৭ সালে বিখ্যাত পরিচালক তরুণ মজুমদারের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েছিলেন তিনি।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে রুপোলি জগতে পা রাখেন তিনি। তাঁর প্রথম ছবি ‘মামলার ফল' (১৯৫৭)। অসামান্য অভিনয় কৌশলের তিনি অনায়াসে যে কোনও চরিত্র হয়ে উঠতে পারতেন সার্থকভাবে। সন্ধ্যা রায়ের অন্যতম চর্চিত ছবিগুলির মধ্যে রয়েছে সত্যজিত রায়ের ‘অশনি সংকেত’ এবং তরুণ মজুমদারের ‘ঠগিনি’। অন্যদিকে পুরোদস্তুর বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন সন্ধ্যা রায়, যেমন ‘বাবা তারকনাথ’ কিংবা 'দাদার কীর্তি' , 'ছোট বউ'। 'মায়া মৃগয়া', 'কঠিন মায়া', 'বন্ধন', 'পলাতক', 'তিন অধ্যায়', 'আলোর পিপাসা', 'ফুলেশ্বরী', 'সংসার সীমান্তে', 'নিমন্ত্রণ', দীর্ঘ ফিল্মি জীবনে বাঙালিকে অজস্র ছবি উপহার দিয়েছেন সন্ধ্যা রায়।
অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনীতির ময়দানেও সমান সফল তিনি, ২০১৪ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিতে মেদিনীপুর কেন্দ্র থেকে নির্বাচন লড়ে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৯-এর নির্বাচনে বয়সজনিত কারণে নিজেই সরে দাঁড়ান বর্ষীয়ান অভিনেত্রী।