সাধারণত শ্যুটিংয়ের সময় অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অভিনয় নিয়ে কোনও নির্দেশ দেওয়া পছন্দ করেন না সঞ্জয় লীলা বনশালি। তাঁর মতে এতে অভিনেতাদের সৃজনশীলতা ব্যাহত হয়। এই প্রসঙ্গে তাঁর পরিচালিত 'গঙ্গুবাই' ছবির একটি ৩০ সেকেন্ডের সিকোয়েন্সের কথা তুলে ধরলেন পরিচালক। জানালেন সেই দৃশ্যে দেখা যাবে যে ফোনে মায়ের সঙ্গে কথা বলাকালীন ফোন অপারেটর-এর মতো মেজাজ হারিয়ে চিৎকার করে উঠবে আলিয়া। তবে আলিয়া কীভাবে সেই দৃশ্যে পারফর্ম করবে তা সরাসরি নির্দেশ দেওয়ার বদলে কায়দা করে আলিয়া সামনে ওরকম পরিস্থিতি তৈরি করে নিজেই ঠিক সেরকম ব্যবহার করে বসেছিলেন বনশালি!
ফিল্ম কম্প্যানিয়ন-কে দেওয়া সেই দৃশ্যের কথা বলতে গিয়ে বনশালি বলছেন, 'মাত্র ১৬ বছর বয়সী একটি মেয়ে ওরকম পতিতালয়ের দুনিয়ায় ফেঁসে গিয়েও কীভাবে মেজাজে এবং দৃপ্ত ভঙ্গিমায় নিজের অধিকারের কথা ব্যক্ত করছে, সেটাই ছবি ওই দৃশ্যের মূল সুর। তো সেই দৃশ্যের শ্যুটের আগে ঠিক ওরকম আবহাওয়া চাইছিলাম যাতে পারফর্মেন্সের মূল সুরটা ধরতে পারে আলিয়া। তা সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে হঠাৎ লক্ষ্য করলাম আমার টিমের কয়েকজন বেশ জোরে হাসাহাসি করছি। দেখামাত্রই চিৎকার করে উঠেছিলাম। বোঝাতে চাইছিলাম যে আমি মনে করেছি ওঁরা আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করছে আর তা আমি হাতেনাতে ধরে ফেলেছি। ফলে মেজাজ হারিয়ে তাঁদের উপর চিৎকার করছি। এদিকে আমার গলা শুনে ততক্ষণে সবাই চুপ।সামনে বসে থাকা আলিয়াও একেবারে থতমত খেয়ে চুপ করে গিয়েছে। আলিয়ার উদ্দেশে এটাই আমার ইঙ্গিত ছিল যে কীভাবে চুপ করে থাকতে থাকতে হঠাৎ করে তাঁকে রাগে ফেটে পড়ে ধমকে উঠতে হবে।'
বক্তব্য শেষে 'গঙ্গুবাই কাথিয়াওয়াড়ি' পরিচালকের সংযোজন, 'আজ পর্যন্ত আলিয়া আমার এই কীর্তির কথা জানে না। বিন্দুমাত্র তাঁকে বুঝতে দিইনি যে সেই দৃশ্যের আগে ওরকম পরিবেশ তৈরি করার জন্য এই কীর্তি করেছিলাম আমি।কারণ কোনও অভিনেতা-অভিনেত্রীকে অভিনয় নিয়ে সরাসরি নির্দেশ দেওয়াটা আমি পছন্দ করি না। এতে তাঁদের সৃজনশীলতার উপর সীমারেখা টেনে দেওয়া হয় বলে মনে করি।'