অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের অকাল মৃত্যু নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা ইন্ডাস্ট্রিকে। অভিনেতার মৃত্যু শোক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি তাঁর পরিবার। এর মাঝেই অভিষেকের মৃত্যু নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন স্ত্রী সংযুক্তা। গত ২৪শে মার্চ ভোররাতে নিজের বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন ৫৭ বছর বয়সী অভিনেতা। অভিষেকের অসুস্থততা এবং তাঁর মৃত্যু নিয়ে এবার চাঞ্চল্যকর মন্তব্য সংযুক্তা দেবীর। এক বেসরকারি চ্যানেলের নন-ফিকশন শো-এর নির্মাতাদের দিকেও অভিযোগের আঙুলও তুললেন তিনি। জানালেন, অসুস্থতা সত্ত্বেও জোর করে অভিষেক চট্টোপাধ্যায়কে শ্যুটিং ফ্লোরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
শনিবার অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের শেষ ছবি ‘পঞ্চভূজ’-এর ট্রেলার ও গান লঞ্চে হাজির হয়েছিলেন সংযুক্তা চট্টোপাধ্যায়। সেখানেই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল ‘ইসমার্ট জোড়ি’ নিয়ে। স্ত্রীর সঙ্গে জুটি বেঁধেই এই রিয়ালিটি শো-এর মঞ্চে হাজির হয়েছিলেন অভিষেক। তবে একটি মাত্র এপিসোডেই দেখা গিয়েছে তাঁদের। দ্বিতীয় এপিসোডের শ্যুটিং চলাকালানীই মারাত্মক অসুস্থ হন অভিষেক, এবং কয়েকঘন্টার মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন।
‘নীল পোশাকের ওই পারফরম্যান্সটা আমাদের শেষ পারফরম্যান্স নয়। আমাদের যেদিন শ্যুটিংয়ে নিয়ে গিয়েছিল, অভিষেক সেইদিন শ্যুটিং করতে চায়নি, ওকে জোর করে নিয়ে গিয়েছিল। আমি অনুরোধ জানিয়েছিলাম ও পারবে না। ওর খুব কষ্ট হচ্ছিল, ও পারেনি শ্যুটিংটা করতে এতটাই অসুস্থ ছিল। শেষদিন আমি কনের সাজে ছিলাম, ও বরের সাজে ছিল… শ্যুটিংয়ে আসা উচিত হয়নি, আমি বারণ করেছিলাম। ওকে পুরোপুরিভাবে জোর করে আনা হয়েছিল, এটা আমার সত্যিকারের আফসোস। আমি কেন আরও শক্তভাবে রুখে দাঁড়ায়নি? আমি কেন বলিনি- ও আজকে যাবে না আজ. শ্যুটিং করবে না', আক্ষেপ ঝরে পড়ে সংযুক্তার গলায়।
কান্না চেপে সংযুক্তা যোগ করেন, ‘আমি ওকে এর মাঝেই একটা সময় ফোন করে ওকে বলেছিলাম আমি আজ ওদের বলেছি শ্যুটিং হবে না। অভিষেক আমাকে বলল একটু আমার করতে চাই গো, আজ শ্যুটিংটা যেন না হয়। তারপর কী যে হল… ওরা গাড়ি পাঠালো। ব্যাপারটা আমি কিছু বুঝে উঠতে পারলাম না’।
আগে থেকে শরীর খারাপ ছিল তাও জোর করে শ্যুটিংয়ে নিয়ে যাওয়া হয়? সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সংযুক্তা বলেন- ‘একদম। আসলে তার আগেরদিন খড়কুটোর শ্যুটিং করতে গিয়ে ওর শরীরটা খারাপ হয়। আমাকে সেট থেকে ফোন করে বলে দিদি তুমি দাদার ওনাকে নিয়ে যাও। এরপর ডাক্তার দেখাই, ডাক্তার ফুড পয়জিনিং-এর ওষুধ দেয়। আর বাকি সব নর্ম্যাল ছিল। তার পরের দিন কী হয় ও কিছুতেই ওঠে দাঁড়াতে পারছিল না। তাই আমি ইস্মার্ট জোড়ির ওখানে গিয়ে বলেছিলাম ও আজ শ্যুটিং করতে পারবে না। তারপরেও ওকে জোর করে আনা হয়েছিল, যেটা একদম ঠিক হয়নি’।
এদিন সরাসরি ইস্মার্ট জোড়ি-র নির্মাতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুললেন সংযুক্তা। সংযুক্তার এই অভিযোগের ভিত্তিতে হিন্দুস্তান টাইমসের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল চ্যানেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে, এই ব্যাপারে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। অভিষেকের মৃত্যু নিয়ে সংযুক্তার এই অভিযোগে রীতিমতো তোলপাড় টেলিপাড়া। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে কি আরেকটু সচেতন হওয়া উচিত নয় প্রযোজনা সংস্থাগুলির? উঠছে প্রশ্ন।