বলিউডের অতি পরিচিত মুখ সারা আলি খান। বাবা-মা'র পদচিহ্ন অনুসরণ করেই ২০১৮ সালে বলিউডে পা রেখেছিলেন পতৌদির শেহজাদি। সইফ কন্যার রূপে মোহিত সব্বাই। কিন্তু নায়িকার হওয়ার জার্নিটা মোটেই সহজ ছিল না সারার কাছে।
সুন্দর ছিপছিপে শরীর দোলা লাগায় পুরুষ হৃদয়ে। কিন্তু কেরিয়ার শুরুর মাস কয়েক আগেও গোলুমোলু সারার ওজন ছিল ৯৬ কেজি! হ্যাঁ, খাওয়াদাওয়ায় চরম অনিয়ম, তার উপর পলিসিস্টিক ওভারির সমস্যা—সব মিলিয়ে সারা আলি খান অবিশ্বাস্যরকম মুটিয়ে গিয়েছিলেন। ছোট থেকেই অবশ্য গোলগালই ছিলেন তিনি। মোটা, মুটকি, হাতি—নানান কটাক্ষ একটা সময় শুনেছেন, কোন জাদুমন্ত্রে ৪৫ কেজি ওজন ঝরান সইফ-অমৃতা তনয়া?
দৃঢ় সংকল্প, সঠিক ডায়েট এবং কার্ডিও এবং ওয়েট ট্রেনিং— অনুশীলন, সংযম নিয়মানুবর্তিতা মেনেই ৪৫ কেজি ওজন হ্রাস করতে সক্ষম হন অভিনেত্রী। রণবীর এলাহাবাদিয়া (ওরফে বিয়ারবিসেপস) এর সাথে একটি পুরানো সাক্ষাত্কারে, সারা তার ওজন হ্রাসের যাত্রা, কেন ওজন ঝরাতে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন তিনি, তাঁর লড়াই এবং কীভাবে তিনি সেই চ্যালেঞ্জগুলি কাটিয়ে উঠেছিলেন সে সম্পর্কে কথা বলেছেন।
‘ওজন মাপার স্কেলটি ভেঙেছি ’
ওজন ঝরানোর কথা স্মরণ করতে গিয়ে সারা বলেছিলেন, ‘আমার ওজন শুধু বেশি ছিল বললে ভুল হবে; আমি ওজন মাপার স্কেলটাই ভেঙেছি... অনেক সময় আপনার জীবন নিম্নমুখী হয়ে যায়। সুতরাং, যখন আপনি সকালে ঘুম থেকে ওঠেন এবং দেখেন আপনার ওজন ৮৫ কেজি এবং কোনও জামাই আপনার শরীরে ফিট করে না, আপনার মনে হয় ৮৫ আর ৯৬-এর মধ্যে বিশেষ ফারাক নেই - এটাই আমার সাথে ঘটতে শুরু করেছিল। আমি কলেজে ছিলাম, এবং আমি মোটা ছিলাম, মোটা মানে কি - মেদে ভরপুর মোটা, প্রচুর ব্রাউনি খেতে কুণ্ঠাবোধ করতাম না এই ভেবে, যে আর কত মোটা হব’।
রণবীর স্বীকার করেছেন যে তিনিও ছোটবেলায় মোটা ছিলেন এবং তাঁর ভিতরে থাকা 'মোটা বাচ্চাটি' এখনও রয়েছে, সারা সম্মতি জানিয়ে বলেছিলেন, ‘এটি কখনই চলে যায় না। সেই ফ্যাট কমপ্লেক্স চিরকাল মস্তিষ্কে থাকে।’
'আমি কী খাচ্ছি সে সম্পর্কে আমাকে সচেতন হতে হবে'
সারা প্রকাশ করেন এখন প্রচুর ওজন কমালেও ওজন নিয়ে সমস্যা রয়েছে তাঁর। তিনি আরও যোগ করেছেন ‘আমি কী খাচ্ছি সে সম্পর্কে আমাকে খুব সচেতন হতে হবে। ওজন নিয়ে ট্র্যাকে থাকাটা আমার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।’ খাওয়ার স্বল্প অনিময় হলেই সারার ওজন বেড়ে যায়।
কে সারাকে ওজন কমাতে অনুপ্রাণিত করেছিল?
৪৫ কেজির বেশি ওজন কমানোর কারণ জানতে চাইলে সারার একটাই উত্তর ছিল- করণ জোহর। পরিচালক তাকে একটি চলচ্চিত্রের প্রস্তাব দিতে চেয়েছিলেন এবং তাঁকে অর্ধেক ওজন কমাতে বলেছিলেন।
অনুপ্রেরণা সম্পর্কে সারা বলেছিলেন, ‘আমি বিশাল মোটা ছিলাম। এটা কোনও পর্যায়েই স্বাস্থ্যকর ছিল না। এটা আমাকে হরমোনগতভাবে প্রভাবিত করছিল, যা এখনও ঘটে। যখনই আমি অতিরিক্ত খেয়ে ফেলি বা ৬০ কেজির চিহ্ন স্পর্শ করি, আমি আর স্বাস্থ্যকর থাকি না। আপনি কী খাচ্ছেন তার উপর আপনার অবশ্যই নজর রাখা উচিত কারণ এটি আপনার শরীরিক গঠনের পাশাপাশি আপনার হরমোনের ভারসাম্যকেও প্রভাবিত করে এবং এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ'। অবিসিটি বা স্থূলতা আপনার মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে বলে জানান সারা।