শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর সুযোগ্য কন্যা তিনি। ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের জগতে তাঁর নিজস্ব পরিচিতও রয়েছে। বাবার পথে হেঁটে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন কৌশিকি চক্রবর্তী। দেশে-বিদেশে অসংখ্য শ্রোতা-দর্শক মুগ্ধ তাঁর গায়েকিতে। নতুন প্রজন্মের শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পীদের তালিকায় একদম উপরের দিকে আসে তাঁর নাম।
এই মুহূর্তে তাঁকে দর্শক দেখছেন ‘সারেগামাপা’-এর মঞ্চে বিচারকের আসনে। সদ্য সমাপ্ত সপ্তাহে সারেগামাপা-র মঞ্চে কৌশিকিতে মুগ্ধ সক্কলে! তাঁর কণ্ঠে রাগাশ্রয়ী গান ‘ভোর ভই তোরি বাট তকত পিয়া’ শুনে ধন্য ধন্য করলেন জাভেদ আলি-ইমন-শান্তনু মিত্ররা।
এই সপ্তাহে মুখোমুখি চ্যালেঞ্জ রাউন্ডে বনগাঁর মেয়ে সৃজিতার টক্কর ছিল জোজো-জাভেদের টিমের ‘ওয়ান্ডার বয়’ অনীকের সঙ্গে। দুজনকেই তিন তাল-এর উপর আশ্রিত গান গাওয়ার চ্যালেঞ্জ ছু়ড়ে দেন বিচারক অন্তরা। শুরুতেই দিল্লি ৬ ছবির ‘ভোর ভই তোরি বাট তকত পিয়া’ গেয়ে মন জিতে নেন কৌশিকি-ইন্দ্রদীপের টিমের মেয়ে সৃজিতা। এরপর ‘অভিমানে চলে যেও না’ গেয়ে গোল্ডেন বাজ়ার পায় অনীক। তাঁর পারফরম্যান্স শেষে সৃজিতার প্রশংসা করে তাঁকেও গোল্ডেন গিটার দেন বিচারকরা।
‘ভীষণ ভালো’ গেয়ে সকলের প্রশংসা কুড়ালেও সৃজিতার ছোট্ট ভুল শুধরে দিলেন কৌশিকি। তিনি জানান, ‘ভোর ভই তোরি বা… বলে ছাড়বি না মুখরাটা, কারণ কথাটার মানে কী? ভোর ভই তোরি বাট তকত পিয়া’ কথাটার মানে কী? ভোর ভই মানে ভোর হয়েছে, তোরি বাট মানে তোমার রাস্তা, তকত মানে রাস্তা আর পিয়া মানে সবাই জানে (হাসি)। তার মানে ভোর হয়েছে আমি তোমার রাস্তা দেখছি মানে তোমার অপেক্ষা করছি….. রাস্তাটা পুরোটা বলতে হবে। এটা বলে তারপর ছাড়বি, আর ভোর ভই তোরি বাট তকত বলে ছাড়লে আরও ভালো, তাহলে লিরিকালি ফেজটা কম্প্লিট হয়'।
এরপরই অনুরোধ উড়ে আসে ইমনের তরফে। তিনি এই গানটা কৌশিকি গেয়ে শোনানোর অনুরোধ করেন। হাসিমুখে কৌশিক বলেন, ‘সৃজিতা গাক, আমি ওর সঙ্গে গাইছি…’। গাইবার সময়ও খুদেকে ‘বাট’ শব্দটি মুখরায় পুরোটা উচ্চারণ না করার জন্য থামিয়ে ফের শেখান কৌশিকি। এরপর শুরু হয় তান-এর যুগলবন্দি। কৌশিকির সরগম শুনে ততক্ষণে মাথায় হাত আরাত্রিকা-সহ বাকি প্রতিযোগিদের। মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনছেন বাকি বিচারকরা। যেন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ক্লাস চলছে, সকলকে শিখিয়ে দিচ্ছেন কৌশিকি। উঠে দাঁড়িয়ে সকলে করতালিতে ভরিয়ে দেন কৌশিকিকে।
এর আগে প্রতিযোগিদের ভুল ধরিয়ে সারেগামাপা-র মঞ্চে ট্রোলের শিকার হয়েছেন অন্তরা মিত্র, ইমন চক্রবর্তীর মতো বিচারকরা। কিন্তু কৌশিকি যেভাবে নিজের টিমেরই সৃজিতার ছোট্ট ভুল শুধরে তাঁকে হাতে ধরে শেখালেন, তা দেখে মুগ্ধ সব্বাই।