জীবনের রঙ্গমঞ্চ থেকে আচমকাই বিদায় নিলেন সতীশ কৌশিক। কখনও ‘ক্যালেন্ডার’ আবার কখনও ‘পাপ্পু পেজার’-- একের পর এক আইকনিক চরিত্রে দর্শকদের মনোরঞ্জন করেছেন সতীশ কৌশিক। মাত্র ৬৬ বছর বয়সেই না-ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন এই অভিনেতা তথা পরিচালক। এই তো মঙ্গলবার দিনই জাভেদ আখতার ও শাবানা আজমির হোলি পার্টিতে শামিল হয়েছিলেন তিনি। কয়েকঘন্টার মধ্যেই সব শেষ!
বৃহস্পতিবার সকালে সতীশ কৌশিকের মৃত্যু সংবাদ দেন অনুপম খের, যা নাড়িয়ে দেয় গোটা দেশকে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছিল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। যদিও মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে ময়নাতদন্ত করা হয়।
সতীশ কৌশিকের মৃত্যুতে রহস্যজনক কিছুই মেলেনি। পুলিশ সূত্রে খবর, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। শরীরে আঘাতের কোনওরকম চিহ্ন নয়। বুধবার দিল্লিতে পৌঁছেছিলেন সতীশ কৌশিক, বন্ধুদের সঙ্গে হোলির উৎসব পালনেই সেখানে হাজির হন তিনি। বিজবাসনের ফার্ম হাউজে ছিলেন সতীশ, সেখানেই অসুস্থবোধ করেন তিনি। এরপর গুরুগ্রামের ফর্টিস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তাঁর।
সংবাদমাধ্যমকে সতীশের ম্য়ানেজার জানান, ‘উনি রাত ১০.৩০ টার সময় ঘুমোতে গিয়েছিলেন। মধ্যরাতে, ১২.১০ নাগাদ আমাকে ফোন করেন বলেন শ্বাসকষ্ট হচ্ছে’। হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই সতীশের মৃত্যু হওয়ায় পুলিশ ফোন যায় হাসপাতালের তরফে। এরপর নিয়ম মেনে দীন দয়াল উপাধ্যায় হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হয় বৃহস্পতিবার সকালে। বুধবার দিল্লিতে কাদের সঙ্গে দেখা করেন সতীশ, এবং তিনি কী কী করেছেন-- সব তথ্য খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এদিন সতীশের মৃত্য়ু সংবাদ জানিয়ে অনুপম খের লেখেন-- 'আমি জানি মৃত্যুই জীবনের এক এবং অদ্বিতীয় সত্য। কিন্তু আমি কখনও ভাবিনি আমি আমার প্রিয় বন্ধুকে নিয়ে কখনও এমন কিছু লিখব। আমি বেঁচে থাকতে সতীশ কৌশিককে নিয়ে এমন কিছু লিখব ভাবিনি। ৪৫ বছরের বন্ধুত্ব হঠাৎই থেকে গেল। তোমায় ছাড়া জীবন আর আগের মতো থাকবে না সতীশ। ওম শান্তি।'
‘মিস্টার ইন্ডিয়া’ ছবিতে ক্যালেন্ডারের চরিত্রে সতীশের অভিনয় আজও ভুলতে পারেনি দর্শক। তাঁর কমিক টাইমিং বরাবর প্রশংসিত। হালফিলেও ‘বাগি ৩’, ‘ছত্রিওয়ালি’র মতো ছবিতেও নজর কেড়েছেন সতীশ কৌশিক। ‘রূপ কি রানি চোরোঁ কা রাজা’ ,‘হম আপকে দিল মে রেহতে হ্যায়’, ‘তেরে নাম’-এর মতো জনপ্রিয় ছবি পরিচালনাও করেছেন তিনি। তাঁর এই আচমকা প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বলিউড।