দুর্গাপুজো আর পাঁচজন গায়কের মতোই শানের কাছেও স্পেশাল। দুর্গোৎসবকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রতি বছরই একটি করে গান নিয়ে হাজির হন তিনি। তবে এই বছরটা একটু অন্যরকম।
আরজি কর আবহে মন ভালো নেই গোটা বাংলার। আরব সাগর পারে বসেও সেই যন্ত্রণা অনুভব করতে পারছেন শান। তাই এই বছর দুর্গো পুজো উপলক্ষ্যে শানের নিবেদন দুর্গতিনাশিনী, যা কলকাতার আর জি করের নির্যাতিতা তরুণীকে উৎসর্গ করেছেন গায়ক। এই গানটি গাওয়ার পাশাপাশি সুরও করেছেন শান। গানের হুক লাইনই শিহরণ জাগাবে। শান বলছেন- ‘ঘরে ঘরে দুর্গা আসুক, দুর্গতিনাশিনী’>
গত ৯ই অগস্ট কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ৩১ বছর বয়সী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল। তারপর থেকে গর্জে উঠেছে গোটা রাজ্য। আরজি কর নিয়ে আগেই প্রতিবাদের গান বেঁধেছেন অরিজিৎ সিং। সেই গানের প্রতি নিজের সমর্থন জাহির করেছিলেন শান, এবার নিজেই দুর্গাতিনাশিনী নিয়ে হাজির হয়েছেন তিনি। তিন দিন আগেই শানের ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তি পেয়েছে প্রতিবাদের এই গান।
শান বলেন, 'জঘন্য ঘটনা, সাধারণ মানুষের ক্ষোভ এবং এত চিকিৎসক ও শিক্ষার্থী, বিশেষ করে নারীরা আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, যা আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। আমিও তাদের মতোই হতাশা অনুভব করছি, এর সাথে সাথে আমি সেই সমস্ত লোকদের সাধুবাদ জানাই যারা ন্যায়বিচারের জন্য নিরলসভাবে এই আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন। এই গানটি আমার কাছে একটা আশা এবং আশ্বাস দেওয়ার পন্থা, যে কেবল মা দুর্গার উত্থান দুষ্টের দমনের জন্য এবং প্রতিটা মেয়ে, প্রতিটা নারী একজন দুর্গতিনাশিনী সাহসের দিক থেকে, ন্যায়পরায়ণতা দিক থেকে।
এই গানটি কীভাবে কাজ করেছে তা ভাগ করে নিয়ে গায়ক বলেছেন যে তিনি সাধারণত আনন্দ উদযাপনের নিয়ে গান বাঁধলেও এবার অন্যভাবে ভেবেছেন। শান বলেন, ‘আনন্দ পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান অনুভূতি নয়’। তিনি আরও বলেন, ‘আমি আমার বন্ধু কিংবদন্তি কবি-গীতিকার রাজীব চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং আমার মনের কথা তাকে জানাই। তিন ঘণ্টার মধ্যে গানটি লিখে ফেলেন তিনি। কবিতাটির একটি অসম মিটার ছিল, তাই গানটি কম্পোজ করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। কিন্তু আমি যখন কোনও কাঠামো পরিকল্পনা না করে লাইনগুলি গুনগুন করতে থাকলাম, তখন সবকিছু ঠিক হয়ে গেল। আমি সঙ্গে সঙ্গে গানটি রচনা ও গেয়েছি এবং তিন দিনের মধ্যে গানটি প্রস্তুত হয়ে গেছে’।
শান আরও জানান যে তিনি এই বছর ‘দুর্গাপূজার জন্য কোনও বাণিজ্যিক স্টেজ শো করবেন না’ এবং পরিবারের সাথে সময় কাটাবেন। তিনি চেয়েছিলেন যে তাঁর সংগীত মানুষ, বিশেষত মহিলাদের প্রভাবিত করুক, তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘সংগীতশিল্পী হিসাবে, আমাদের সংগীতের মাধ্যমে একটি ইতিবাচক বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। দুর্গা মা আমাকে এই কাজ করতে অনুপ্রাণিত করেছেন।’