একদিকে যখন ‘পাঠান’ বিতর্কে সরগরম দেশ, তখনই শাহরুখের মানবিক রূপ ফের প্রকাশ্যে। দিল্লির নৃশংস গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারারো তরুণী অঞ্জলির দুঃস্থ পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন শাহরুখ খান, এইজন্যই তো বলা হয় ‘সোনায় মোড়া হৃদয় কিং খান'-এর। দিল্লির সুলতানপুরী দুর্ঘটনা কাণ্ডে রীতিমতো স্তম্ভিত গোটা দেশ। কঠিন সময়ে প্রয়াত তরুণী অঞ্জলির পরিবারকে অর্থ সাহায্য করলেন শাহরুখ খান।
বর্ষবরণের রাতে দিল্লির সুলতানপুরীতে একটি স্কুটারকে ধাক্কা মেরেছিল একটি গাড়ি। এরপর স্কুটার আরোহী তরুণীর পা আটকে গিয়েছিল গাড়ির নীচে। সেই অবস্থাতেই তরুণীকে কয়েক কিলোমিটার রাস্তা হিঁচড়ে নিয়ে যায় গাড়িটি। পরিবারের দায়িত্ব ছিল অঞ্জলির কাঁধে, পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্যের মৃত্যুতে অত্যন্ত অসহায় হয়ে পড়েছে মৃতার পরিবার। সংবাদমাধ্যম মারফত এই খবর কানে পৌঁছনো মাত্র অঞ্জলির পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন এসআরকে। জানা গিয়েছে, শাহরুখের এনজিও মীর ফাউন্ডেশনের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই টাকা দেওয়া হয়েছে মৃতার পরিবারকে। তবে ঠিক কত টাকা আর্থিক সাহায্য দিয়েছেন বাদশা, তা স্পষ্ট নয়। সেই তথ্য গোপন রাখা হয়েছে। অর্থ সাহায্যের পাশাপাশি অঞ্জলির মায়ের চিকিৎসার ব্যায়ভারও বহনের আশ্বাস দিয়েছে শাহরুখের সংস্থা।
২০১৩ সালে বাবা মীর তাজ মহম্মদ খানের স্মৃতিতে এই ফাউন্ডেশনটি গড়েছিলেন শাহরুখ। মূলত অ্যাসিড আক্রান্ত তরুণীদের সমাজের মূলস্রোতে ফেরানোর কাজ করে এই সংগঠন। নারীর ক্ষমতায়ণ নিয়ে কাজ করাই লক্ষ্য এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার। এবার তার ব্যতিক্রম হল না। এই সংস্থার ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি ই-টাইমসে জানিয়েছেন, ‘শাহরুখ খানের মীর ফাউন্ডেশনের তরফ থেকে অঞ্জলি সিংয়ের পরিবারের বড় অঙ্কের অনুদান দেওয়া হয়েছে। কারণ, অঞ্জলি পরিবারের একমাত্র চাকুরীজীবী সদস্য ছিলেন। একা হাতে নিজের মা-ভাইবোনের দেখভাল করা ওই তরুণীর পাশে দাঁড়িয়েছেন শাহরুখ’।
মহিলারা নিজের শর্তে যাতে বাঁচতে পারে সেইজন্যই বাবার নামাঙ্কিত এই সংস্থা শুরু করেছিলেন শাহরুখ। একটু একটু করে নিজের লক্ষ্যের দিকে পৌঁছাচ্ছে ‘মীর ফাউন্ডেশন’।
৩১শে ডিসেম্বরের রাতে অঞ্জলির স্কুটিকে ধাক্কা মারে মারুতি সুজুকি বলেনো। ওই গাড়িতে ছিল পাঁচজন। গাড়ির চাকায় পা আটকে যাওয়া অঞ্জলিকে ১২ কিমি রাস্তা হেঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযুক্ত পাঁচজনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মৃত অঞ্জলির ময়নাদন্তের রিপোর্ট সামনে এসেছে। সেই রিপোর্ট দেখলে শিউরে উঠতে হয়। এই নৃশংস দুর্ঘটনার জেরে মাথা ফেটে চৌচির হয়ে গিয়েছিল অঞ্জলির। তাঁর মাথা ঘিলু মেলেনি। থেঁথলে গিয়েছিল খুলি। ভেঙে গিয়েছিল তাঁর শিরদাঁড়া। অঞ্জলির শরীরের ৪০টি স্থানে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। বেশ কিছু অংশ ঘষা লেগে, পুড়ে কালো হয়ে গিয়েছিল। অঞ্জলির পিঠের দিক থেকে বেরিয়ে এসেছিল ফুসফুসও বেরিয়ে এসে দেহের বাইরে ঝুলছিল। পিঠের চামড়া উঠে যায়। এর আগে তরুণীর মায়ের অভিযোগ ছিল, মেয়েকে যৌন হেনস্থা করা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এর কোনও উল্লেখ নেই। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মৃতার যৌনাঙ্গে কোনও ধরনের আঘাতের চিহ্ন মেলেনি।