বলিউড ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সফল অভিনেতা শাহরুখ খান। কিন্তু ছেলের সফলতা দেখার অনেক আগেই মারা গিয়েছে তাঁর মা-বাবা। খুব অল্প বয়সে বাবা-মা মীর তাজ মহম্মদ খান এবং লতিফ ফাতিমা উভয়কেই হারিয়েছিলেন তিনি। অভিনেতা অনুপম খেরের সঙ্গে এক কথোপকথনে শাহরুখ ফাঁস করেছিলেন, মাকে মৃত্যুশয্যায় থাকাকালীন মানসিক ভাবে আঘাত দিয়েছিলেন অভিনেতা।
২০১৪ সালে অনুপম খের-এর শো ‘কুছ ভি হো সাকতা হ্যায়’-তে উপস্থিত হয়ে শাহরুখ তাঁর বাবা-মায়ের মৃত্যু নিয়ে আক্ষেপ করেছিলেন। অভিনেতা জানিয়েছিলেন, ১৯৮১ সালে মৃত্যু হয় তাঁর বাবার। গলার ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি। হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে আসার কয়েক ঘণ্টা পরই মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। অভিনেতা স্মরণ করেছিলেন যে তার বাবা শেষবার তাঁকে ভ্যানিলা আইসক্রিম খেতে দেখেছিলেন, কারণ তিনি বাবার মুখের দিকে তাকানো সহ্য করতে পারতেন না। পরের দিন ভোরে বাবা মারা যাওয়ার পর, বাবার ঠান্ডা পা শুধুমাত্র স্পর্শ করেছিলেন তিনি। আরও পড়ুন: সরু সরু খালে গিয়ে মাছ ধরা, কাঁকড়া তোলেন ঝড়খালির গীতা! দিদিকে শোনালের সেই গল্পই
শাহরুখ অনুপম খেরকে বলেছিলেন, বাবার মৃত্যুর পর ১৯৯১ সালে মারা যান তাঁর মা। অভিনেতা বলেন, পরিবারের সকলের তাঁর মাকে পুরোপুরি সুস্থ দেখতে লাগলেও, এক রাতে তাঁর পায়ে হঠাৎ ব্যথা শুরু হয় এবং ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। হাসপাতালে থাকাকালীন, শাহরুখ তার মাকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন, এমনকি দিল্লির বাত্রা হাসপাতালের পার্কিং লটে বসে নামাজ পড়েছিলেন। আরও পড়ুন: ‘ভয়ে মরে যাওয়ার মতো অবস্থা’, নকল ভেবে আসল সাপের সঙ্গে শ্যুটিং করেছিলেন অমিতাভ
শাহরুখ বলেন, 'তিনি আইসিইউতে ছিলেন। সেই সময়ে আমার আইসিইউতে যাওয়ার অনুমতি ছিল না। কেউ একজন আমাকে বলেছিল, আপনি প্রার্থনা করতে থাকুন কারণ আল্লাহ মিয়া আপনার কথা শুনতে ব্যস্ত থাকবেন এবং কোন পদক্ষেপ নেওয়ার সময় পারবেন না। আমার 'দুয়া' ১০০ বার বলার কথা ছিল, কিন্তু আমি ওভারঅ্যাক্ট করেছি, ভাবলাম আমার অতিরিক্ত করা উচিত। আমি প্রার্থনা করতে থাকলাম। চিকিৎসক আমাকে বললেন, 'আপনাকে আইসিইউ-তে অনুমতি দেওয়া হয়েছে', যার অর্থ ছিল শেষ মুহূর্ত।' আরও পড়ুন: অভিনয়ের পর নতুন পদক্ষেপ অপু বিশ্বাসের, এবার নায়িকাকে দেখা যাবে অন্য ভূমিকায়
শাহরুখ আরও বলেন, ‘আমার এই তত্ত্বে বিশ্বাসী, একজন ব্যক্তি তখনই পৃথিবী ছেড়ে চলে যায়, যখন সে সন্তুষ্ট হয়। কারণ কেউ যদি আমাকে এখন আমার সন্তানদের ছেড়ে যেতে বলে আমি বলব যে এটা অসম্ভব, যদি না আমি তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট হই।’
আরও বলেন, 'যখন আমার মা আইসিইউতে ছিলেন, আমি তার পাশে বসেছিলাম এবং একটি খুব ভুল কাজ করেছি। আমি ওঁনাকে খুব দুঃখ দিয়েছি। আমি ভেবেছিলাম তাঁকে অসন্তুষ্ট করলে, সে যাবে না। আমি তাকে বললাম, 'তুমি চলে গেলে আমি আমার বোনের যত্ন নেব না। আমি পড়াশুনা করব না, আমি কাজ করব না' এবং এই জাতীয় অন্যান্য বোকা জিনিসগুলি... কিন্তু আমি মনে করি এগুলি কেবল শিশুসুলভ বিশ্বাস, তাঁর যাওয়ার সময় হয়েছিল। সম্ভবত তিনি জানতেন আমি আমার বোনের যত্ন নেব এবং জীবনে ভালো করবো। আল্লাহই ভালো জানেন, মা সেরাটা জানেন।'