বেঁচে থাকলে ২১ অক্টোবর ৯১ তে পা রাখতেন শাম্মি কাপুর। পাঁচ ও ছয়ের দশকে বলিউডের বিরাট সুপারস্টার হওয়ার পাশাপাশি বহু অষ্টাদশীর হার্টথ্রবও ছিলেন 'জংলি' ছবির নায়ক। আসমুদ্রহিমাচল ভারতজুড়ে তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল অবাক করার মতোই। ১৯৫৩ সালে 'জীবন জ্যোতি' ছবির মাধ্যমে বলিপাড়ায় পা রাখেন শাম্মি। ১৯৭০ এর প্রথম দিক পর্যন্ত চুটিয়ে অভিনয় করে যাওয়ার পাশাপাশি খ্যাতির মধ্যগগনে উজ্জ্বল ছিলেন এই কিংবদন্তি বলি- অভিনেতা।
পর্দার বাইরে বাস্তব জীবনেও শাম্মির কান্ডকারখানা ছিল একটু 'হটকে'। রিলের এই রোম্যান্টিক নায়কের রিয়েল লাইফের ভালোবাসার গল্পও ছিল যাকে বলে পুরোপুরি 'ফিল্মি'। তাঁর প্রথমা স্ত্রী গীতা বালির সঙ্গে শাম্মির প্রণয় ও বিয়ের গল্প এককথায় ছিল অবাক করে দেওয়ার মতোই। 'মিস কোকা কোলা' ছবিতে কাজ করার সুবাদে গীতার সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয়েছিল শাম্মির। আলাপ গড়াল বন্ধুত্বে। ধীরে ধীরে শাম্মি টের পেলেন যে তিনি গীতার প্রেমে পড়েছেন। এরপর আর বেশি দেরি না করে বলি-অভিনেত্রীকে প্রেমের প্রস্তাবও দিয়ে দেন তিনি। তবে শাম্মিকে অবাক করে তাঁর সেই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছিলেন গীতা। পরপর বেশ কয়েকবার এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। যতবারই গীতাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন ততবারই খালি হাতে ফিরে এসেছিলেন 'কাশ্মীর কি কলি'-র নায়ক।
তবে ১৯৫৫ সালের জুনের ২৩ তারিখ সেরকম দিন ছিল না। সেদিন বম্বে জুহু হোটেলে মরিয়া হয়ে ফের একবার গীতাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে ফেলেছিলেন শাম্মি। অভিনেতাকে অবাক করে 'হ্যাঁ' বলে দিয়েছিলেন তাঁর ভালোবাসা। তবে একইসঙ্গে রেখেছিলেন একটি শর্ত।
'কুইন্ট'-কে দেওয়া এক বহু পুরোনো সাক্ষাৎকারে এই প্রসঙ্গে কথা উঠলে শাম্মি জানিয়েছিলেন তিনি নিজেও যারপরনাই অবাক হয়ে গেছিলেন তাঁর প্রস্তাবে গীতার সম্মতি পাওয়ায়। তবে গীতার শর্ত ছিল তাঁদের বিয়ে হতে হবে তক্ষুণি। দেরি না করে পরদিন কাকভোরে অর্থাৎ ২৪শে জুন কাকভোরে গীতার সঙ্গে ছাদনাতলায় গিয়ে বসে পড়েছিলেন বলি-নায়ক। লেখাই বাহুল্য মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে অসম্ভব তাড়াহুড়োয় সবকিছু ব্যবস্থা সেরেছিলেন শাম্মি। সিঁদুর দানের সময় নিজের ব্যাগ থেকে লিপস্টিক বের করে শাম্মির হাতে তুলে দিয়ে নববধূ বলেছিলেন, 'আপাতত এই লিপস্টিক দিয়েই আমার সিঁথি রাঙিয়ে দিন'। শুনে চমকে গেলেও অন্য উপায় না থাকায় তাই করেছিলেন বলি-নায়ক। সেইমুহূর্তে সিঁদুরের কাজ লিপস্টিকের মাধ্যমেই সেরেছিলেন তিনি!