ভিন ধর্মে বিয়ে করে তোপের মুখে পড়েছিলেন করিনা। ২০১২ সালে ঘরোয়া আয়োজনে সইফকে বিয়ে করেন তিনি। সেই সময় লাভ-জেহাদ বিতর্ক ঘিরে ধরেছিল সইফিনাকে। চার বছর পর, বড় ছেলের জন্মের সময়ও তুমুল সমালোচনার শিকার হতে হয়েছিল পতৌদির নবাব ও তাঁর পরিবারকে। ছেলের নাম তৈমুর রাখায় সোশ্যাল মিডিয়ার একটা বড় অংশের প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন তারকা দম্পতি।
ভারতের ইতিহাসে অত্যাচারী লুটেরা হিসাবেই পরিচিত মোঙ্গল সেনাধ্যক্ষ তৈমুর লং। তাঁর নামের সঙ্গে তৈমুরের নামের মিল থাকার জেরেই কট্টরপন্থীদের রোষের মুখে পড়েন করিনা ও সইফ। সেই বিতর্ক নিয়ে সম্প্রতি মুখ খুলেছেন করিনার শাশুড়ি মা শর্মিলা ঠাকুর। পুরোনো স্মৃতি মনে পড়লে আজও আঁতকে ওঠেন তিনি। বউমা আর সদ্যোজাত নাতিকে শাপশাপান্ত করা নিয়ে মুখ খুললেন শর্মিলা।
মোজো স্টোরিকে শর্মিলা জানান, ‘রাগটা আমার মনে হয় সঠিক ইমোশন নয় এক্ষেত্রে। আপনি সেই জিনসটা পর্যবেক্ষণ করেন, আর মনে রাখেন। আসলে আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় নেই, আমি এগুলো পড়ি না। তবে আমি একটা পোস্ট দেখেছিলাম, সেখানে লেখা ছিল করিার জিকা হলে ভালো হত, তৈমুর না জন্মালে ভালো হত। আমি তো ভেবেই পাই না এই ধরণের ভাবনা মানুষের মনে আসে কোথা থেকে? একটা একদিনের বাচ্চাকে এইধরণের অভিশাপ দিতে মানুষের বুক কাঁপে না? এটা কোন মানসিকতা থেকে আসরে? আমি ভয় পাই না, তবে আশ্চর্য হয়ে যাই, এরা কোন দুনিয়ার মানুষ? নাকি তাঁদের মাথায় এগুলো ঢোকানো হচ্ছে আর তারা আওড়ে যাচ্ছে’।
তৈমুরের নাম নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়েই ছেলের নাম পালটে ফেলবার কথাও ভেবেছিলেন সইফ। করিনার জোরাজুরিতেই মূলত পিছিয়ে আসেন অভিনেতা। মুম্বই মিররকে দেওয়া এক পুরনো সাক্ষাৎকারে সইফ জানিয়েছিলেন , ‘তৈমুরের নাম ঘোষণার সময় একটি সাফাই বিবৃতি জুড়ে দেওয়া উচিত ছিল আমার। ঠিক যেমন সিনেমায় হয়ে থাকে, যেমন- জীবিত বা মৃত কোনও ব্যক্তির সঙ্গে সদৃশতা, সম্পূর্ণ রূপে কাকতলীয়। এমন কিছু ব্যক্তি ছিল যাঁরা প্রতিবাদ জানিয়েছিল। কিন্তু আমি মনে করি মধ্যযুগের ইতিহাসের উদাহরণ টেনে এনে কোনও কিছুকে বিচার করা অত্যন্ত হাস্যকর এবং অনেকেই আমার পক্ষে, আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আমরা ডানপন্থী সমাজে বাস করি, এ কারণে আমি খানিকটা আশ্বস্ত। আর তা ছাড়াও, ভারত এখনও উদার ও তার জনগনের অধিকংশই উর্বর মস্তিষ্কের এবং প্রগতিশীল চিন্তাভাবনা সম্পন্ন।’
ছেলের নাম বিতর্কের পর বলিউডে বহু তারকাও করিনা তৈমুরের নাম পালটে ফেলবার পরামর্শ দিয়েছিলেন। ফুঁসে উঠে নায়িকা বলেছিলেন, ‘যা হয়ে গিয়েছে, তা হয়ে গিয়েছে। আমি সিদ্ধান্ত নিই, আমার সন্তানের যে রকম ইচ্ছে নাম রাখব। ততক্ষণ পর্যন্ত আমার যায় আসে না, যতক্ষণ আমার সন্তান ভালো আছে। আমরা তাতেই খুশি। যে যা খুশি বলুক, যে ভাবে ইচ্ছে ট্রোল করুক, আমি পাত্তা দেব না’।