ব্যক্তিগত জীবন বেশ রঙিন ছিল বর্ষীয়ান অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহার। ৮০-র দশকে যখন তিনি কেরিয়ারের শীর্ষে, সেই সময় একসঙ্গে দুই মহিলার সঙ্গে প্রেম চালিয়েছেন। নিজের মুখেই সেকথা স্বীকারও করেছেন। পুনম সিনহার সঙ্গে বিয়ের কথা ঘোষণা করেন যখন, তখন পুরোদমে সম্পর্কে রয়েছেন সহ-অভিনেত্রী রীনা রায়ের সঙ্গে। লেহরেন রেট্রোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শত্রুঘ্ন সিনহা তাঁর স্ত্রী ও রিনা রায়ের সঙ্গে ‘টু টাইমিং’ করা নিয়ে মুখ খুলেছেন।
সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী শত্রুঘ্ন সিনহাকে প্রশ্ন করেন, ‘যে পুরুষের জীবনে দু'জন মহিলা রয়েছে তাঁকে ভাগ্যবান বলে মনে করা হয়, তবে তাঁকেও তো নানা সমস্যার মোকাবিলা করতে হয়। আপনার জীবনের সেই পর্যায় যখন ছিল, যখন আপনার জীবনে রিনা রায় এবং পুনম ছিলেন, কীভাবে সেই সময়টা কাটে?’
উত্তরে শত্রুঘ্ন বলেন, ‘আমি নাম নেব না। তবে যেসব নারী আমার জীবনের অংশ ছিলেন তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারও প্রতি আমার কোনও ক্ষোভ নেই। আমি কখনো তাদের খারাপ ভাবি না। তারা সবাই আমাকে বেড়ে উঠতে এবং আরও ভালো মানুষ হতে সাহায্য করেছে।’
ভুল স্বীকার করলেন শত্রুঘ্ন
তিনি আরও বলেন, ‘আমি অবশ্যই আমার জীবনে ভুল করেছি। পাটনা থেকে এতদূর আসা একটি ছেলে, ইন্ডাস্ট্রির চাকচিক্যর মধ্যে হারিয়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক ছিল। আমি জানতাম না কীভাবে স্টারডম মোকাবিলা করতে হয়। এসবের মধ্যে মানুষ হারিয়ে যায়। আমাকে পথ দেখানোর জন্য কোনো অভিভাবক ছিল না। তবে পুনম আমার জীবনে আসার পর ও আমাকে অনেক সাহায্য করেছে।’
ত্রিকোণ প্রেমের মুহূর্তে নিজের অবস্থা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বর্ষীয়ান এই অভিনেতা বলেন, ‘আমি নাম নিতে চাই না, তবে এই ব্যক্তির সঙ্গে যা হয়েছিল। আমি তার কাছে কৃতজ্ঞ। আমি তার কাছ থেকে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি এবং অনেক কিছু শিখেছি। আমার কোনো অভিযোগ নেই।’
সোনাক্ষীর বাবা এরপর বলেন, ‘যখন একজন মানুষ মনের দিক থেকে ভালো হয় এবং তিনি একই সঙ্গে দুটো সম্পর্কে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে যান, তখন তিনিও তার মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের দিক দিয়ে নানা ওঠাপড়ার মধ্যে দিয়ে যান। আপনি যখন আপনার প্রেমিকের সঙ্গে বাইরে থাকেন, তখন আপনি বাড়িতে থাকা আপনার স্ত্রীর জন্য অপরাধবোধে ভোগেন। আবার বাড়িতে স্ত্রীর সঙ্গে থাকলে, প্রেমিকার জন্য মন খারাপ হয়। ভাবেন, উসকো খিলোনা বানাকে কিউ রাখা হ্যায় (আমি কেন তার সঙ্গে কোনো খেলনার মতো আচরণ করছি)?’
ত্রিকোণ প্রেমে 'পুরুষও কষ্ট পায়', বললেন শত্রুঘ্ন
ত্রিকোণ প্রেমে শুধু মহিলারাই কষ্ট পান না, পুরুষটিও কষ্ট পান, দাবি শত্রুঘ্নর। তিনি বলেন, ‘আমি বলতে চাই, ত্রিকোণ প্রেমের সঙ্গে জড়িত মেয়েরাই শুধু কষ্ট পায় না। পুরুষরাও কষ্ট পায়। পরিস্থিতির থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ছটফট করে সে।’
শত্রুঘ্ন সিনহার সঙ্গে রিনা রায়ের প্রথম দেখা হয়েছিল কালীচরণের সেটে এবং তারপরে মিলাপ, সংগ্রাম এবং চোর হো তো অ্যায়সার মতো ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। একে অপরের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে তাদের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। পরে অবশ্য শত্রুঘ্ন সিনহা পুনম সিনহার সঙ্গে বিয়ের কথা ঘোষণা করেন। এমনকি তিনি তাঁর আত্মজীবনী 'এনিথিং বাট খামোশ'-এ উল্লেখ করেছেন, পুনমের সঙ্গে বিয়ের কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি রিনার সঙ্গে স্টেজ শোতে যোগ দিতে লন্ডনে গিয়েছিলেন। নিজের সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বর্ষীয়ান অভিনেতা একবার রাজীব শুক্লাকে বলেছিলেন, "জীবনে কখনও কখনও এমন এক সন্ধিক্ষণে পৌঁছে যায় যখন সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু একবার সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে তা সব সময় সবার পক্ষে নাও যেতে পারে।