মায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে আবেগঘন অমিতাভ। এদিন স্মৃতির ঝোলা থেকে চাপা যন্ত্রণার কথা নিজের লেখণীতে উজার করে দিলেন বিগ বি। বুধবার নিজের ভ্লগে মায়ের শেষ মুহূর্তের কথা লেখেন অমিতাভ। জানান, তিনি চিকিৎসকদের আটকান যখন সিপিআর-এর মাধ্যমে তেজি বচ্চনের থমকে যাওয়া হৃদস্পদনে গতি আনার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন চিকিৎসকরা।
অমিতাভ লেখেন, ‘উনি চলে গেলেন খুব শান্তভাবে… একদম শান্ত সকালের মতো, আমি দেখলাম চিকিৎসকরা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন, বারবার চেষ্টা করে চলেছেন… বুকে চাপ দিয়ে ওঁনার হৃদপিণ্ডকে সচল করবার চেষ্টা করছে.. বারবার… আমরা দাঁড়িয়েছিলাম… হাতে হাত ধরে সবাই চেয়েছিলাম… ভাইপো-ভাইঝিরা, ছেলেমেয়েরা কান্না জুড়ে দিয়েছিল…. অবশেষে আমি নীরবতা ভাঙলাম.. ছেড়ে দিন ডাক্তারবাবু.. ওঁনাকে যেতে দিন… উনি চলে যেতে চাইছেন আর কোনও চেষ্টার দরকার… প্রত্যেক চেষ্টা ওঁনার সিস্টেমের জন্যে কষ্টদায়ক, আমাদের প্রত্য়েকের জন্যও খুব কষ্টদায়ক।’
অমিতাভ আরও লেখেন, ‘আমি থামতে বললাম, ওঁনারা সেটাই করল… ওই মনিটরের সোজা লাইনটা আমাদের সকলকে বলে দিচ্ছিল এই পৃথিবী ছেড়ে তিনি চলে গেছেন… উনি নিশ্চয় ভালো কোনও জায়গায় গিয়েছেন…. এগুলো এমন কিছু শব্দ যা আমরা প্রায়ই শুনি যখন কেউ চলে যায়। ওঁনার মাথায় হাত রাখতেই শতসহস্র স্মৃতি ভিড় করে এল হাসপাতালের ওই রুমটার মধ্যে….’।
এরপর হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয় তেজি বচ্চনের মরদেহ। অমিতাভ লেখেন, কেমনভাবে ‘প্রতীক্ষা’য় শেষরাতটা মায়ের সঙ্গে কাটিয়েছিলেন তিনি। পরদিন অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয় তেজি বচ্চনের। প্রয়াত তেজি বচ্চন যে জায়গাটিকে পবিত্র মনে করতেন সেখানেই তাঁর অস্থি বিসর্জন দেওয়া হয়েছে বলে জানান অমিতাভ।
১৯৪১ সালে বিখ্যাত কবি হরিবংশ রাই বচ্চনের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তেজি বচ্চনের। তাঁদের দুই সন্তান অমিতাভ এবং অজিতাভ। বার্ধক্যজনিত নানান সমস্যার জেরে ২০০৭ সাল জুড়ে প্রায় হাসপাতালেই কাটান তেজি বচ্চন। নভেম্বর মাসে তাঁর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়, অবশেষে ২১শে ডিসেম্বর না ফেরার দেশে চলে যান তেজি বচ্চন।