'আজ বসন্তের গায়ে হলুদ, কাল বসন্তের বিয়ে গো, শিমুল-পলাশ সাজবে আজই নাকে নোলক দিয়া গো, নাকে নোলক দিয়া'। বসন্তের প্রেক্ষাপটে মুক্তি পেল 'বহুরূপী'-র এমনই একটা গান। যে গানের দৃশ্যায়নে এক্কেবারে অন্য রূপে দেখা মিলল শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও কৌশানি মুখোপাধ্যায়ের। তাও আবার একজন ছিলেন বরবেশ অপরজন বউ। হাসিমুখে অফ-হোয়াইট রঙের পাঞ্জাবিতে সেজে, কপালে চন্দনের টিপ পরে দেখা মিলল শিবপ্রসাদের। আর কৌশানি তখন সেজেছেন পলাশ ফুলের মালায়।
নাহ, চিরাচরিত রজনীগন্ধ নয়, বসন্তের পলাশ ফুলের মালায় সেজে উঠতে দেখা গিয়েছে কৌশানিকে। কৌশানিকে চন্দনের টিপ, নাকে নোলক দিয়ে সেজে লাজুক দৃষ্টিতে চোখ নামাতে দেখা গেল। শেষপর্যন্ত এক পুরনো মন্দির প্রাঙ্গনে মালাবদল হল তাঁদের। হ্য়াঁ, পলাশ ফুলের মালাই তাঁরা একে অপরকে পরিয়ে দিলেন। সিঁদুরদানও হল। এরপর নতুন বউকে নিয়ে নৌকা করে নিজের বাড়িতে। তারপর সেখানে নতুন বর-বউ-এর প্রেম জমে ক্ষীর। একে অপরকে খাইয়ে দেওয়া থেকে চুমু খাওয়া হল আরও কত কিছুই না ঘটল। শিবপ্রসাদ-কৌশানির রসায়নে ভরপুর বহুরূপীর এই নতুন গানে মুগ্ধ হতে হয় বৈকি।
বহুরূপী এই গ্রাম বাংলার বিয়ের গান ‘শিমুল পলাশ’ লিখেছেন ননীচোরা দাস বাউল। সুর দিয়েছেন নানিছোড়া দাস বাউল ও বনি চক্রবর্তী। গানটি গেয়েছেন শ্রেষ্ঠ দাস, ননীচোরা দাস বাউল ও বনি চক্রবর্তী। ইতিমধ্যেই এই গানে শিবপ্রসাদ-রুক্মিণীর রসায়নে মুগ্ধ নেটপাড়ার দর্শক। প্রসঙ্গত এই ছবিতে কৌশানির চরিত্রের নাম ঝিমলি। আর শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের চরিত্রের নাম বিক্রম।
এই গানটি প্রসঙ্গে পরিচালক, অভিনেতা শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘শিমুল পলাশ গানটি মাটির প্রতি একটা সত্যিকারের শ্রদ্ধা, যা একজন আসল বহুরূপী শিল্পী নানিচোরা দাস বাউল এবং শ্রেষ্ঠ দাস গেয়েছেন। এটা সত্যিই একটি মাস্টারপিস। যে শটটিতে বিক্রম এবং ঝিমলিকে একসঙ্গে দূরবর্তী ল্যান্ডস্কেপে হাঁটতে দেখা যায। যেটা একটা পরিবার হিসাবে তাঁদের একসঙ্গে যাত্রা শুরুর প্রতীক। এই গানটি সর্বদা আমার প্রিয় শট হয়ে থাকবে। এই গান আমার হৃদয়ে একটা বিশেষ স্থানও রেখে যাবে। কারণ দর্শকরা আমাকে প্রথমবারের মতো নাচতে দেখবে। আর সেটা আমার দুর্ঘটনার পরে একটা চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে আমি কৌশানীর সামনে নার্ভাস ছিলাম, ও একজন দক্ষ নৃত্যশিল্পী।’
ঝিমলি ওরফে কৌশানি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘এই গানটি ঝিমলি ও বিক্রমের সম্পর্ককে সুন্দরভাবে তুলে ধরেছে। এই গানটির শ্যুটিং খুব সুন্দর কিন্তু চ্যালেঞ্জিং অভিজ্ঞতা ছিল। যেমন একটা দৃশ্য যেখানে আমাকে কর্দমাক্ত মাটিতে নাচতে হয়েছিল, যেখানে ভারসাম্য বজায় রেখে দাঁড়ানো কঠিন। উপরন্তু, আমি গানের জন্য মাটির পাত্র তৈরি করার জন্য বেশ কয়েকটি মৃৎশিল্পের সেশনে অংশ নিয়েছিলাম। যা আকর্ষণীয় অভিজ্ঞতা ছিল। আমরা এই ছবির জন্য় অনেক কঠোর পরিশ্রম করেছি। এই ছবিটি আমার হৃদয়ে একটা বিশেষ স্থান রাখে। আমি আশা করি দর্শকদেরও ভালো লাগবে, যতটা আমরা এটা তৈরির সময় উপভোগ করেছি। আর শিবুদার সঙ্গে আমার রসায়ন হয়ত কেউ কখনও কল্পনাও করতে পারিনি। এই শিমুল-পলাশ গানে আমাদের পুরো রসায়নটা প্রকাশ পেয়েছে।’