বলিউড অভিনেতা শ্রেয়াস তালপাড়ে ও আলোক নাথের বিরুদ্ধে দায়ের হল প্রতারণা ও অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ। দায়ের হওয়া এই অভিযোগে নাম রয়েছে মোট ১৩ জনের। ২২ জানুয়ারি হরিয়ানার মুরথাল থানায় FIR দায়ের করা হয়। ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস)-এর ৩১৬(২), ৩১৮(২) এবং ৩১৮(৪) ধারায় বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণা ও সম্পত্তি সংক্রান্ত প্রতারণামূলক হস্তান্তরের অভিযোগে মোট ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। যেখানে নাম রয়েছে এই দুই অভিনেতারও।
মুরথালের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার অজিত সিং এবিষয়ে বলেন, ‘মূল অভিযোগ একটি সংস্থার বিরুদ্ধে, যে সংস্থা লোকজনকে বিনিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে মানুষকে প্রতারিত করেছে। তবে সেই অভিযোগে নাম রয়েছে শ্রেয়াস তালপাড়ে ও আলোক নাথের।' মুরথালের ACP অজিত সিং জানিয়েছেন, 'এক্ষেত্রে শ্রেয়স তালপাড়ে ও অলোক নাথের ভূমিকাও তদন্ত করে দেখা হবে।’
হরিয়ানার সোনিপতের বাসিন্দা বিপুল অ্যান্টিল অভিযোগ করেছেন যে মাল্টি-স্টেট কো-অপারেটিভ সোসাইটি অ্যাক্ট, ২০০২-এর অধীনে ইন্দোরে নথিভুক্ত হিউম্যান ওয়েলফেয়ার ক্রেডিট কো-অপারেটিভ সোসাইটি ২০১৬ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে হরিয়ানা সহ একাধিক রাজ্যে কাজ করছে। অভিযোগ, সংস্থাটি উচ্চ রিটার্নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সোসাইটি ফিক্সড ডিপোজিট (এফডি) এবং রেকারিং ডিপোজিট (আরডি) স্কিম চালু করেছে। তবে এটা একটা মাল্টি লেভেল মার্কেটিং মডেল ব্যবহার করে পরিচালিত হয়েছিল। সেখানে অতিরিক্ত বিনিয়োগকারী আনার জন্য এজেন্টদের লোভনীয় প্রণোদনা (ইনসেনটিভ) প্রদান করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ, বিনিয়োগকারীদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল যে তাদের তহবিল সুরক্ষিত, স্কিম ম্যাচিওর হলেইও টাকা দিয়ে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন-কঙ্গনার 'ইমার্জেন্সি'তে বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে ঋষি কৌশিক, কী বললেন অভিনেতা?
বিপুল অ্যান্টিল আরও বলেন, এই সোসাইটির মূল কেন্দ্র হরিয়ানায় মহেন্দ্রগড়ে অবস্থিত। তবে বিনিয়োগকারীদের অর্থ জমা দেওয়ার জন্য এটি রাজ্য জুড়ে ২৫০ টিরও বেশি পরিষেবা কেন্দ্র চালায়। এছাড়াও কিছু শহরে, সোসাইটি অ্যাম্বুলেন্স ইউনিট এবং মোবাইল ATM ভ্যানের মতো পরিষেবা সরবরাহ করত। তাঁর অভিযোগ, 'প্রশিক্ষণ' কর্মসূচির নামে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে অভিজাত হোটেলগুলোতে নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হত।
তবে এই সোসাইটি এখন বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করছে বলে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অ্যান্টিল বলেন, 'প্রথমত, এজেন্টদের ইনসেনটিভ বন্ধ করা হয়। তখন বিনিয়োগকারীদের ম্যাচিওরিটির টাকা পরিশোধেও বিলম্ব হতে শুরু করে। এরপরই মালিকরা ফোন বন্ধ করে দেন এবং অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। বিনিয়োগকারী ও এজেন্টরা যখন সমাজের যঙ্গে যুক্তি এমন ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছান, তখন তাঁদেরও মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া হয়।
অভিযোগকারী বিপুল অ্যান্টিল ফোনে ‘দ্য প্রিন্ট’কে জানিয়েছেন যে তিনি সোসাইটিতে এফডি হিসাবে ৩৩ লক্ষ টাকা জমা দিয়েছিলেন, অন্যদিকে তাঁর ভাই অমিত, যিনি একটি 'সুবিধা কেন্দ্র' পরিচালনা করেছিলেন, তিনি বিনিয়োগকারীদের তহবিলের ৪ কোটি টাকারও বেশি জমা দিয়েছিলেন, মূলত পরিবার এবং বর্ধিত পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে এই টাকা তোলা হয়। এদিকে ইতিমধ্য়েই আত্মীয়স্বজনরা এখন তাঁদের টাকা ফেরত চাইছেন।