ছোট পর্দার অভিনেত্রীদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় মুখ হলেন শ্রুতি দাস। শেষ তাঁকে দেখা গিয়েছিল জি বাংলার জনপ্রিয় মেগা 'রাঙাবউ' -তে। উইন্ডোজ প্রোডাকশনের প্রযোজনায় তাঁর নতুন ছবি 'আমার বস' বড় পর্দায় মুক্তি পেতে চলেছে খুব শীঘ্রই। তবে তাঁর আগেই ভুয়ো কাস্টিং এজেন্সি নিয়ে সরব হলেন নায়িকা। এই মিথ্যের জাল থেকে কীভাবে বাঁচা যায় তার পরামর্শও দিলেন অভিনেত্রী।
এই প্রসঙ্গে শুক্রবার শ্রুতি তাঁর সমাজমাধ্যমের পাতায় লেখেন, ‘আমাদের টালিগঞ্জ বা ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রি তে সত্যিই কি কোনও এজেন্সি দ্বারা কাস্টিং হয়? এখনও পর্যন্ত কি কোনও পরিচালক বা কোনও প্রোডাকশন হাউস, কোনও কাস্টিং কোম্পানির হাতে কোনও সিনেমা, সিরিয়াল বা ওয়েব সিরিজের স্ক্রীপ্ট দিয়ে বলেন যে, ভাই পুরো কাস্টিংটা করে দাও পরিবর্তে এই রেমুনারেশন তোমাকে দিচ্ছি। না, আমাদের কলকাতায় এই ভাবে কোনও কাস্টিং হয়না। আমি নিজে এত বছর সহকারি পরিচালক হিসাবে নিয়মিত কাজ করছি, যে কটি পরিচালনার কাজ করেছি আমি কখনও দেখিনি বা আমার বাবাও কস্মিন কালে দেখেননি। তাহলে এই যে ‘স্যোশাল মিডিয়া’তে এত কাস্টিং এজেন্সির বিজ্ঞাপন দেখি, এরা কি করে? আমারও প্রশ্ন এরা কি করে?’
আরও পড়ুন: 'দেব ডি' হিট, এদিকে না-পসন্দ প্রিয় বন্ধুর, হাউহাউ করে কাঁদেন অনুরাগ কাশ্যপ
তারপরই এর উত্তর নিজেই দেন অভিনেত্রী। তিনি বলেন, ‘এরা টুপি পরায়। তাঁদের, যাঁরা গ্রাম মফস্বল থেকে আসে দু চোখে অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে। কিন্তু জানেন না কোথায় যাবেন বা কার কাছে যাবেন। সেই না জানারই সুযোগ নেয়। আর এই সমস্ত এজেন্সি গুলো অধিকাংশই জুনিয়র আর্টিস্ট মানে ভিড়ে ১৫ জন দাঁড়াবে সবাই চিৎকার করবে তাঁদের মধ্যে দু একজন একটা দুটো কথা বলবে বা একজন নার্স, ওয়ার্ডবয়, ওয়েটার দু একটি কথা আছে এই ধরনের চরিত্রগুলি যেগুলো সাধারণত কেউ করতে চায়না। সেই কাস্টিং গুলোর জন্য এদের থেকে ছেলে মেয়ে আমরা নিই। আর মাঝে মধ্যে কখনও কোথাও অডিশনের খবর এদের ছেলে মেয়েদের দেয়। হয়তো টালিগঞ্জে একটি কি দুটি এজেন্সি আছে যাঁরা ঠিকঠাক চরিত্রের জন্য রেফার করে। কিন্তু এরা কেউ কাস্টিং করেনা।’
তারপর অভিনেত্রী এই ভুয়ো কাস্টিং কাউচের কবলে পড়ে কীভাবে মানুষের টাকা যায় সেই প্রসঙ্গে নানা কথা ভাগ করে নেন। তিনি লেখেন, ‘প্রায়ই শুনি অনেকের থেকে মোটা টাকা নেওয়া হয়েছে। আমাদের ইন্ডাস্ট্রির বাইরে আর একটা ইন্ডাস্ট্রি আছে। যার অফিসগুলো গোটা কলকাতার অলিগলিতে ছড়িয়ে আছে। যাদের বিজ্ঞাপন সোশ্যাল মিডিয়া, পাড়ার গলিতে দেখা যায়। টালিগঞ্জ মেট্রোর বাইরে চায়ের দোকানের আলোচনা কানে এলে মনে হয় ছবির প্রি-প্রোডাকশন থেকে শুরু করে রিলিজ বোধ হয় এখানেই করে দিল। সেখানেও নতুন ছেলে মেয়েরা ঘিরে দাঁড়িয়ে। এদের কাছে পৌঁছানোটা যেহেতু খুব সহজ তাই এদের এখানেই ভিড় জমায় ছেলে-মেয়েরা। আর তারপর কোনও কিছু না জানার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন ভাবে গলা কাটে এরা।'
আরও পড়ুন: ৫৯-এর শাহরুখের ফিটনেসে কুপোকাত আমির! দুই খানের বয়সের ফারাক কত জানেন?
এরপর এই মিথ্যাচার নিয়ে সোচ্চার হন নায়িকা, তিনি আরও লেখেন, 'এই ভন্ডগুলোর ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগ নেই। এরা হাজার প্রতিশ্রুতি দেবে, স্বপ্ন দেখাবে। এদের দেখানো স্বপ্নে যখন বিভোর হয়ে যাবেন তখন আপনাকে এক্সপ্লোয়েড করবে।ছবির নামে যে কত জলছবি হয়। সেখানে না ইন্ডাস্ট্রির কোনও টেকনিশিয়ান থাকে, না আর্টিস্ট। হয়তো দু একজন চেনা মুখ নিল, যাদের মুখ দেখিয়ে টাকা পয়সা তোলা যায় নতুন ছেলে মেয়েদের কাছ থেকে। আর এ ছবি কোথায় রিলিজ হয়, কারা দেখে তা ঈশ্বরও জানেন না।’
যারা অভিনয় করার জন্য আসছেন তাঁদের শ্রুতি পরামর্শ দেন তাঁরা যেন সরাসরি প্রডাকশন হাউসগুলিতে যান। যাঁদের নাম আছে বা যাঁদের কোনও কাজ ইতিমধ্যেই চলছে। নায়িকার কথায়, ‘আমাদের খুব ছোট্ট একটা ইন্ডাস্ট্রি। হাতে গোনা প্রোডাকশন হাউজ। তাই ৫ দিন হয়তো ফিরে আসবেন। ৬ দিনের মাথায় ঠিক কারুর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হবে। ডিরেক্ট ষ্টুডিওতে যান। সেখানে প্রোগ্রামার, পরিচালক, সহকারী পরিচালকদের সঙ্গে যোগাযোগ করুণ। অন্য কারুর সঙ্গে নয়। সঠিক পথে হাঁটুন, সেটা হয়তো সময় সাপেক্ষ, লড়াই বেশি ..কিন্তু ঠকবেন না।’ সব শেষে তিনি এও জানান যে, কাজ করলে টাকা পাওয়া যায়। কাউকে টাকা দিতে হয় না।