রাত দুটোয় বেজে উঠেছিল টেলিফোন ! ওপার থেকে ভেসে এল শঙ্কিত কণ্ঠে স্মিতার প্রশ্ন ‘তোমার শরীর ঠিক আছে তো ? এখনও এই ঘটনার কথা মনে পড়লেই গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে বিগ বি’র। কারণ ঠিক তার কয়েক ঘন্টার মধ্যে কুলি ছবির শুটিং চলাকালীন তাঁর জীবনের সেই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটে। আজ ১৭ই অক্টোবর ,বলি সুন্দরী স্মিতা পাতিলের জন্মবার্ষিকী। মাত্র ৩১ বছর বয়সে যাঁর অকাল প্রয়াণ আজও মেনে নিতে পারে না অনুরাগীরা। এক কথায় বিস্ময়ের অসারতা গ্রাস করেছিল ভক্তমহল থেকে টিনসেন টাউনে। নিজের এই স্বল্প জীবন পরিসরের মাঝেই একাধিক বাণিজ্যিক এবং ভিন্ন ধারার আর্ট ফিল্মে নিজের প্রতিভার প্রতিফলন রেখে গেছেন স্মিতা।
সে রাতের ঘটনা বলতে গিয়ে অমিতাভ জানান , 'তখন ব্যাঙ্গালোরে চলছে 'কুলি' র শুটিং। হঠাৎই রাত দুটোয় আমার হোটেলের ঘরের ফোন বেজে ওঠে। রিসেপশন থেকে জানতে পারি স্মিতা। এত রাতে আমায় আগে কখনও ফোন করেননি উনি। ভাবলাম নিশ্চই গুরুতর কিছু। কাজেই ফোনটা কানে নিয়ে হ্যালো বলতেই চমকে উঠি। উনি জানতে চান আমি ভালো আছি তো ? কিছুটা হতচকিত হয়েই উত্তর দি , হ্যাঁ কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু বুঝতে পেরেছিলাম উনি খুব টেনশনে রয়েছেন আমাকে নিয়ে। জানালেন আসলে একটি স্বপ্ন দেখেছেন আমায় নিয়ে , খুব খারাপ স্বপ্ন .....'
আর পরদিন সকালেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছিল। একটি ফাইটের দৃশ্য শুট করার সময় অমিতাভ লাফ দিয়েছিলেন। কিন্তু মাপের আন্দাজে গরমিল হয়ে গিয়েছিলো। ফলে সোজা গিয়ে আছাড় খেয়ে পড়েছিলেন একটি টেবিলের ওপর। মুহূর্তের মধ্যে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এমনকি দিতে হয়েছিল ভেন্টিলেশন সাপোর্টও। বিগ বি একবার জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়ার আগে ক্লিনিক্যালি ডেড বলে ঘোষণাও করে দিয়েছিলেন।
আশির দশকে প্যারালাল হিন্দি সিনেমা মুভমেন্টের অন্যতম মুখ ছিলেন স্মিতা। ১৯৭৪ সালে হিন্দি ছবি 'মেরে সাথে চল ‘-এর হাত ধরে ইন্ডাট্রিতে ডেবিউ হয় স্মিতার। তবে মূলত পরিচিতির কেন্দ্রে আসেন শ্যাম বেনেগালের ছবি নিশান্ত (১৯৭৫ )এর হাত ধরে। এছাড়াও মন্থন (১৯৭৬), ভূমিকা (১৯৭৭), গমন (১৯৭৮), আক্রোশ (১৯৮০), আলবার্ট পিন্টো কো গুস্সা কিঁউ আতা হ্যায় (১৯৮০), অর্থ (১৯৮২), বাজার (১৯৮২), অর্ধ সত্য এন্ড মান্ডি (১৯৮৩) প্রভৃতি ছবিতে নিজের সৃষ্টি রেখে গিয়েছেন স্মিতা। মৃনাল সেনের ছবি আকালের সন্ধানে ছবিতেও পাওয়া গিয়েছিল স্মিতা পাতিলকে।