আর জি করের নির্যাতিতা তরুণীর বিচার চেয়ে পথে নামায় শ্যামবাজারে হেনস্থার শিকার হন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। সেই নিয়ে প্রতিবাদে সরব টলিপাড়া। ঋতুপর্ণার পাশাপাশি প্রতিবাদের কথা বলায় ডিজিট্যাল মাধ্যমে রীতিমতো হেনস্থা করা হল অভিনেত্রী স্নেহা দাশগুপ্তকে।
টেলিপা়ড়ার অন্যতম স্পষ্টবক্তা স্নেহা। সোজা কথা সোজাভাবে বলতে পছন্দ করেন। টলিপাড়ার এই শিল্পী আরজি করের ঘটনায় প্রথম থেকেই সরব। কিন্তু তার জন্য এমন কটূক্তির শিকার হবেন তা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেননি। নির্যাতিতা তরুণীর বিচারের দাবিতে যাদবপুরের এইট বি বাসস্ট্যান্ডে জড়ো হওয়া জনতার প্রতিবাদের ভিডিয়ো নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন স্নেহা। সেই ভিডিয়োর কমেন্ট বক্সেই অভিনেত্রীকে রীতমতো হেনস্থা করা হয়। তাঁকে মাওবাদী বলে দেগে দেন এক নেটিজেন, কটাক্ষ করা হয় তাঁর পেশা নিয়েও। চুপ থাকেননি স্নেহা। পালটা উত্তরও দেন তিনি।
‘কার কাছে কই মনের কথা’ অভিনেত্রীর উদ্দেশে একজন লেখেন, ‘মাওবাদী এসে গেছে। যেই আগুন জ্বালাচ্ছেন, সেই আগুনেই পুড়বেন। স্বামী তো বহুদিন আগেই ভেগে গেছে এর জন্য’। পালটা পায়েল জানান- ‘আপনি কত জানেন আমার সম্পর্কে, কত সময়, কত খবর রেখে বেড়ান’। এখানেই থামেননি ওই মহিলা ট্রোলার। পায়েল নামের ওই জনৈকা এরপর স্নেহার সিনিয়র সহ-অভিনেত্রী রীতা দত্ত চক্রবর্তীকে ‘হিজড়ে’ বলে বিদ্রুপ করেন। ‘২ পয়সার পাঠ করে’ সিরিয়াল অভিনেতারা, এইসব বলে তোপ দাগেন।
সিরিয়াল করে পেট চলে। তাদের আবার এমন নাটক- এই মন্তব্যের পালটা জবাবে স্নেহা বলেন, 'কী ভাবে পেট চললে নাটক হয় না, যদি একটু বলেন। তাহলে তো রোগী দেখে যাদের পেট চলে, তারা সবচেয়ে বড় নাটক করছেন আপনার মতে'। এই কথোপকথনের স্ক্রিনশট নিজের ফেসবুকের দেওয়ালে পোস্ট করে ভুয়ো প্রোফাইলের আড়ালে লুকিয়ে থাকা ট্রোলারদের আসল রূপ তুলে ধরার চেষ্টা করেন স্নেহা। অরিত্র দত্ত বণিক, স্নেহাকে এই সব ঘৃণা ছড়ানোয় ওস্তাদ পাবলিকদের দিকে নজর না দেওয়ার কথা বলেন। আরও জানান, এগুলো ভুয়ো প্রোফাইল তৈরি করে লেখা।
স্নেহা জানান, হয়ত প্রতিক্রিয়া দেওয়া উচিত হয়নি। কিন্তু সিনিয়র সহ-অভিনেত্রীর অপমান সহ্য করতে পারেননি তিনি। এই প্রসঙ্গে আনন্দবাজারকে স্নেহা বলেন, ‘শুধু আমাকে আক্রমণ করা হয়েছে বলে নয়। আমার সঙ্গে আমারই ধারাবাহিকের বর্ষীয়ান অভিনেত্রীকে অকথ্য ভাষায় আক্রমণ করা হল। পরে মনে হয়েছে, উত্তর না দিলেও হত। কারণ এখন অনেক বড় লড়াই চলছে।’
‘পুবের ময়না’তে বর্তমানে দেখা যাচ্ছে স্নেহাকে। তাঁর মতে অভিনেত্রীদের জীবন সহজ নয়। অসুস্থ ছেলেকে ঘরে ফেলে ১৪ ঘণ্টা শ্যুটিং করার যন্ত্রণা শুধু এক অভিনেত্রীই জানে।