দেখতে দেখতে ২ মাস হতে চলল। ৯ অগস্ট রাতে আরজি করে ঘটা নারকীয় ঘটনার বিচার এখনও অধরা। আরজি করের ৩২ বছরের তরুণী ডাক্তারের ধর্ষণ ও খুনের পিছনে কাদের হাত রয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এদিকে, রাজ্যের শাসক দলের উপরেই উঠেছে, প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ। সুপ্রিম কোর্টে বারবার নাক কাটা যাচ্ছে রাজ্যের, ও প্রাথমিকভাবে এই ঘটনার তদন্তের দায়িত্বে থাকা কলকাতা পুলিশের। আরজি করের বিচার চেয়ে শুরু হওয়া আন্দোলনের মুখ হয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। মাঝে দীর্ঘ কর্মবিরতি শেষ করে কাজে ফিরলেও, ফের তাঁরা রাস্তায়। মহালয়ায় মহামিছিলের ডাক দেন তাঁরা। যাতে যোগ দিয়েছিলেন নাগরিক সামজ। ছিলেন অভিনেত্রী সোহিনী সরকারও। সেখান থেকে সরাসরি প্রতিবাদ করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে কালীঘাটের ময়না ডাকা নিয়ে।
আরও পড়ুন: ‘সেট থেকে বেরিয়ে যাও…’, জাতীয় পুরস্কার জিতেও শুনতে হয়েছিল মিঠুনকে, কী করেছিলেন?
মহালয়ার দিন ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের মঞ্চে দাঁড়িয়ে আরজি করের নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে মুখ খোলেন সোহিনী। পিতৃতন্ত্রের বিরুদ্ধেও সওয়াল করেন। স্পষ্ট করে দেন, এটা শুধু জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন নয়। ওঁরা শুধু পথ দেখিয়েছেন। এই আন্দোলন নাগরিক সমাজের। যাতে ভবিষ্যত প্রজন্ম মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারে বাংলায়। সরকারি হাসপতালগুলো শুধু নয়, সরকারি স্কুলগুলির দুরবস্থা নিয়েও এদিন কথা বলতে দেখা যায় তাঁকে।
আরও পড়ুন: মা দুর্গার সামনে অন্তর্বাসে মহিলারা! ‘মাকুদের প্রতিবাদ’ বলে কটাক্ষ তৃণমূলের
সোহিনী বলেন, ‘আমরা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এই লড়াই করেছি। আমরা এই রাজ্যকে শিশুদের বাসযোগ্য করে যেতে পারব। সাধারণ মানুষ তলিয়ে যাচ্ছে। নেতা-মন্ত্রীরা অট্টালিকায় উঠছে। গোদী পেলে সবাই সাধারণ মানুষের কথা ভুলে যায়। সেই দেশ তখনই উন্নত হবে যখন নেতা মন্ত্রীর ছেলে সরকারি স্কুলে পড়বে। সরকারি হাসপাতালে নিজেদের চিকিৎসা করাবে। জেলায় মফস্বলে আরও বেশি অরাজকতা চলছে। আমরা যেহেতু শহরে থাকি, আমরা একটু বেশি আশীর্বাদধন্য। এখানে আমরা সবাই নিজের স্বার্থে এসেছি। আমাদের সকলের মধ্যেই এক তিলোত্তমা বাস করে। আমরা সেই অধিকার নিয়েই কথা বলতে এসেছি। জুনিয়র ডাক্তাররা আমাদের সেই পথ দেখিয়েছে।’
আরও পড়ুন: ‘মাইক ধরলেই ঠিক হয়ে যাবে…', পাবলিক ডিম্যান্ডে 'ধরা গলা'য় গান গাইলেন মমতা!
এরপর তিনি পিতৃতন্ত্র নিয়ে সাওয়াল করেন। যদিও স্পষ্ট করে দেন, পিতৃতন্ত্র কখনোই পুরুষদের বিরোধিতা নয়, এটা একটা আইডিয়া। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আশালীন আক্রমণ পিতৃতন্ত্রের পরিচয় বলেই জানালেন তিনি। ‘এই যে মুখ্যমন্ত্রীকে কালীঘাটের ময়না বলা হয়, সেটা নিয়েও আমার আপত্তি আছে। এটাও পিতৃতন্ত্রের নিদর্শন। ওঁর কাজ নিয়ে আমরা আলোচনা করতে পারি কিন্তু একজন মহিলাকে এভাবে আক্রমণ করতে পারি না। রাত দখলের প্রথম দিন থেকেই মেয়েদের পোশাক, মেয়েদের সিগারেট খাওয়া… সারাক্ষণ খালি আক্রমণ করা হচ্ছে মেয়েদেরকে।’