বিপদমুক্ত নন, তবে বৃহস্পতিবারের তুলনায় শুক্রবার সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থার সামন্য উন্নতি হয়েছে, খবর হাসপাতাল সূত্রে। শুক্রবার গভীর রাতের মেডিক্যাল বুলেটিনে জানানো হয়েছে সব ঠিক থাকলে খুব শীঘ্রই প্রবীণ অভিনেতার অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ বন্ধ করা হবে। সূত্রের খবর শরীরে নতুন কোনও সংক্রমণ দেখা না দেওয়ায় শনিবার থেকে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের ডোজ বন্ধ করা হতে পারে। তবে ভেন্টিলেশন সাপোর্টেই থাকবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
৮৫ বছর বয়সী অভিনেতার শ্বাসনালীর জন্য ট্রাকিওস্টোমি করা হবে কি না, সেই নিয়েও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এই দু-একদিনের মধ্যেই। শ্বাসনালীর চিকিৎসার অন্যতম মাধ্যম ট্রাকিওস্টোমি টিউব। অস্ত্রোপচার করে শ্বাসনালীতে (ট্রাকিয়া) ট্রাকিওস্টোমি টিউব স্থাপন করা হয়ে থাকে। যাতে নাক-মুখের বদলে গলায় থাকা ওই টিউবের মুক্ত প্রান্তের মধ্য দিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস কার্য সম্পাদিত হয়।
অভিনেতার তন্দ্রাছন্ন ভাব কিছুটা কেটেছে, কিডনিও আগের চেয়ে ভালোভাবে কাজ করছে। সেই কারণে আপতত নিয়মিত ডায়ালিসেস প্রয়োজন পড়ছে না। সাড়াও দিচ্ছেন (রিফ্লেক্স রেসপন্স) সৌমিত্রবাবু। অশীতিপর অভিনেতার এই অবস্থার পরিবর্তন যথেষ্ট ইতিবাচক বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা।
তবে সুস্থ হতে দীর্ঘ চিকিত্সার প্রয়োজন তা পরিবারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।চিকিত্সকরা আরও বলেন- রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিক, রক্তক্ষরণ বন্ধ করা গিয়েছে।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের চিকিত্সার দায়িত্বে থাকা মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান অরিন্দম কর জানান, ‘কিছুটা উন্নতি ঘটেছে। আগের চেয়ে সচেতনতা বেড়েছে ওঁনার। ১০ থেকে ১১–র মধ্যে রয়েছে সচেতনতা। স্বাভাবিকভাবে চোখ খুলছেন। ১ লিটারের মতো মূত্রত্যাগ করেছেন। একদিন অন্তর ডায়ালিসিস চলছে। কিডনি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়ে উঠবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ইনফেকশন আগের চেয়ে ভালো অবস্থায় আছে। শরীরে জ্বর নেই। অ্যান্টিবায়োটিক বন্ধ করে দেওয়া হবে। অ্যানিমিয়াও স্থিতিশীল। লিভারের কার্যক্ষমতাও ঠিকঠাক। এটা বলতে পারি, গত ৭ দিনের চেয়ে তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে।’
এই নিয়ে একমাসেরও বেশি সময় ধরে বেলেভিউতে চিকিত্সাধীন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ৬ অক্টোবর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। ফাইট জারি রেখেছেন ফেলুদা, আশ্বাস চিকিত্সকদের।