বিপদমুক্ত নন, তবে আগের চেয়ে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থার সামন্য উন্নতি হয়েছে, খবর হাসপাতাল সূত্রে। মঙ্গলবার রাতের মেডিক্যাল বুলেটিনে জানানো হয়েছে আগামিকাল প্রবীণ অভিনেতার ট্রাকিওস্টমি অর্থাত্ শ্বাসনালীতে অস্ত্রোপাচার করা হবে। এই সংক্রান্ত প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু করে ফেলেছে বেলেভিউ কর্তৃপক্ষ। গত ৬ অক্টোবর থেকে মিন্টো পার্ক লাগোয়া এই বেসরকারি হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছেন সৌমিত্র বাবু। পাশাপাশি কিডনির সমস্যার কারণে একদিন অন্তর অন্তর নিয়মিত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের ডায়ালিসিস করা হবে বলে জানানো হল হাসপাতালের তরফে।
শ্বাসনালীর চিকিৎসার অন্যতম মাধ্যম ট্রাকিওস্টোমি টিউব। অস্ত্রোপচার করে শ্বাসনালীতে (ট্রাকিয়া) ট্রাকিওস্টোমি টিউব স্থাপন করা হয়ে থাকে। যাতে নাক-মুখের বদলে গলায় থাকা ওই টিউবের মুক্ত প্রান্তের মধ্য দিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস কার্য সম্পাদিত হয়। তরফ থেকে যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের দেখাশোনা করছেন, তাঁদের তরফে গ্রিন সিগন্যাল মেলার পরেই ট্রাকিওস্টোমি করবার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে বলে খবর।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কিডনি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে এখনও কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ সময় লাগবে বলে অনুমান চিকিত্সকদের। রক্তের নানা বিষয় এবং প্লেটলেট নিয়ে এখনও কিছু সমস্যা রয়েছে ৮৫ বছর বয়সী অভিনেতার। তাই প্লাজমাফেরেসিস করার কথাও ভাবা হচ্ছে। তবে এই নিয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
অশীতিপর অভিনেতার শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন যথেষ্ট ইতিবাচক বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা, তবে সুস্থ হতে দীর্ঘ চিকিত্সার প্রয়োজন তা পরিবারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখনও ভেন্টিলেশন সাপোর্টেই রয়েছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। অভিনেতার গ্লাসগো কোমা স্কেল (মস্তিষ্কের স্নায়ুর সাড়া দেওয়ার সূচক) রয়েছে ৮-৯-এর আশেপাশে।
আগামিকাল সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে সৌমিত্রর ট্র্যাকিওস্টমি করা হবে। এই ব্যাপারে অভিনেতার চিকিত্সার দায়িত্বে থাকা মেডিক্যাল টিমের প্রধান অরিন্দম কর জানান, ‘এই অস্ত্রোপচারের জন্য যে সকল অগ্রিম সতর্কতা প্রয়োজন, তা সবই আমাদের তরফে নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি সিদ্ধান্ত সৌমিত্রবাবুর পরিবারের সঙ্গে আলোচনার পরেই নেওয়া হয়েছে। তাঁদের প্রতি মুহূর্তে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক পরিস্থিতির আপডেট দেওয়া হচ্ছে পরিজনদের। বাড়ির সকলে আমাদের উপর ভরসা রেখেছেন, তাই মন থেকে তাঁদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি’।