কলকাতা : বরাবরের বামপন্থী তিনি। কিন্তু নিজের মতাদর্শ কখনও অন্যের চাপিয়ে দেননি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। কারণ সারাজীবন তিনি মনে করতেন, টলিউড চলবে শিল্পীদের প্রতিভা-গুণে। সেজন্য কোনও রাজনৈতিক রঙের প্রয়োজন নেই। এমনটাই জানালেন অভিনেত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ শতাব্দী রায়।
সৌমিত্রবাবুর সঙ্গে অসংখ্য ছবিতে অভিনয় করেছিলেন শতাব্দী। ফলে বরাবরই সৌমিত্রবাবুর স্নেহ পেয়েছেন। দীর্ঘদিনের পরিচিতি সত্ত্বেও কখনও কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দলে সমর্থন করার জন্য ন্যূনতমও জোরাজুরি করেননি বলে জানিয়েছেন শতাব্দী। আনন্দবাজার পত্রিকায় সৌমিত্রবাবুর স্মৃতিচারণায় শতাব্দী জানান, সৌমিত্রবাবু বরাবর দক্ষতায় বিশ্বাস করতেন। রাজনৈতিক দলের ছায়ায় টলিউড চলবে, এমনটা কোনওদিন ভাবতেন না সৌমিত্রবাবু।
শতাব্দীর কথায়, ‘সৌমিত্রকাকু চিরকাল, আমৃত্যু বামপন্থী ছিলেন। কিন্তু কখনও আমাদের কাউকে কোনও দলকে সমর্থন করতে প্ররোচিত বা উৎসাহিত করার চেষ্টা করেননি। চাপ দেওয়া তো দূরবস্থান। ইন্ড্রাস্টি চলবে নিজের দক্ষতায়, রাজনৈতিক ফ্ল্যাগ-ফেস্টুনের জোরে নয়, এটাই ছিল তাঁর বিশ্বাস।’
একইসঙ্গে শতাব্দী জানান, এত ছবিতে তিনি সৌমিত্রবাবুর মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন যে বিয়ের আমন্ত্রণের সময় তা নিয়ে ঠাট্টা করেছিলেন ‘ফেলুদা’। স্মৃতির পাতা উলটে শতাব্দী জানান, সৌমিত্রবাবুকে নিজের বিয়ের কার্ড দিতে গিয়েছিলেন। সেই সময় সৌমিত্রবাবু ঠাট্টা করেছিলেন, কার্ডে তো তাঁর নাম থাকা উচিত। কারণ এত সিনেমায় তিনি শতাব্দীর বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন যে আসল জীবনেও শতাব্দীর বাবাই হয়ে গিয়েছেন প্রায়।
নিজের সেই ‘সৌমিত্রকাকু’-র প্রয়াণে খবর শোনার পর থেকেই এরকম অসংখ্য স্মৃতি ভিড় করে আসছে শতাব্দীর মনে। শুটিংয়ের সময় সৌমিত্রবাবুর মজা, পর্দায় সৌমিত্রবাবুর উপস্থিতি, ‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরস্কার গ্রহণের সময় তাঁর প্রতি সৌমিত্রবাবুর ভালোবাসা - সব ফুটে উঠছে শতাব্দীর কাছে।