সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক পরিস্থিতির সামন্য উন্নতি হয়েছে, তবে এখনও সঙ্কটমু্ক্ত নন বর্ষীয়ান অভিনেতা, খবর বেলেভিউ হাসপাতাল সূত্রে। গত দু-দিন ডায়ালিসিসের জেরে প্রবীন শিল্পীর স্নায়ুর সমস্যা খানিকটা কেটেছে। গতকাল চোখ খুলে বার কয়েক তাকান সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। গত ৭২ ঘন্টায় সৌমিত্রর পরিস্থিতির কোনওরকম অবনতি হয়নি।
গত সোমবার আচমকাই অভিনেতার পরিস্থিতি বিগড়ে গেলে ভেন্টিলেশনে রাখা হয় তাঁকে, এখনও সেখানেই থাকলেও তুলনামূলকভাবে ৮৫ বছর বয়সী অভিনেতার শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। জানা গিয়েছে গতকাল চোখ খুলে তাকালেও চিকিত্সকদের নির্দেশে কোনওরকম সাড়া দিচ্ছেন না তিনি। আজ তৃতীয়বারের জন্য ডায়ালেসিস করা হতে পারে অভিনেতার।
সাম্প্রতিকতম মেডিক্যাল বুলিটিনে জানানো হয়েছে- ওঁনার শরীরে অক্সিজেনের চাহিদায় কোনওরকম রকমফের আসেনি। ভেন্টিলেশন সঠিকভাবে কাজ করছে। জানা গিয়েছে অভিনেতার শরীরে অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯৫ শতাংশের আশেপাশে। তাঁকে ৪০-৫০ শতাংশ অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে- জানিয়েছেন সৌমিত্রর চিকিত্সার দায়িত্বে থাকা এই ডাক্তার।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শরীরে রক্তক্ষরণের কারণে হিবোগ্লোবিনের মাত্রা কমেছে। তবে দু ইউনিট ব্লাড ট্রান্সফিউশনের পর অনুচক্রিকার মাত্রা অনেকখানি বেড়েছে। অন্যদিকে দুটি কিডনি স্বাভাবিক কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় শরীরে ইউরিয়া ও ক্রিয়েটেনিনের মাত্রা যে অতিরিক্ত পরিমাণে বেড়ে গিয়েছিল,ডায়ালিসেসর পর তা নিয়ন্ত্রণে। কড়া ডোজের অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে অভিনেতাকে। চিকিত্সক জানান- 'ওঁনার কোনও জ্বর নেই, ব্লাড প্রেসার স্বাভাবিক রয়েছে এবং শরীরের অনান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ স্বাভাবিকভাবে কাজ করেছে।
একটানা ২৫ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি বাঙালির প্রিয় ফেলুদা। গত ৬ অক্টোবর করোনা পজিটিভ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে ভর্তি করা হয়েছিল বেলেভিউতে। দুৃ-সপ্তাহে করোনা মুক্ত হলেও কো-মরবিডিটি ও বয়সজনিত কারণে সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে অভিনেতা। তবুও এই বয়সেও যে অদম্য সাহস ও জেদ নিয়ে রোগের সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছেন অভিনেতা তাঁকে কুর্নিশ জানিয়েছেন চিকিত্সকরাও। তাঁদের কথায়- ‘উনি কঠিন লড়াই চালাচ্ছেন। এখনও অনেকটা লড়াই বাকি। আপনারা প্রার্থনা জারি রাখুন’।
করোনা মুক্ত হলে কোভিড এনসেফ্যালোপ্যাথির সমস্যায় মস্তিষ্ক আগেই স্বাভাবিকভাবে কাজ করা বন্ধ করেছে সৌমিত্রর,স্নায়ুর সমস্যার পাশাপাশি দুটি কিডনিতেই সমস্যা দেখা দেওয়াটাই বড় চ্যালেঞ্জ চিকিত্সকদের কাছে।