চলতি বছর চিরঘুমের দেশে পাড়ি দিয়েছেন সঙ্গীত জগতের একাধিক নক্ষত্র। আমরা হারিয়েছি ‘কোকিলকন্ঠী’ লতা মঙ্গেশকর, ‘গীতশ্রী’ সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় এবং ‘ডিস্কো কিং’ বাপ্পি লাহিড়িকে। তিন শিল্পীর মৃত্যুতে চোখ ভিজিছে কলকাতার। বাপ্পি লাহিড়ি আর সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তো বাঙালির নাড়ির টান, অন্যদিকে লতা মঙ্গেশকর তো 'সুরের সরস্বতী'। সেই ভেজা চোখ মুছে এবার প্রিয় শিল্পীকে শ্রদ্ধা জানানোর পালা। বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসবের থিমে এবার ফুটে উঠবেন লতা মঙ্গেশকর, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় এবং বাপ্পি লাহিড়ি। এই তিন কিংবদন্তিকে অভিনব শ্রদ্ধার্ঘ্য জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ কলকাতার এক পুজো কমিটি।
নিজেদের সুরেলা সৃষ্টি দিয়ে বাঙালিকে এক সুতোয় বেঁধেছেন তিনজনেই। দুর্গাপুজোয় মণ্ডপে মণ্ডপে তাঁদের গাওয়া না চলা মানে তো আনন্দটাই মাটি হয়ে যাওয়া। এই বছর এই তিন শিল্পীকে স্মরণ করবে ভবানীপুর দুর্গোৎসব সমিতি (Bhawanipur Durgotsab Samity)। ৫৭তম বর্ষে এমনই অভিনব নিবেদন তাঁদের।
পুজো কমিটির সম্পাদক শুভঙ্কর রায়চৌধুরী এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ‘মণ্ডপ জুড়ে লতা, সন্ধ্যা ও বাপিদার উপস্থিতি অনুভব করা যাবে। শোনা যাবে তাঁদের গান, দেখা যাবে গানের বাইরে তাঁরা কীভাবে জীবনযাপন করতেন, কী ছিল তাঁদের ভালবাসা’। জানা গিয়েছে, মণ্ডপে তিন নক্ষত্রের আবক্ষ মূর্তিও বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে ভবানীপুর দুর্গোৎসব সমিতির।
গানের স্বর্ণযুগ বাঙালিকে উপহার দিয়েছিলেন এই তিন শিল্পী, সেই ভাবনা থেকেই এবার ভবানীপুর দুর্গোৎসব সমিতি থিম- ‘দ্য গোল্ডেন মিউজিক্যাল এরা’। টালিগঞ্জের আর্ট ডিরেক্টরদের একটা দল এই ভাবনা ফুটিয়ে তুলতে চলেছেন। এই থিমের উপর ভিত্তি করে একটি গান বাঁধার পরিকল্পনাও রয়েছে, যা তৈরি হবে তিন শিল্পীর গানের কথার সংযোগে। কুমার শানু বা আশা ভোঁসলের মতো কোনও কিংবদন্তিকে দিয়ে সেই গান রেকর্ড করার ইচ্ছা রয়েছে পুজো কমিটির।
সূত্রের খবর, উৎসবের চারটে দিন সুরেলা সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজনও করবে পুজো কমিটি। এবারের পুজোর উদ্বোধন হবে কার হাত ধরে? সেই নিয়ে এখনই মুখ খুলতে না-রাজ শুভঙ্করবাবু। তিনি জানাচ্ছেন, ‘সবটাই ক্রমশ প্রকাশ্য’।