বৃহস্পতিবার ৮০ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। পাম এভিনিউয়ের বাড়ি থেকে পিস হেভেনে রাখা হয়েছিল দেহ। শুক্রবার সকালে পিস ওয়ার্ল্ড থেকে শববাহী গাড়ি প্রথমে গিয়েছিলেন বিধানসভায়। সকাল ১১টা নাগাদ বিধানসভায় পৌঁছছিলেন বাম জমানার শেষ মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক, সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানান তাঁকে শেষ সম্মান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে গান স্যালুট দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলেও, তা ফিরিয়ে দেয় আলিমুদ্দিন। বর্তমান সরকারের কোনও অতিরিক্ত সুবিধেই নেওয়া হয়নি।
ইতিমধ্যেই বুদ্ধদেবের মৃত্যুতে মুখ খুলেছেন বহু তারক। একসময় এই বামনেতাকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করেছিলেন যারা, তাঁদের দিকে ছুঁড়ে দিয়েছেন ঘৃণা। একই কথা শোনা গেল শ্রীলেখা মিত্রের কথাতেও। মনে চেপে রাখা যন্ত্রণাই যেন ক্ষোভ হয়ে ফেটে পড়ল।
আরও পড়ুন: খুব ভালো ক্রিকেট খেলতেন! কলেজে কেমন ছিলেন বুদ্ধবাবু, খোলসা করলেন বন্ধু-প্রতিবেশীরা
‘বুদ্ধদেববাবু তো সেই ৮০০ স্কোয়ার ফুটের বাড়িতেই থাকতেন। সরকারে থাকাকালীনও কোনও সুবিধা নেননি। একদল বুদ্ধিজীবী যারা ওঁর বিরুদ্ধে প্রচুর কথা বলেছিল, মোমবাতি মিছিল করেছিল, তারা এবার কী করবে? তাদেরকে যেন বা পশ্চিমবাংলার মানুষকে যেন বুদ্ধবাবু ক্ষমা না করেন। কারণ আমরা ওঁর মতো মানুষকে দুঃখ দিয়েছি, আঘাত দিয়েছি, পরিষ্কার রাজনৈতিক জীবনকে কালিমালিপ্ত করেছি। বুদ্ধবাবু যেন আমাদের ক্ষমা না করেন। অনেক কষ্ট নিয়ে উনি চলে গেলেন।’, বলতে শোনা গেল শ্রীলেখা মিত্রকে।
তিনি আরও বলেন, ‘আসতে আসতে তো মানুষের আদর্শ-সততা সব নষ্ট হতে যাচ্ছে, আরেকটা সৎ মানুষকে হারালাম। এভাবেই সব সৎ মানুষরা হারিয়ে যাবে আর ইয়েস ম্যানরা জুটবে, যারা এখনের সরকারের হ্যাঁ-তে হ্যাঁ মেলাবে, না-তে না মেলাবে।’
আরও পড়ুন: স্যাঁতস্যাঁতে ঘরে বুদ্ধদেবের সঙ্গী সারি সারি বই,রবি ঠাকুর! কেন ছাড়েননি এই বাড়ি
বৃহস্পতিবারই বুদ্ধদেব ভট্টচার্যকে নিয়ে শোকবার্তা শেয়ার করেন শ্রীলেখা মিত্র ফেসবুকে। পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ছবি শেয়ার করে শ্রীলেখা লিখলেন, ‘বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য… একটা যুগের অবসান হল। কমরেড লাল স্যালুট।’ এরপর গানের লাইন ব্যবহার করেন তিনি, ‘ও আলোর পথযাত্রী…’। আর সবশেষে লেখেন, ‘আপনি চলে গিয়ে বেঁচে গিয়েছেন’।