কালীপুজোর রাতে শব্দবাজির অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়েছেন এরাজ্যের বহু বাসিন্দা। অত্যাচার বন্ধ হয়নি পরদিন ভাসানের রাতেও। গ্রাম তো বটেই তিলোত্তমা কলকাতারও বহু বাসিন্দা শব্দদানবের বাড়বাড়ন্তে ক্ষুব্ধ। সোশ্য়াল মিডিয়ার পাতায় বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বহু অভিনেতা-অভিনেত্রী। যার মধ্যে রয়েছেন রূপাঞ্জন, শ্রীলেখারা।
কুকুরের লেজে বাজি ফাটানো, কিংবা শব্দবাজি দিয়ে কুকুর-বিড়ালদের উপর অত্যাচার যাতে না হয়, তা নিয়ে দীপাবলির আগেই সাবধান করেছিলেন শ্রীলেখা মিত্র। তবে এশহরে দুষ্টু লোকের অভাব নেই। কালীপুজোয় বাজির কারণেই মৃত্যু হয় বেশকিছু কুকুরের। সেই ছবি দেখেই ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত শ্রীলেখা। বাজির অত্যাচারে পোষ্যের মৃত্যু নিয়ে ফেসবুকের পাতায় ক্ষোভ উগরে দেন শ্রীপর্ণা নামে এক মহিলা। পোষ্যের সঙ্গে একাধিক ছবি দিয়ে তিনি লেখেন, ‘আমার বাড়ির বাচ্চাটা এই ২ দিন অনবরত বাজির আওয়াজে ভয় পেতে পেতে কাল স্ট্রোক করে (স্ট্রোক হয়), অনেক চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি। দয়া করে শব্দ বাজিটা ওদের থেকে দূরে গিয়ে ফাটাবেন। আর নিজের বাড়ির বাচ্চাকে সাবধানে রাখবেন। আপনাদের ২ মিনিট এর মজার জন্য বাচ্চাদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেবেন না। এত হাসিখুশি বাচ্চাটা শেষ হয়ে গেলো আমার।’
শ্রীপর্ণা নামে এই মহিলার পোস্ট থেকেই জানা যাচ্ছে, তাঁর পোষ্য কুকুরটির নাম ছিল চিকু। তাকে আদর করার পুরনো ছবির সঙ্গে স্ট্রেচারে শুয়ে থাকা চারপেয়ের ছবি ও কবরস্থ করার ছবিও পোস্ট করেছেন তিনি। আর সেই পোস্টটিই শেয়ার করে শ্রীলেখা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘আর কত মৃত্যু চাই?’
আরও পড়ুন-শাহরুখের জন্মদিনে সামনে এল ফৌজি-২র ট্রেলার, কে হচ্ছেন নতুন ‘অভিমন্যু রাই’?
এখানেই শেষ নয়, বাজির জন্য আরও দুটি কুকুরের মৃত্যুর ছবি পোস্ট করে শ্রীলেখা লেখেন, ‘প্রথম দুটো ছবি আমারে রিষা চ্যাটার্জি পাঠালো। আশাকরি খুব আনন্দ হবে দেখে কী করে আপনাদের আনন্দের কারণে এই বাচ্চাটার প্রাণ গেলো দেখে।’
শ্রীলেখা লেখেন, ‘এই গর্ভবতী কুকুরটাকে আমরা উদ্ধার করি। সে সন্ধ্যেবেলা থেকে প্রসব করতে শুরু করে এই পাপ (Pup-বাচ্চা কুকুর)টা বের হল হঠাৎ। বাইরে তখনও প্রচণ্ড বোম ফাটছে। মাটা হয়ত ওই আওয়াজেই আরও ভয় পেয়েছিল। পাপ (Pup-বাচ্চা কুকুর)টা বের হল, আর ২ সেকেন্ডের মধ্যে ওর মৃত্যু হল। বাইরে তখনও বাজি ফাটছে।'
শেষে শ্রীলেখা মৃত কুকুরদের উদ্দেশ্যে লেখেন, ‘তোরা কখনও ক্ষমা করিস না, মানুষ নাম এই সম্প্রদায়ের জীবদের। ওয়েস্টবেঙ্গল পুলিশ, কলকাতা পুলিশ আপনারা চাইলে এগুলো বন্ধ করতে পারতেন।’
এর আগে এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন শেয়ার করেছেন শ্রীলেখা, সেখানে শব্দবাজি ফাটানোয় এক অভিযুক্ত পুলিশকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘প্যালেস্তাইনে বোমা ফাটছে, সেখানে দূষণ হচ্ছে না?’ সেই প্রতিবেদন শেয়ার করে ক্ষুব্ধ শ্রীলেখার প্রশ্ন, ‘এগুলোকে কী করা উচিত?’