দিন কয়েক আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপি ও তৃণমূলের একাধিক তারকা প্রার্থীর ফোন নম্বর ফাঁস হওয়া নিয়ে হুলস্থুল কাণ্ড বেঁধেছিল। অভিযোগের আঙুল উঠেছিল বামদলের দিকে। এবার ফেসবুকে ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর ফাঁস হল বামসমর্থক শ্রীলেখা মিত্রর। শুধু ফোন নম্বর ফাঁসই নয়, অশালীন ভাষায় আক্রমণ করা হয় শ্রীলেখাকে। সেই পোস্ট নিজেই ফেসবুকের দেওয়ালে শেয়ার কর ট্রোলারকে উপযুক্ত শিক্ষা দেন শ্রীলেখা।
এই কুরুচিকর পোস্টে জনৈক লিখেছেন, 'ওঁনার রেট টা কী চলছে...একজনের সঙ্গে কতো? দুজনের সঙ্গে কতো?' পোস্টের শুরুতে লেখা, ‘ভাত চাই? শ্রীলেখা মাসিকে কল করুন’। এই ভাইরাল পোস্টের বিরুদ্ধে ঝাঁঝালো জবাব দেন শ্রীলেখা। ওই পোস্ট কর্তাকে ‘বোনপো’ বলে সম্বোধন করে শ্রীলেখা লেখেন- ভাত কেন, কোভিড সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যায় পড়লে তিনি সাধ্যমতো সাহায্য করতে রাজি। তবে তিনি সেই ব্যক্তিকে পালটা প্রশ্ন করেন, কোনও বিরোধী শিবিরের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে এমন অশালীন ভাষায় আক্রমণ করা হল। তিনি পরিষ্কার জানতে চান-‘তুমি তৃণমূল না বিজেপি? মানে বোঝার চেষ্টা করছি কার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এই ভাষায় আমার সম্পর্কে লিখলে’?
এখানেই থেকে থাকেননি শ্রীলেখা। তিনি কলকাতা পুলিশের সাইবার সেলে সেই নেটনাগরিক সম্পর্কে অভিযোগ জানান। সেই বিষয়টিও ফেসবুকে জানিয়েছেন শ্রীলেখা মিত্র।
সপ্তম দফার নির্বাচনের দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস করা হয়েছিল তারকা প্রার্থীদের ফোন নম্বর। মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের মতো পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে প্রথমবার ভোটের ময়দানে নামা তারকা প্রার্থী রাজ চক্রবর্তী, কাঞ্চন মল্লিক, জুন মাল্য, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সায়নী ঘোষ, কৌশানী মুখোপাধ্যায়, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, যশ দাশগুপ্তদের নম্বর ভাইরাল হয়। এই তালিকায় কোনও বাম নেতা বা প্রার্থীর নাম থাকায় সন্দেহ যায় সেই দলের দিকেই।
পোস্টে লেখা হল, ‘করোনায় ভয় কিসের? আপনার পাশে মানুষের কাজ করার জন্য প্রাণ আনচান করা নেতারা! মাস্ক, স্যানিটাইজার, রক্ত, অক্সিজেন, অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য এক্ষুনি ফোন করুন...’। দু’দলে ভাগ হয়ে যায় নেটমাধ্যম। কেউ প্রশ্ন করেন, ‘এ ভাবে ব্যক্তিগত ফোন নম্বর ফাঁস করে দিয়ে তাঁদের বিপদে ফেলা কি ঠিক’? কারও কটাক্ষ, ‘এঁরা তো মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলেন, তা হলে করোনা অতিমারির সময়ে মানুষ তাঁদের সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন, এতে অসুবিধা কোথায়’! উল্লেখযোগ্য, যাঁদের নম্বর প্রকাশ করা হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই বিজেপি এবং তৃণমূলের প্রার্থী। বাম বলের কারও নম্বর নেই বলে সন্দেহের চোখ সে দলের দিকেই যায়।
এই প্রসঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে শ্রীলেখা জানিয়েছিলেন- 'যারা মানুষের জন্য কাজ করবেন বলেছিলেন, এই পরিস্থিতিতে মানুষ তাঁদের চাইছেন। এবার তাঁরা ফোন অফ করে রাখলে কি করে হবে? তাঁরা তো শুধু এখন বিনোদন জগতের মানুষ নয়, এখন জনপ্রতিনিধি। আমি মানুষের জন্য কাজ করতে চাই এই ভাঁওতাবাজি মানুষ আর নিচ্ছে না। ওঁরা নিজেরাই নিজেদের সম্মান নষ্ট করছে'।