অভিযোগ তুলেছিলেন আগেই। এবার দক্ষিণী পরিচালক রণজিতের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন শ্রীলেখা মিত্র। ২০০৯ সালে পরিচালকের হাতে তিনি যে যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছিলেন সেটারই প্রতিবাদে তিনি এদিন এই কেস ফাইল করলেন।
কী ঘটেছে?
গত রবিবার, ২৫ অগস্ট রণজিৎ কেরল চলচ্চিত্র অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেন। তারপর দিনই অর্থাৎ ২৬ অগস্ট সোমবার শ্রীলেখা মিত্র লিখিত অভিযোগে দায়ের করলেন রণজিতের নামে। ২০০৯ সালে তাঁর সঙ্গে ঘটা যৌন নিগ্রহের অভিযোগ দায়ের করলেন এদিন, ১৫ বছর পর। জানা গিয়েছে সেই সময় তিনি কোচি গিয়েছিলেন দক্ষিণের এই জনপ্রিয় পরিচালকের পালেরি মানিক্যম ছবিতে কাজ করার জন্য। তখনই হোটেলের ঘরে তিনি যৌন নিগ্রহের শিকার হন।
মনোরমা নিউজের তরফে একটি রিপোর্টে জানানো হয়েছে ইমেল মারফত এদিন শ্রীলেখা মিত্র এই অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেই অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, ছবিটির শুটিংয়ের জন্য তিনি যখন কোচি পৌঁছন গিয়ে তখন তাঁর সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটে। কোচি পৌঁছিয়ে তিনি সকালে রণজিতের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর এবং মামুতির সঙ্গে কাজ করার জন্য উদগ্রীব হয়েছিলেন। কিন্তু সেদিন বিকেলেই অভিনেত্রীকে যখন প্রযোজক এবং ছবির অন্য কলাকুশলীদের সঙ্গে দেখা করানোর জন্য হোটেলে ডাকা হয় তখনই প্রথমে তাঁর চুরি নিয়ে খেলতে শুরু করেন রণজিৎ। এরপর ঘাড়ে হাত দেন, চুল সরাতে যান। তখনই কোনও মতে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন শ্রীলেখা। এবং পরবর্তীতে জানিয়ে দেন এই ছবিতে কাজ করবেন না তিনি। এই ঘটনার পর ভীষণ ভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বলেও জানান শ্রীলেখা। নিজের হোটেল রুমে ফিরে এসে সারা রাত দরজা জানালা বন্ধ করে, দরজার পিছনে আসবাব পত্র রেখে ভোর হওয়ার অপেক্ষা করছিলেন। যাতে তিনি নিজের শহরে ফিরে আসতে পারেন।
একই সঙ্গে জানান এই ঘটনার পর চিত্রনাট্যকার জোশি জোসেফ তাঁকে তাঁর ফেরার টিকিট পর্যন্ত দেননি।
প্রসঙ্গত হেমা কমিটির তরফে মালায়লাম ইন্ডাস্ট্রিতে চলা যৌন নিগ্রহ, হেনস্থার কথা ফাঁস হওয়ার পর নিজের সঙ্গে ঘটা এই ঘটনার বিরুদ্ধে মুখ খোলেন শ্রীলেখা। এশিয়ানেট নিউজকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে সবটা সবিস্তারে জানান।
আরও পড়ুন: 'এখন তো প্রার্থনা একটাই', বিয়ের পর প্রথম জন্মাষ্টমী, গোপালের কাছে কী চাইলেন কাঞ্চন-শ্রীময়ী?
রণজিতের পদত্যাগ
শ্রীলেখার অভিযোগের পরই কেরল চলচ্চিত্র অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন তিনি। রণজিৎ এদিন কেরল চলচ্চিত্র অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিতেই এটাকে অনেকেই সেই মহিলাদের লড়াইয়ের বড় জয় বলে মনে করছেন যাঁরা এই ইন্ডাস্ট্রিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে লড়াই করে চলেছেন। যদিও রণজিৎ এদিন জানিয়েছেন তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটা সাজানো। তাঁর কথায়, 'শ্রীলেখার সঙ্গে আমি চিত্রনাট্যকার শঙ্কর রামকৃষ্ণের সামনে কথা বলেছিলাম। দুজন সহকারীও ছিল।' প্রসঙ্গত রণজিতের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠার পরও সেই রাজ্যের কালচারাল অ্যাফেয়ার্সের মন্ত্রী সাজি চেরিয়ান পরিচালকের হয়েই সাওয়াল করেছেন। জানিয়েছেন কোনও অভিযোগের ভিত্তিতে দক্ষিণ ভারতের এমন গুণী শিল্পীর বিরুদ্ধে কোনও কেস ফাইল করা হবে না।