'২১-এর ২৪-এর নির্বাচনে লড়েও হারের মুখ দেখতে হয়েছে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে। তবুও লড়াইয়ের ময়দান ছাড়তে না-রাজ বামেদের এই যুবনেত্রী। আরজি করের নির্যাতিতা তরুণীর খুন ও ধর্ষণের দিন সন্ধ্যায় যেভাবে কলকাতা পুলিশের সামনে বুক চিতিয়ে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন মীনাক্ষী, সেই ছবিটা দেখেছে গোটা বাংলা। এরপরেও সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু মানুষ কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মীনাক্ষীকে। আরও পডুন-‘বিষয়টা মানতে পারছি না…’, পুজোর পরই বন্ধ হচ্ছে নিম ফুলের মধু? মুখ খুললেন রুবেল
দেবাংশু-মৌসুমীর তরজার পর এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় সরগরম আরও এক বাকযুদ্ধ ঘিরে। মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে ফেসবুকে পোস্ট করছেন পরিচালক শুভব্রত চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী মরিয়া চট্টোপাধ্যায়। তা দেখেই ফুঁসে উঠেছেন বামমনস্ক অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র।
দু-দিন আগে নিজের ফেসবুকের দেওয়লে মারিয়া লেখেন, ‘মাকু তোমাদের মিনু মাসি কোনদিনও মায়ের জায়গা নিতে পারবে না যতই মাসির দরদ বেশি হোক।মা মা-ই হয়। মা মহান।’ এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মা বলে প্রশংসা ভরান মারিয়া, মিনু মাসি বলে তিনি মীনাক্ষীকে বিদ্রুপ করেছেন তা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার নয়। এর প্রতিবাদেই গর্জে উঠেন শ্রীলেখা। তিনি লেখেন, 'ইনি জুনিয়র ডাক্তারদের মিথ্যাবাদী বলেছেন এবং মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে তুলনা করে মমতা ব্যানার্জিকে ‘মা’ এবং মীনাক্ষীকে ‘মীনু মাসি’ বলেছেন।
অন্যান্য সব পেশার মানুষের মতোই, যাঁরা গৃহপরিচারিকার কাজ করেন, আমরা তাঁদের শ্রদ্ধা করি, ইনি কিন্তু সেই শ্রদ্ধার জায়গা থেকে মীনাক্ষীকে ‘বাড়ির কাজের মাসি’ বলেন নি- এটা বাংলা ভাষা জানা একটি শিশুও বুঝতে পারছে!
জুনিয়র ডাক্তার, রাজ্যের আপামর আন্দোলন কর্মী এবং অবশ্যই রাজ্যের সমস্ত গৃহ পরিচারিকাদের মাননীয় মারিয়া চ্যাটার্জীর মত একজন মমতা অনুরাগীর দৃষ্টিভঙ্গি এবং বক্তব্য জানা প্রয়োজন।'
এই পোস্টের জবাব দিয়েছে মারিয়াও। তিনি জানান শ্রীলেখার পোস্ট দেখে তিনি আশাহত। তিনি লেখেন, 'পোস্টটা আমি করেছি আমার হাজব্যান্ড নয় আমরা দুজন দুই চিন্তা ধারার মানুষ। আমার পোস্ট শেয়ার করে আমার হাজব্যান্ডকে না ট্যাগালে ব্যাপারটা আমি স্পোর্টিংলি নিতাম যেটা এখন আর আমি নিচ্ছি না।
দ্বিতীয়তঃ আমি কোন কাজের মাসি বা গৃহ পরিচারিকাদের উল্লেখ করে বলিনি কিন্তু সিপিএমের কিছু মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কে চটি পিসি বলেন এবং তারা যাকে লিডার বলে মনে করছেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় তার নামটা আমি ছোট করে মিনু মাসি বলেছি। তাতেই এতকিছু দিনের পর দিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সিপিএমের মানুষজন নানান ভাবে ছোট অসম্মান করছেন। একজন মহিলা হিসেবে তার পাশে দাঁড়িয়েছি কেবল অপরপক্ষকে ভালোবেসে মজার ছলে মীনাক্ষী থেকে মিনু নাম দিয়েছি, ছোট করা কোনও কথা বলিনি কারণ এই শিক্ষা আমি পাইনি।'
মারিয়া সাফাই দিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের নিয়ে করা পোস্টের প্রসঙ্গে আরও বলেন, ‘জুনিয়র ডাক্তারদের সম্পর্কে করা মন্তব্যে আমি বলেছি আমরাও লাইভ স্ট্রিমিং চাই কারণ তারা আগের দিনের ঘাড় ধাক্কা দেওয়ার ব্যাপারটা উল্টোভাবে মিডিয়ার সামনে রিপ্রেজেন্ট করেছে। যেটা ঠিক নয়।’
বাম সমর্থকরা দিনের পর দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ব্যক্তিগত আক্রমণ করছেন, বলে অভিযোগ মারিয়ার। সব শেষে পরিচালক-পত্নী লেখেন- ‘আমি গৃহ পরিচারিকা দের, সেক্স ওয়ার্কারদের, তৃতীয় লিঙ্গের, মানুষদের শ্রদ্ধা করি ভালোবাসি সাধ্যমত পাশে দাঁড়াই তাদেরকে নিয়ে বলার কোন অধিকার আমার কেন কারোর নেই। কারণ তারা প্রত্যেকেই নিজে নিজে ক্ষেত্রে একজন যোদ্ধা’।