Abhisekh-Sreelekha: ‘দিদি’র সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙতেই অভিষেক কাজ হারান টলিউডে, জায়গা নেন ‘দাদা’, দাবি শ্রীলেখার!

ফের একবার নাম না করেই প্রসেনজিত্-ঋতুপর্ণার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন শ্রীলেখা মিত্র।

ফের বিস্ফোরক শ্রীলেখা

অভিষেক চট্টোপাধ্যায় অকালেই চলে গিয়েছেন। কিন্তু তাঁর মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছে এক বিতর্ক। ফের একবার টলিউডের নেপোটিজম বিতর্ককে উস্কে দিয়েছে এই মৃত্যু। অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর এবার কলম ধরলেন শ্রীলেখা মিত্র। আনন্দবাজার ডিজিট্যালের হয়ে লেখা এক কলমে শ্রীলেখা জানান, ‘টলিউড ইন্ডাস্ট্রি যে কথা চাপা রেখেছিল, মিঠুদা চলে যাওয়ার পরেই তা যেন তেড়েফুঁড়ে উঠল’।

শ্রীলেখা টেনে আনেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের এক বিস্ফোরক সাক্ষাত্কারের কথা। যেখানে নাম না করেই ইন্ডাস্ট্রির এক ‘দাদা’ ও ‘দিদি’র বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, কেমনভাবে চক্রান্ত করে অভিষেককে পরপর ২২টা ছবি থেকে সরিয়ে দিয়েছিল সেই দু'জনে। এদিন শ্রীলেখা লেখেন, ‘দাদা, ‘দিদি’র নামে কিছু বললেই অন্যান্যরা যেন কেমন অস্বস্তিতে পড়ে যেতেন। যেন, ওঁদের নিয়ে বলা বারণ। কিন্তু সেই মিঠুদার মৃত্যুর পরে তাঁর স্ত্রী সংযুক্তা (চট্টোপাধ্যায়) যে ভাবে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে সত্য কথা বললেন, তাতে তাঁর কষ্টটা অনুভব করতে পারলাম'।

অভিষেকের মৃত্যুর পর অর্থকষ্ট ভুগছে তাঁর পরিবার, প্রয়াত অভিনেতার পাশে দাঁড়িয়েছেন টলিউডের এক নামী অভিনেতা ও অভিনেত্রী। তাঁরা ১০ লক্ষ ও ৫ লক্ষ টাকা অর্থ সাহায্য করেছে, এমনই মিথ্যা রটনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান অভিষেক ঘরণী। সবটাই ভুয়ো ও ভিত্তিহীন জানান প্রকাশ্যে।

ইন্ডাস্ট্রির এই ‘দাদা’ ও ‘দিদি’র বিরুদ্ধে বছরখানেক আগেই মুখ খুলেছিলেন শ্রীলেখা। ব্যক্তিগতভাবে নায়িকার সাহসকে কুর্নিশ জানালে কেউই প্রকাশ্যে কিছু বলেনি, আক্ষেপ শ্রীলেখা মিত্রর। তিনি বলেন, ‘সেই প্রভাবশালী ‘দাদা’, ‘দিদি’র ভয়ে তাঁরা মুখ খোলেননি। আমি চলে যাওয়ার পরে হয়তো তাঁরাও মৌনতা ভাঙবেন।’

এদিন স্পষ্ট করে কোনও ‘দাদা’, ‘দিদি’র নাম নেননি শ্রীলেখা। তবে তাঁর ইশারা কাদের দিকে তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন। তিনি লেখেন, ইন্ডাস্ট্রির যে মানুষরা দাবি করেন, ‘আমরা ইন্ডাস্ট্রির মুখ, আমরাই বাংলা ছবিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি'। তাঁদের মনে রাখা উচিত প্রযোজকদের থেকে টাকা পেয়ে তাঁরা কাজ করেছেন, বিনা পয়সায় কিছু করেননি। এদিন আরও একটি বিস্ফোরণ ঘটান শ্রীলেখা। তিনি লেখেন, ‘দিদি’র সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার পরেই নাকি অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের হাত থেকে একের পর এক ছবি চলে যায়। কারণ তখন ‘দিদি’র জীবনে ‘দাদা’র প্রবেশ ঘটেছে। ‘দাদা’র সব সিনেমাতেও ‘দিদি’ই নায়িকা। শ্রীলেখা ক্ষোভ উগরে দিয়ে লেখেন, ‘দাদা’র সঙ্গে আমার একটি ছবি সুপারহিট হওয়ার পরেও ‘দাদা’ আর আমাকে কাজে ডাকেননি'।

অভিষেক ও সংযুক্তার সঙ্গে অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। 

এদিন কারুর নাম নেননি শ্রীলেখা। তবে প্রসেনজিত-ঋতুপর্ণার উদ্দেশেই তাঁর এই ‘খোঁচা’ তা স্পষ্ট। এটা সবার জানা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর বাংলা ইন্ডাস্ট্রির ‘ফেবারিটিজম’ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন অভিনেত্রী। তাঁর সরাসরি অভিযোগ ছিল, প্রসেনজিত-ঋতুপর্ণার প্রেম ছিল বলে ছবি থেকে বাদ পড়েছেন তিনি।

নিজের লেখনীতে শ্রীলেখা প্রসেনজিতের ফুড ডেলিভারি অ্যাপ মারফত খাবার বাড়িতে না পৌঁছানো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রীকে নালিশ জানানোর ঘটনা, বা ঋতুপর্ণার সাম্প্রতিক বিমান-বিতর্কের কথাও উল্লেখ করেন।

সবশেষে শ্রীলেখার বক্তব্য, তিনি ক্লান্ত বলেই প্রতিশোধ নিয়ে আগ্রহী নন তবে ‘কর্মফলের ক্লান্তি নেই’।