রবিবার প্রাক্তন ফসিলস ব্যান্ড মেম্বার চন্দ্রমৌলির হঠাৎ মৃত্যু এখনও মেনে নিতে পারছে না সংগীতপ্রেমীরা। ঠিক কেন, নিজেকে শেষ করে দেওয়ার কথা ভেবছেন তিনি, তা নিয়ে এখন জল্পনার অন্ত নেই। কারও দাবি, প্রবল অর্থকষ্টে ভুগছিলেন তিনি। কেউ বা আঙুল তুলেছেন রূপস ইসলামের দিকেই। এদিকে, এক ‘মামলার’ উল্লেখ করন চন্দ্রমৌলির আইনজীবী সোমবারে। সব নিয়ে জল্পনার কালো মেঘ। তবে অবসাদের কারণ বলে যাননি তিনি। সুইসাইড নোটে লিখে গিয়েছেন, কেউই তাঁর মৃত্যুর জন্য দায়ি নয়।
তারকাদের এই কাজ না পাওয়া, হতাশা নিয়ে বহুবার কথা বলেছেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা। তিনি নিজেও একসময় অনেক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন। সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর ফেসবুক লাইভে রীতিমতো কেঁদে ফেলেছিলেন তিনি। আর এবার নাম না করেই লিখলেন কিছু কথা। তবে তা যে চন্দ্রমৌলির মৃত্যুর প্রসঙ্গেই, তা বুঝতে কোনো সমস্যা হয় না।
শ্রীলেখা মিত্র লিখেছেন, ‘শিল্পী মরে গেলে তাঁর কদর হয়, আর সুইসাইড করলে তো কথাই নেই, কান্নার বন্যা বয়ে যায়। কিন্ত যেই কারণ তাকে সেই পথে ঠেলে দিয়েছে, বাধ্য করেছে, ভুলেও তা নিয়ে কোনো কথা বলা যাবে না।’
এদিকে সোমবার রূপম ইসলাম তাঁর ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘আমাদের যখনই কথা হতো সেটা হয় দর্শন বা শিল্প নিয়ে। আমিও চাই আমার কিছু জটিল গান গচ্ছিত রেখেছিলাম তোর জন্য। ‘আদমের সন্তান’, ‘আমি তোমায় ভালবাসি’র মতো গান। গত বছরেও আমাদের আলোচনা হয়েছিল কিছু গান নিয়ে, যা নিয়ে আগে কখনও কাজ হয়নি। আমি জানতাম ওগুলো একমাত্র তুই পারবি। কিন্তু তুই প্রত্যাখান করেছিলি। বলেছিলি নিজেকে গোছানোর জন্য একটু সময় দরকার। আমি ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করতে রাজিও ছিলাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে সেই অপেক্ষার কোনও অন্ত নেই, ঠিক যেমন তোর সুরেলা সফর।’
তাঁর সঙ্গে চন্দ্রামৌলির কথোপকথনের স্ক্রিনশটও শেয়ার করে নেন রূপম। আরও লেখেন, ‘আমি মৃতদেহের মুখে তোকে দেখবো না। তোকে চিনব না এ ভাবে। তোর পাঠানো সব ক’টা গানই শুনেছিলাম আমি। মনে হয়েছিলে ফের যেন তুই স্বক্ষেত্রে ফিরে আসছিস।’
প্রসঙ্গত, চন্দ্রমৌলির মৃত্যুর পর রূপসা জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে শারীরিক সমস্যার জেরেই রূপম ইসলামের ব্যান্ড ছেড়েছিলেন চন্দ্রমৌলি বিশ্বাস। বর্তমানে ‘গোলক’, ‘জম্বি কেজ কন্ট্রোল’-এর মতো ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বাংলা ব্যান্ডের অন্যতম সেরা বেসিস্ট। রবিবার বাড়িতে ছিলেন না মা-বাবা। সেই সময়ই… তাঁর ঝুলন্ত দেহ প্রথম দেখেন ‘গোলক’ ব্যান্ডের ভোকালস্ট মহুল চক্রবর্তী। তারপর তিনিই খবর দেন পুলিশে। প্রাথমিক রিপোর্টে, এটিকে আত্মহত্যা বলেই জানিয়েছে পুলিশ। রবিবার দুপুরে নিজের ফেসবুকের প্রোফাইল পিকচার বদলান চন্দ্রমৌলি। তখনও কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি এরকম কিছু ঘটে যেতে পারে!