১৪৪ বছর পর প্রয়াগরাজের ত্রিবেণী সঙ্গমে চলছে মহাকুম্ভ। লক্ষ লক্ষ মানুষ সেখানে ইতিমধ্যেই পুণ্যস্নান সেরেছেন। গিয়েছেন বহু তারকা, নেতা, মন্ত্রী, ব্যবসায়ীরাও। সম্প্রতি সেখানে গিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক, অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক এবং তাঁর স্ত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজ। কিন্তু এই মহাকুম্ভে স্নানের অভিজ্ঞতা কেমন তাঁদের?
আরও পড়ুন: 'বৈশাখী ভিলেন, তোমার ঘর ভেঙেছে', বলেছিলেন কল্যাণ! পাল্টি খেতেই রত্নার হুঁশিয়ারি, 'শেষ দেখে ছাড়ব'
মহাকুম্ভ নিয়ে কী জানালেন শ্রীময়ী?
এদিন সংবাদ প্রতিদিনকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে শ্রীময়ী জানান চূড়ান্ত অব্যবস্থা সেখানে। তাঁর কথায়, 'তারকাদের স্নানের ছবি ইন্টারনেটে দেখে ঝকঝকে ব্যবস্থা আছে ভেবে এলে ঠকতে হবে।' কাঞ্চন পত্নী এদিন আরও জানান, 'হুজুগে এসে দেখলাম একেবারে ফেঁসে গেছি। কাঞ্চন তো আসতে চায়নি। সব গঙ্গাই এক ওর কাছে। আমি জোর করলাম বলেই এসেছে। ত্রিবেণী সঙ্গমে ভিআইপি জোনেই স্নান করেছি। শান্তিতে শুধু স্নানটাই করতে পেরেছি। জায়গা পেয়েছি পোশাক বদলানোর জন্য। কিন্ত সেটা ছাড়া বাকি অবস্থা খুবই খারাপ। তবে সঙ্গমের পরিবেশ খুব সুন্দর।'
কিন্তু ঠিক কী অব্যবস্থা আছে? অভিনেত্রী জানিয়েছেন মহিলাদের জন্য কোনও শৌচালয়ের ব্যবস্থা নেই সেখানে। কেউ কেউ অজ্ঞান হয়ে পড়ে গিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, 'প্রাথমিক চিকিৎসা যে সেখানে হবে সেটার ব্যবস্থাও নেই। স্নান সেরে ফেরার পথে আমার চোখ ঝাপসা হয়ে হচ্ছিল। জল দিয়ে শান্তি পাই। ৭-৮ ঘণ্টা বাথরুমে যেতে পারিনি। পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। কী মারাত্মক যানজট। যে যার মতো পারছে গাড়ি চালাচ্ছে। এটা পুরোপুরি প্রশাসনের ব্যর্থতা।' এদিন এই কথা বলতেই তার বিরোধিতা করেছেন বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারি।
কী বলেছেন তরুণজ্যোতি?
এদিন তরুণজ্যোতি শ্রীময়ীর এই কথার স্ক্রিনশট নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, 'শ্রীময়ী চট্টরাজ ও কাঞ্চন মল্লিক, নিজেরা গিয়েছিলেন, স্নান করেছেন, হাসিমুখে ছবি তুলেছেন, আর এখন প্রহসন করছেন! শ্রীময়ী চট্টরাজ ও কাঞ্চন মল্লিককে কে বলেছিল মহাকুম্ভে যেতে? তাঁরা নিজেরাই স্বেচ্ছায় গিয়েছিলেন, গঙ্গাস্নান করেছেন, এমনকি হাসিমুখে ছবি তুলেছেন। কিন্তু এখন হঠাৎ করে প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন! এটা যে শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাগ থেকে বাঁচার জন্য একটা রাজনৈতিক নাটক, তা সহজেই বোঝা যায়। প্রয়াগরাজ কুম্ভ মেলায়— কয়েক হাজার শৌচাগার স্থাপন করা হয়েছে। নিয়মিত সেগুলো পরিষ্কার করার জন্য বিশাল কর্মী বাহিনী রয়েছে। গোটা ব্যবস্থাপনার জন্য প্রশাসন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে।' তিনি এদিন আরও বলেন, 'প্রয়াগরাজের মতো একটা ছোট শহরে পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যার প্রায় ছয়গুণ মানুষ ইতিমধ্যেই স্নান করেছেন, অথচ সমগ্র ব্যবস্থাপনা প্রশংসিত হয়েছে। এমনকি তৃণমূল সাংসদ রচনা ব্যানার্জি ও নেত্রী সুজাতা মণ্ডলও উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করেছেন। অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গের সামান্য সরকারি স্কুলে শৌচাগার পরিষ্কার রাখা হয় না, সুলভ শৌচাগারগুলোর অবস্থা শোচনীয়। সেই রাজ্যের প্রতিনিধিরা এখন কুম্ভের ব্যবস্থাপনা নিয়ে নালিশ করছেন! এটা কি দ্বিচারিতা নয়? শ্রীময়ী চট্টরাজ ও কাঞ্চন মল্লিক, আপনাদের নাটক সবাই বুঝতে পারছে।'