আজ ১২ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার ছিল জুনিয়র ডাক্তারদের স্বাস্থ্যভবন অভিযানের তৃতীয় দিন। পথে নেমে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তাঁদের আন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন রয়েছে আম-জনতার। বৃষ্টি থেকে চড়া রোদ, কিছুই দমাতে পারেনি তাঁদের। কেউ পৌঁছে দিয়েছেন খাবার, কেউ জল, কেউ দিয়েছেন ত্রিপল। প্রতিমূহূর্তে তাঁদের দিকে সাহায্য, সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সাধারণ মানুষ।
এসবের মাঝে সোশ্যাল মিডিয়ার হাত ধরে সামনে এসেছে এক সুন্দর, মন ছুঁয়ে যাওয়া মানবিক মুহূর্ত….। যেটি উঠে এসেছে স্পন্দন মজুমদার নামে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের এক জুনিয়ার ডাক্তারের ফেসবুকের পাতায়। যিনিও কিনা আন্দোলনে সামিল হয়েছেন। তাঁর সেই পোস্টটি নিজের ফেসবুকের পাতায় পোস্ট করেছেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। যেখানে দেখা যাচ্ছে, স্পন্দন মজুমদার নামে ওই জুনিয়ার ডাক্তারকে হাতপাখা করছেন এক বৃদ্ধ ব্যক্তি। তিনি প্রবীণ ব্যক্তির কাছ থেকে এভাবে সেবা নিতে যে অস্বস্তি বোধ করছেন তা তাঁর মুখের ভাষাতেই স্পষ্ট। মাঝে একবার স্পন্দনকে পাখাটা ওই ব্যক্তির কাছ থেকে চাইতেও দেখা যায়। তবে বৃদ্ধ ওই ব্যক্তি সন্তানসম বা নাতির বয়সী ওই জুনিয়ার ডাক্তারের হাতে হাতপাখা তুলে দিতে নারাজ। এদিকে স্পন্দন বাবুও বেজায় অপ্রস্তুত।
এই ভিডিয়োটি পোস্ট করে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তার স্পন্দন মজুমদার লেখেন, ‘আমি ওনার থেকে শুধু হাতপাখা চেয়েছিলাম, উনি নিজে এসে আমাদের হাওয়া করতে শুরু করলেন..। আমি বললাম যে আমি নিজে করে নিচ্ছি, উনি বললেন তোমারা হচ্ছো দ্বিতীয় ভগবান, তোমাদের জন্যে এটুকু করতে পারবো না! তোমারা শুধু লড়ে যাও, বিচার না পাওয়া অবধি লড়াই করতে থাকো..আমরা সবাই তোমাদের পাশে আছি...এভাবেই আপনারা পাশে থাকবেন দাদু, সুবিচার আসবেই, আসতেই হবে।’
স্পন্দন মজুনদারের ভিডিয়োটি পোস্ট করে পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘এই শহরের নাম কলকাতা, নামটা মনে রাখবেন।’
প্রসঙ্গ, RG কর কাণ্ড নিয়ে শুরু থেকেই আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। এমনকি তিনিও শুরু থেকে প্রতিবাদে পথে নেমেছেন। আরজি কর নিয়ে বারবারই নিজের ফেসবুকের পাতায় সরব হতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। পরিচালক সৃজিত শুরুতেই জানিয়েছিলেন, ‘আমার মা NRS-এর চিকিৎসক। আরজি করে মায়ের প্রচুর বন্ধু রয়েছে। আমার প্রচুর কাকু-কাকিমা আরজি কর থেকে পাস আউট। আমার এই পরিবেশেই বেড়ে ওঠা। তাই আমার কাছে ব্যাপারটা ব্যক্তিগত।’
সৃজিত আরও বলেছিলেন, ‘আমার মা দিনের পর দিন রাতের ডিউটি করেছে, সেমিনার রুমে ঘুমিয়েছে। সদ্যই ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আমার কথা হচ্ছিল। বর্তমানে তো পরিস্থিতি এমন জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে কোনও নিরাপত্তাই নেই! যদি একটা সার্বিক নিরাপত্তার জন্য বিল পাশ করা যায়, ভালো হয়। আগেও শুনেছি এমন অনেক নিয়ম হয়েছে। সেটা আবার শিথিল হয়ে গিয়েছে। এবার তা যাতে না হয়, নিরাপত্তা যাতে জোরদার হয় সেইদিকে নজর রাখতে হবে। এখন তো দুর্নীতির কথা উঠে আসছে। এটা বন্ধ করতে হবে। একটা জিনিসের মধ্যে আর আরজিকরের প্রতিবাদ সীমাবদ্ধ নেই।’