কিংবদন্তী পরিচালক মৃণাল সেনের মৃত্যুবার্ষিকীতে হল বড় ঘোষণা। সিনেমার পরদায় আসতে চলেছেন তিনি। এতদিন যেই মানুষটা ক্যামেরার পিছনে থেকে সিনেমার কাজ করে গিয়েছেন, এবার সেই মানুষটার জীবন বড় পর্দায় দেখার সুযোগ পাবেন সকলে। ছবি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন সৃজিত মুখোপাধ্যায় ও প্রযোজক ফিরদৌসুল হাসান। মৃণাল সেনের চরিত্রে অভিনয় করবেন বাংলাদেশের অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী।
চঞ্চল-জ্বরে আপাতত কাবু দুই বাংলাই। তাঁর কারাগার, হাওয়া নিয়ে মাতামাতি হয়েছে এখানেও। কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের সময়তেই তিনি জানিয়েছিলেন, সৃজিতের সঙ্গে কাজ করতে চলেছেন। তখন অবশ্য বিস্তারিত কোনও খবর সামনে আসেনি।
এর আগেও বায়োপিক বানিয়েছেন সৃজিত। সাবাশ মিঠু, ভাওয়াল রাজা-তে তাঁর কাজ পছন্দও করেছে সকলে। তবে মৃণালকে নিয়ে সিনেমা বানানো নিসন্দেহে একটা বড় চ্যালেঞ্জ তাঁর কাছে। এটিকে ওয়েব সিরিজ হিসেবে নিয়ে আসার কথাই প্রাথমিকভাবে ভেবেছিলেন তিনি। লকডাউনে তাই নিয়ে স্ক্রিপ্টও তৈরি করে ফেলেন। তবে তারপর সিদ্ধান্ত বদল, সিনেমা বানানোর কথাই নিশ্চিত করেন। ফলত বদলাতে হয়েছে স্ক্রিপ্টও। দৈর্ঘ্যেও ছোট করতে হয়েছে। মৃণালকে নিয়ে ছবি বানানোয় পাশে পেয়েছেন পরিচালক-পুত্র কুণাল সেনকেও। কুণালের তরফে এই ছবি বানানোর অনুমতিও মিলে গিয়েছে।
ভারতের চলচ্চিত্র জগতের সেরা পরিচালকদের তালিকায় নাম আসেন মৃণাল সেনের। জন্মেছিলেন ১৯২৩ সালের ১৪ মে। বাংলা, হিন্দি ও তেলেগুতে একাধিক কাজ করেছেন। পেয়েছেন ‘পদ্মভূষণ’, ‘দাদাসাহেব ফালকে’-র মতো পুরস্কার। ভুবন সোম, কলকাতা ৭১, পদাতিক, একদিন প্রতিদিন, খন্ডহর, জেনেসিসের মতো আরও অনেক অনবদ্য সৃষ্টি উপহার দিয়েছেন দর্শককে।
মৃণালের ব্যক্তিগত এবং পরিচালনার জীবনই বেশি থাকবে বায়োপিকে। ফোকাসে থাকবে ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৩ সময়কালে তাঁর বানানো কলকাতা ট্রিলজি। জানুয়ারি থেকেই শ্যুটিং শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। তবে আপাতত বাংলাদেশে রয়েছেন চঞ্চল। সদ্য পিতৃহারা হয়েছেন। সেখানে সব দায়িত্ব পালন করে এসে ছবির কাজে হাত দেবেন।
কেন মৃণাল সেনের চরিত্রে চঞ্চলকেই বাছলেন সৃজিত? এক বাংলা সংবাদমাধ্যমকে পরিচালক জানিয়েছেন, ‘এক তো দু’জনের মুখের অনেক মিল আছে। সঙ্গে মৃণালবাবুর মতোই চঞ্চলের চোখের দৃষ্টি অত্যন্ত ধারালো এবং সজাগ। মৃণালবাবুর রাজনীতি চেতনা, তাঁর যাপন এবং দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গেও চঞ্চলের মিল খুঁজে পেয়েছি। কাকতালীয় হতেই পারে। কিন্তু মিল আছে।’