অবশেষে পর্দায় আসতে চলেছে পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবি ‘সত্য়ি বলে সত্যি কিছু নেই।’ যে ছবি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সৃজিত নিজেই একবার পোস্ট করেছিলেন, ‘যা সত্যি, তাই ভ্রম!’ অর্থাৎ 'Truth…lies…illusion…'। 'এক রুকা হুয়া ফয়সলা' নাটক অবলম্বনে এই ছবিটি বানিয়েছেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। যেখানে রয়েছে টলিউডের প্রথম সারির ১২ জন অভিনেতা। শুরুতেই ছবির স্টারকাস্ট ঘোষণা করেই চমকে দিয়েছিলেন পরিচালক। অবশেষে সামনে এল ছবির ট্রেলার।
কী আছে ‘সত্য়ি বলে সত্যি কিছু নেই’-এর ট্রেলারে?
ট্রেলারের শুরুতেই দেখা গেল সমুদ্রের মাঝখানে চেয়ার নিয়ে বসেছেন সকলে। সেখানে কৌশিক সেনকে বলতে শোনা গেল, ‘আমাদের প্রত্যেকের মাথার ভিতরে অনেকগুলো কণ্ঠস্বর আছে। জীবনের প্রত্যেকটা ডিসিশন কোনওটা হয় খুব প্র্যাগম্যাটিক (বাস্তববাদী) কোনওটা ইমোশনাল, কোনওটা প্রেজুডিস (কুসংস্কার), কোনওটা নিউট্রাল…’। এরপরই পরমব্রত বললেন, ‘কিন্তু ক্লিনিক্যাল হতে হবে, ভার্ডিক্ট (রায়) দেওয়ার সময়।’ এদিকে এই সব কথাবর্তার মাঝেই উঠে এল নানান দৃশ্য, বেশকিছু ঘটনা, উত্তেজনা। দেখা মিলল বিভিন্ন চরিত্রের।
অনন্যাকে বলতে শো গেল, ‘এটা কলকাতা বলেই সম্ভব’। আরও একজন উত্তেজিত হয়ে বললেন, ‘ছেলে নিয়ে একদম জ্ঞান দিতে আসবেন না, ১৮-৮০…। সৌরসেনী বললেন, ‘তাঁদের মধ্যে সবসময় একটা পশু থাকে।’ আবার রাস্তায় একটা উত্তেজনা পূর্ণ দৃশ্যের পর ঋত্বিক বললেন, ‘এদের না মাথায় চড়াবেন না, একটা বেইমানের জাত।’ রাহুল তখন বললেন, ‘আপনি বোধহয় জানেন না, আমিও ওই এক জাতের।’ এরপর আবারও ফিরে এল সেই সমুদ্রের মাঝে বসা সেই আলোচনা চক্রের দৃশ্য। সেখানেই চরিত্রগুলির মধ্যে কথা কাটাকাটি, তর্ক-ঝগড়া সবই হল। বহু তর্কের পর এবার যখন ভার্ডিক্টের সময় তখন পরমব্রত রেগে গিয়ে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়কে বললেন, ‘খুব ভালো লাগে না বিছানায় শুয়ে শুয়ে ফ্যান্টাসাইজ করতে…। তাকে যখন ঝোলানো হয় ফাঁসিতে, তখন ছেলেটির দুচি পা ছটফট ছটফট করতে থাকে, তার হিসি পটি হয়ে যায়….।’ এরপরই উত্তেজিত কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় উঠে এসে পরমের গলা টিপে বললেন, ‘আমি খুন করে দেব তোকে… ছেলে।’ সবশেষে পরমব্রত বললেন, ‘আসলে সত্য়িকথা জিনিসটা উভলিঙ্গ তো, তাই ওর পুং হরমোনগুলো খুব ছটফট করতে আরম্ভ করেছে।’
আরও পড়ুন-আমিরের সঙ্গে ডিভোর্সের ৩ বছর পার, এই প্রথম 'প্রাক্তন' শাশুড়িমাকে নিয়ে মুখ খুললেন কিরণ রাও
তবে কোন চরিত্র, ঠিক কোন প্রেক্ষিতে কথাগুলি বলেছেন, তা ট্রেলারে ঠিক স্পষ্ট নয়, সেখানে অনেকটাই ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে এটুকু বেশ বোঝা গেল। সমাজের নানান বিষয়, ভাবনা, অপরাধ, ঠিক-ভুল নিয়েই বসেছিল ছবির বিভিন্ন চরিত্রদের এই আলোচনা চক্র, বিচার সভা। যার রায়দান হবে ২৩ জানুয়ারি। অর্থাৎ ছবি মুক্তির দিনই পুরো বিষয়টি স্পষ্ট হবে। তবে ট্রেলার দেখে মনে হল খানিকটা নাটকের আদলেই তৈরি হয়েছে এই ছবি। প্রযোজনা সংস্থা SVF-এর তরফে ট্রেলারটি পোস্ট করে লেখা হয়েছে ‘সত্যি-মিথ্যের এই সূক্ষ্ম তফাতে, সত্যি বলে সত্যি কিছু নেই!’
প্রসঙ্গত, এই ছবিতে মোট মোট ১৪ অভিনেতাকে নিয়ে ময়দানে নেমেছে সৃজিত। এখানে রয়েছেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, ঋত্বিক চক্রবর্তী, ফাল্গুনী চট্টোপাধ্যায়, কৌশিক সেন, অনন্যা চট্টোপাধ্যায়, অনির্বাণ চক্রবর্তী, কাঞ্চন মল্লিক, রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায় সৌরসেনী মৈত্র, অর্জুন চক্রবর্তী, ও সুহোত্র মুখোপাধ্যায়, কৌশিক কর এবং নুর ইসলাম ।
ট্রেলারে একটা বিষয় স্পষ্ট ছবিটা নেহাতই সোজা-সরল নয়। এখানে উঠে আসবে সমাজের ভিন্ন প্রেক্ষাপট, রয়েছে আর্থিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও যৌনতার গন্ধও। ছবির পরতে পরতে রয়েছে রহস্য।