মুম্বইয়ের বান্দ্রার সবচেয়ে অভিজাত এলাকায় মাথাউঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে মায়ানগরীর অন্যতম আকর্ষন ‘মন্নত’। বলা হয়, মুম্বই দর্শন অসম্পূর্ণ থাকে মন্নতের গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে একটা ছবি না তুললে! আরব সাগরমুখী এই ছয় তলা বাংলো কোনও রাজপ্রসাদের চেয়ে কম নয়। রূপকথার নায়কের স্বপ্নের রাজমহলটি আধুনিকতা আর ঐতিহ্যের এক অদ্ভূত মিশেলে তৈরি।
মন্নতের ভিতরে ঢুঁ মারতে কার না মন চায়? সবার প্রিয় কিং খানের সেই সাম্রাজ্যের সেই ঝলক দেখা কি চাড্ডিখানি কথা? মোটেই নয়! তবে রাজা-রানি মাঝেমধ্যেই নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে মন্নতের অন্দরের ছবি পোস্ট করে থাকেন। শাহরুখ-পত্নী গৌরী নিজে একজন অন্দরসজ্জা শিল্পী। তাই বাদশার কাছ থেকে উপহার হিসাবে পাওয়া এই ‘তাজমহল’কে নিজের মনের মতো করে সাজিয়েছেন গৌরী।
২৭,০০০ স্কোয়ার মিটার জায়গা জুড়ে অবস্থিত মন্নত। এর ভিতরে রয়েছে জিম, সুইমিং পুল, বিশাল বাগান, একাধিক কামরা,জিমখানা, শাহরুখের অফিস, লাইব্রেরি, এমনকী আস্ত সিনেমাহল। আরব সাগরের তীরে অবস্থিত মুম্বইয়ের সবচেয়ে সুন্দর প্রাসাদ বলে গন্য করা হয় মন্নতকে। শাহরুখের ট্রফি আর অ্যাওয়ার্ড রাখার জন্যই মন্নতে রয়েছে একটা আলাদা কামরা। ৪২ জন আরাম করে বসে সিনেমা দেখবে-এত বড় হোম থিয়েটার আর কোথায় পাবেন মন্নত ছাড়া? সেই থিয়েটারের দেওয়াল সাজানো ক্লাসিক হিন্দি ছবির পোস্টার দিকে,দেখলেন মন জুড়িয়ে যায়।
আদ্যোপান্ত সিনেমাপ্রেমী মানুষ শাহরুখের বাড়িতে প্রবেশের সময়ই ‘শোলে’,'রাম অউর শ্যাম', ‘মুঘল-এ-আজম’-এর পোস্টার। চার্লি চ্যাপলিনের লাঠিও দেখতে পাবেন শাহরুখের মন্নতে।
কিং খানের সবচেয়ে দামী অ্যাসেট মন্নত। প্রথম দেখাতেই গৌরী প্রেমে পরে গিয়েছিলেন মন্নতের। ব্যাস,মনের মানুষের মন রাখতেই চটপট ১৩ কোটি টাকা দিয়ে এটি কিনে ফেললেন শাহরুখ। আজকের দিনে মন্নতের বাজার দর ২০০ কোটি টাকা। মুম্বইয়ের সবচেয়ে সুন্দর প্রাসাদ বলে গন্য করা হয় মন্নতকে। নারিমান ডুবাসের কাছ থেকে ১৯৯৫ সালে এই বাংলোটি কেনেন শাহরুখ। সেই সময় মন্নতের নাম ছিল ভিলা ভিয়েনা।
গৌরীর কথায় তাঁর তিন সন্তানই মন্নত সাজাতে সাহায্য করেছে তাঁকে। প্রত্যেকের স্টাইল আর ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী মন্নতকে সাজিয়েছেন গৌরী। তাঁর কথায়, ‘এই বাড়ির কোনও বাঁধা ধরা নিয়ম নেই। আমার বাড়িতে হোমওয়ার্ক করা বা খাওয়ারও কোনও সময় নেই। কিন্তু আমার সন্তানরা স্কুল থেকে ফিরলে সবসময় আমাকে বাড়িতে পারে। ওদের পাশে থাকাটা খুব জরুরি।’
প্রসঙ্গত, বাংলোটি কেনার পরের ৪ বছর সম্ভবত আইনি জটিলতার কারণে নাম পাল্টাতে পারেননি শাহরুখ। শেষপর্যন্ত ২০০৫ সালে কাগজপত্রে সইসাবুদ করে পাকাপাকিভাবে 'ভিলা ভিয়েনা'-র নাম বদলে হয় 'মন্নত'।