আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় রাত জমায়েতের ডাক দিয়েছেন বাংলার নানা স্তরের মহিলারা। তাতে যেমন রয়েছেন তারকারা, তেমনি চাকরিরতা বা স্কুল পড়ুয়া মেয়েরা, গৃহবধূরা। সকলেই চান, এই ঘটনার কঠোর থেকে কঠোরতর শান্তি।
বুধবার রাতে বাংলার নানা প্রান্তে প্রতিবাদে সামিল হওয়া মহিলাদের ভিতরে জ্বলতে থাকা আগুন আরও বাড়িয়ে দিলেন অভিনেতা সুদীপ মুখোপাধ্যায়। তাঁর একটি ভিডিয়োবার্তা শেয়ার করে নিলেন পৃথা। অভিনেতার বলা প্রতিটা কথা যেন অগ্নিস্ফূলিঙ্গ।
সুদীপকে বলতে শোনা গেল, ‘আরজি করে যে ঘটনা ঘটেছে সেটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে আমি মনে করি না। শুধুমাত্র একজন মহিলা ডাক্তারের নিরাপত্তা কেন। কেন প্রতিটা শহরবাসীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত থাককবে না। দিনের পর দিন, বছরের পর বছর ধরে, একটার পর একটা ঘটনা ঘটে গেছে। একটা মিছিল হয়েছে। মোমবাতি নিয়ে মানুষ হেঁটেছে। তারপর দু দিন বাদে সবাই সেটা ভুলে গেছে। বিচারের বাণী নিভৃতে পড়ে পড়ে কেঁদেছে। বিচার আসেনি।
আরও পড়ুন: ‘শর্টস পরে হাঁটব, আমিও কি তাহলে ধর্ষণযোগ্য’! আরজি কর-কাণ্ডে ফুঁসে উঠলেন শ্রীলেখা
শুধুমাত্র মহিলারা কেন, হোস্টেলে র্যাগিং হচ্ছে, ছাত্র র্যাগিং সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করছে। যৌন নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করছে। এমন মার মারা হচ্ছে, সে মারা যাচ্ছে। অথচ বিচার হচ্ছে না। আমাদের সামাজিক সুরক্ষা কোথায়?
আজকে যে আন্দোলন, আজকে যে রাতে রাস্তায় নামছে সবাই, যে রাতের শহর যেন মহিলাদের জন্য নিরাপদ থাকে, তা কেন? সকলের জন্য নিরাপদ থাকবে। রাত কেন দিনেও থাকবে। এটা তো আমাদের সামাজিক অধিকারের মধ্যে পড়ে, সামাজিক নিরাপত্তা।
আজকের এই রাতের আন্দোলন, রাতে মাঠা নামা যেন একদিনের পিকনিক না হয়ে দাঁড়ায়। এই আন্দোলন তখন সার্থক হবে যখন বিচার পাওয়া অবধি দিনের পর দিন আন্দোলন চলবে। সেই আগুনটা যেন মনের মধ্যে থাকে। এ দেশ আমার, এ রাজ্য আমার, এ শহর আমার। এই শহরের প্রতিটি মানুষ, পুরুষ ও নারী আমার বন্ধু। এটা আমাদের মনে রাখতে হবে। বিচারের বাণী যেন নিভৃতে না কাঁদে। বিচার চাই, সুবিচার চাই। আমাদের ভিতরের মানুষ জাগুক, মনুষত্ব জাগুক। চিৎকার করে স্লোগান উঠুক, গর্জন উঠুক, আকাশ বাতাস কেঁপে যাক। এমন আন্দোলন চাই। আন্দোলন চাই আমাদের সম্পূর্ণ সুরক্ষার।’
সুদীপের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত নেট-নাগরিকরা। বর্তমানে প্রয়াত ডাক্তার মহিলার মৃত্যুর তদন্ত করছে সিবিআই। সকলের আশা, জলদি মিলবে বিচার।