৯ সেপ্টেম্বর, সোমবার সুপ্রিম কোর্টে ছিল আরজি কর মামলার শুনানি। এদিন বিচারপতি জুনিয়র চিকিৎসকদের ১০ সেপ্টেম্বর বিকেলের মধ্যে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন তাঁরা। সমর্থন করে কী বললেন সুদীপ্তা?
আরও পড়ুন: পরপর ফ্লপ, তবুও হাতে ৯টা ছবি! আগামীতে কী কী দেখতে পাবেন অক্ষয়ের ফ্যানরা?
কী ঘটেছে?
সুপ্রিম কোর্টের শুনানির পরই আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফে এদিন একটি সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেখানে তাঁরা স্পষ্ট জানান সুপ্রিম কোর্টে সরকার এবং কপিল সিব্বল 'মিথ্যে' বলছেন। তাঁদের আন্দোলনের জন্য মোটেই নাকি স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে না। কেবল এটুকুই বলে ক্ষান্ত হননি তাঁরা। একই সঙ্গে তুলে ধরেছেন পরিসংখ্যান।
এছাড়া এদিন চিকিৎসকরা রাজ্য সরকারের কাছে বেশ কিছু দাবি রেখেছে, জানিয়েছে সেই দাবি নিয়ে তাঁরা বেলা ১২টা নাগাদ স্বাস্থ্য ভবন যাবেন। যদি বিকেল ৫টার মধ্যে সরকার সেই দাবি মানে তাহলে তাঁরা কাজে পুনর্যোগদানের কথা ভাববেন। নইলে বুঝবেন রাজ্য সরকার চান না এই অচলাবস্থা কাটুক। একই সঙ্গে তাঁরা এদিন বলেন মুখ্যমন্ত্রী সম্প্রতি তাঁর বক্তব্যে নির্যাতিতার বাবা মা যে মিথ্যেবাদী বলেছেন সেটা উইথড্র করতে হবে। একই সঙ্গে তাঁদের আন্দোলনকে যে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে সেটাও বন্ধ করতে হবে।
কী বলেছেন সুদীপ্তা?
সুদীপ্তা চক্রবর্তী এদিন জুনিয়র চিকিৎসকদের হয়ে মুখ খুলেছেন। তুলে ধরেছেন এক পরিসংখ্যান। সেখানে তিনি বুঝিয়েছেন কেন তাঁদের এই আন্দোলনে চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে না। সুদীপ্তা লেখেন, 'রাজ্যের মিথ্যা খেল সুপ্রিম কোর্ট? ভাবনাটা ঢুকে গেল ডাক্তারদের ধর্মঘটের ফলে কাদের অসুবিধা হচ্ছে! যারা বলছে তাদের? নাকি সত্যি সত্যি গরিব মানুষদের? শুরু করলাম ঘাঁটাঘাঁটি। দেখা যাক একটু- প্রথমেই জানা দরকার জুনিয়র ডাক্তার, ইন্টার্ন, হাউস স্টাফ, পিজিটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ছাড়া অন্য কোথাও নেই। বাংলায় নথিভুক্ত সরকারি বেসরকারি হাসপাতালের সংখ্যা ৩০০০। বেসরকারি হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তার নেই। সুতরাং বাদ। বাংলায় মোট হেল্থ সেন্টার যত রকম আছে তার সংখ্যা ১২৫৭ টা। সেখানে জুনিয়র ডাক্তার নেই। ধর্মঘট নেই। চলছে। জেনারেল হাসপাতাল ও সাব-ডিভিশনাল হাসপাতালের সংখ্যা ৭০ টা। সেখানে জুনিয়র ডাক্তারদের জুজু নেই। চলছে সব। রেল, ইএসআই সেন্ট্রাল হাসপাতালের ৬০টা এই বাংলায়। সেখানে জু.ডা. নেই। ধর্মঘট নেই। চলছে সব। পৌরসভা ও কর্পোরেশন হাসপাতালগুলোতে জুনিয়র ডাক্তার নেই। ধর্মঘট নেই। জুনিয়র ডাক্তার আছে এমন হাসপাতালের সংখ্যা মাত্র ১৪-১৬টি। মোট হাসপাতালের মাত্র ০.৫২ শতাংশ। যেখানে জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্মঘট চলছে। যদিও সেখানে সিনিয়র ডাক্তার, অধ্যাপক ডাক্তাররা সবাই পেশেন্ট দেখছেন, ওপিডি চালাচ্ছেন ২৪×৭ পদ্ধতিতে। জুনিয়র ডাক্তাররা প্রতিবাদে সামিল থাকলেও তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে সাহায্য করে আসছেন। জুনিয়র ডাক্তারদের সংখ্যা মোট ডাক্তারের সংখ্যার মাত্র ০.৫ শতাংশ। এখন এই মোট ডাক্তারের ০.৫ শতাংশ জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্মঘটে যদি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে বা গরিব পেশেন্টের ধপাধপ প্রাণ যায় তা'হলে চার খান কথা আছে- এই জুনিয়ার ডাক্তার নামক কলুর বলদের উপর ছিল পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জোয়াল- এটা মানতে হয়! জেলায় জেলায় যে সব মেডিকেল কলেজ হল ঢাকঢোল বাজিয়ে সেখানে এখনও ফার্স্ট ব্যাচ বের হয়নি, আর তার ইনফ্রাস্ট্রাকচার কহতব্য নয়। ইন্টার্ন তো দূর অস্ত। সরকারি হাসপাতাল মানে দুর্নীতির প্রসূতি সদন তৈরি হয়েছে যা খুল্লম খুল্লাম বে-আব্রু আজ। সরকারী দোকান থেকে বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে যে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে তার ডোজ ও গুণমান ঠিক আছে তো? দাদা কেন বলুন তো জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্মঘটে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে! একটু বুঝিয়ে দেবেন?'
তবে কেবল এটুকুই নয় তিনি এদিন একটি ভিডিয়ো শেয়ার করেন যেখানে এক রোগীর আত্মীয়কে দেখা যাচ্ছে যিনি দাবি করেছেন এই অবস্থাতেও তাঁরা সঠিক চিকিৎসা পেয়েছেন।