কোটা-সংস্কার আন্দোলনের পর বাংলাদেশে এখন পালাবদলে পরিস্থিতি। চারিদিক উত্তপ্ত, অশান্ত। এমন বিক্ষুব্ধ পরিস্থিতিতে রাজশাহী শহরে পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের পাকা বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, এবার কোপ পড়ল সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্মভিটেতে।
মাদারীপুরের জেলার ডাসার উপজেলায় সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটে ভাঙচুর করে বিএনপির স্থানীয় এক নেতা চালের গুদাম বানিয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে সেদেশের প্রথমসারির সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো-তে। ১৯৩৪ সালে যে বাড়িতে জন্মছিলেন লেখক, যেখানে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বই ভর্তি আলমারি, ছবি, স্মারক, সে সব তছনছ করে চাল মজুত করা হয়েছে। অভিযুক্ত ওই বিএনপি নেতার নাম সোহেল হাওলাদার। জানা গিয়েছে অভিযুক্ত বিএনপির কালকিনি উপজেলা কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
ডাসার উপজেলার কাজীবাকাই ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া মৌজায় প্রয়াত সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সাত একর ১৫ শতক পৈতৃক জমি রয়েছে। সুনীল গঙ্গোপাধ্য়ায়ের স্মৃতিবিজড়িত পাঠাগার ছিল ওই বাড়িতে। যা বাংলাদেশ সরকার অধিগ্রহণ না করলেও ওই বাড়িটি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের স্মৃতিমাখা তা উল্লেখ করে প্রশাসনের তরফে টাঙানো হয়েছিল সাইন বোর্ড। সে-সব গায়েব করে বাড়িটি দখলে নেন সোহেল।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটা দেখশোনার দায়িত্বে থাকা এক স্থানীয় পরিচয় গোপন রেখে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, ‘সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর থেকেই সোহেল হাওলাদার লোকজন নিয়ে লেখকের জমি তাঁর নিজের বলে দাবি করেন। আওয়ামী লীগের কয়েকজন কর্মী–সমর্থক তাঁর সমালোচনা করলে তাঁদের বাড়িঘরে হামলা চালান সোহেল। এখন ভয়ে কেউ কথা বলছেন না।'
এই প্রসঙ্গে, মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশীদ খান জানিয়েছেন,'সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটার তালা ভেঙে এক ব্যক্তি দখলে নেওয়ার খবর আমরা পেয়েছি। যাঁরা এই কাজের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট ইউএনও ও এসি ল্যান্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।'
৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর থেকেই সেদেশে অরাজক পরিস্থিতি। তারপর থেকে দেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের নানান ঘটনা সামনে এসেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনের উপরেই আপতত বাংলাদেশকে স্থিতিশীল করার দায়িত্ব রয়েছে।