সুশান্ত সিং রাজপুত কখনই রাজপুত হতে পারেন না। কারণ রাজপুতরা মহারানা প্রতাপের বংশধর, তাঁরা আত্মহত্যা করতে পারে না। এমনই বিস্ফোরক দাবি আরজেডি বিধায়ক অরুণ যাদবের। যা ঘিরে শুরু হল নতুন বিতর্ক।
জেডিইউ এবং বিজেপির তরফে আরজেডি বিধায়কের এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। এবং বিহারের জনতা এবং সুশান্তের অনুরাগীদের কাছে বর্ণবাদী এই মন্তব্যের জেরে অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে।
নিজের বিধানসভা এলাকা সাহারসাতে একটি নতুন রাস্তার উদ্বোধনে দিয়ে বুধবার আরজেডি বিধায়ক বলেন, ‘আমি বলতে চাই সুশান্ত রাজপুত নয়। কিছু মনে করবেন না তবে রাজপুত,যাঁরা মহারানা প্রতাপের উত্তরাধিকারী তারা কোনওদিন গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে না’।
তিনি যোগ করেন, ‘আমি মর্মাহত… সুশান্ত সিং রাজপুতের কখনই আত্মহত্যা করা উচিত হয়নি। রাজপুত হলে ওর লড়াই করা উচিত ছিল, রাজপুতরা আগে শক্রুকে হত্যা করে তারপর মৃত্যুবরণ করে’।
এই বক্তব্যের আঁচ নিমেষেই ছড়িয়ে পড়ে বিহারের রাজনৈতিক মহলে। অক্টোবর-নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বিহার বিধানসভা ভোট, সুশান্তের মৃত্যু যে অযাচিতভাবেই এই নির্বাচনের একটা বড় ইস্যু হতে চলেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মহারাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন দল শিবসেনা বারবার অভিযোগ জানিয়েছে বিহার ভোটকে পাখির চোখ করেই বিজেপি সুশান্তের মৃত্যুর রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে বদ্ধ পরিকর। সেইখানেই তিনটি কেন্দ্রীয় সংস্থা দ্বারা সুশান্ত মামলার তদন্ত চালানো হচ্ছে।
এর চেয়ে অধিক নক্কারজনক এবং লজ্জাজনক কোনও বক্তব্য হতে পারে না যা আরজেডির বিধায়ক সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে করেছে। যে মামলা গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে। রাজ্যের মানুষ এবং সুশান্তের অনুরাগীদের কাছে অবিলম্বে ওই বিধায়কের ক্ষমা চাওয়া উচিত', সাফ জানান জেডিইউ মুখপাত্র রাজীব রঞ্জন প্রসাদ।
বিজেপির তরফে এই মন্তব্যের সমালোচনা করা হয়েছে। মুখপাত্র নিখিল আনন্দ বলেন, ‘এটা আরজেডি নেতাদের স্বভাবসিদ্ধ দোষ। তিনি বলেন, 'তেজস্বী যাদবের এই মামলায় নিজের অবস্থান স্পষ্ট করা উচিত। যে উনি কি নিজের দলের বিধায়কের এই ধরণের মন্তব্যের সমর্থন করেন?’ সময় এলে মানুষ এই প্রশ্নের উত্তর সুদে-আসলে বুঝিয়ে দেবে জানান বিজেপির মুখপাত্র।
সুশান্তের মৃত্যুর প্রায় ৪০ দিন পর গত ২৫ জুলাই পাটনার রাজীব নগরে প্রয়াত অভিনেতার বাবা কেকে সিং রিয়া চক্রবর্তী সহ মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে সুশান্তকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা দায়ের করেন। গত ৫ অগস্ট নীতিশ সরকারের সুপারিশে কেন্দ্র এই মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয়। এই সিদ্ধান্তে সুপ্রিম সিলমোহর পরে ১৯ অগস্ট। আপতত সিবিআই, ইডি, এবং এনসিবি সুশান্তের মৃত্যু সংক্রান্ত মামলার তদন্ত চালাচ্ছে।
মুম্বই পুলিশের তরফে শুরুতে দাবি করা হয়েছিল আত্মহত্যাই করেছেন সুশান্ত, তবে এই মামলায় ফাউল প্লে-র সম্ভাবনা এক্কেবারে উড়িয়ে দেয়নি সিবিআই। আত্মহত্যা নাকি খুন করা হয়েছে সুশান্তকে- সেই নিয়ে নিশ্চিত রিপোর্ট আগামী সপ্তাহে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেবে এইএমসের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ টিম।