সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর সিবিআই তদন্তে আর কোনও বাধা রইল না। বুধবার এই মামলার তদন্তভার কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে তুলে দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। বিচারপতি হৃষিকেশ রায়ের সিঙ্গল বেঞ্চের তরফে সবুজ সংকতে পাওয়ামাত্রই তত্পত সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দল। আর মাত্র কয়েকঘন্টার মধ্যেই দিল্লি থেকে মুম্বই পৌঁছাবেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিশেষ টিমের তিনজন সদস্য।
বৃহস্পতিবার মুম্বই পৌঁছাচ্ছে সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দলের সদস্যরা। রিপাবলিক মিডিয়ার দাবি, সুশান্তের মৃত্যুর তদন্তে দায়িত্ব থাকা সিবিআইয়ের দলের এসপি এবং আইও ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের মুম্বই ইউনিটের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তবে সিবিআইয়ের টিম এলে তাঁদের উপরও কী ঝুলছে কোয়ারেন্টাইনের খাঁড়া? একথা কারুই অজানা নয় যে পাটনা পুলিশের এসপি বিনয় তিওয়ারি এই মামলার তদন্তে মুম্বই পৌঁছানোর কয়েকঘন্টার মধ্যেই করোনার কারণ দেখিয়ে তাঁকে ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টাইন করা হয়। সেই নিয়ে বিহার ও মহারাষ্ট্র সরকারের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছিল তা কারুরই অজানা নয়। এমনকি এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে নালিশও করে বিহার পুলিশ। যদিও মুম্বই পুলিশ শুরু থেকেই দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলে জানিয়ে এসেছে কোয়ারেন্টাইনের বিষয়টি একান্তভাবেই বিএমসির সঙ্গে যুক্ত, সে ক্ষেত্রে তাঁদের কোনও হাত নেই।
বুধবার সন্ধ্যায় বিএমসির তরফে তড়িঘড়ি মিডিয়াকে জানানো হয়, যদি সিবিআইয়ের টিম সাতদিনের জন্য আসে তাহলে তাঁদের কোয়ারেন্টাইন থেকে স্বাভাবিক নিময়েই অব্যাহতি দেওয়া হবে, কিন্তু এর জন্য সাতদিনের মধ্যেকার কনফার্ম রিটার্ন টিকিট দেখাতে হবে সেই দলকে। যদিও ৭ দিনের বেশি থাকবার পরিকল্পনা থাকে তাহলে ই-মেল মারফত বৃহন্মুম্বই পুরনিগমের কাছে কোয়ারেন্টাইন থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন জানাতে হবে। আবেদন জানালে তা মঞ্জুর করা হবে, জানিয়েছেন, বিএমসির কমিশনার ইকবাল সিং চাহাল। যদিও এই ব্যাপারে সিবিআইয়ের তরফে এখনও কোনওরকম বক্তব্য রাখা হয়নি।
গত ৫ অগস্ট বিহার সরকারের সুপারিশ মেনে কেন্দ্র সরকার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছিল এই মামলার তদন্ত। যদিও এই নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল মহারাষ্ট্র সরকার ও রিয়া চক্রবর্তী। কিন্তু সব জল্পনায় জল ঢেলে আজ এই মৃত্যুর তদন্ত কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে দিয়ে দিল শীর্ষ আদালত। সুশান্তের মৃত্যুর সিবিআই তদন্তের নেতৃত্বে রয়েছেন গুজরাত ক্যারেডের আইপিএস অফিসার মনোজ শশীধর। বর্তমানে সিবিআইয়ের জয়েন্ট ডিরেক্টর তিনি। ২০১৬ সালের জুন মাসে এই তদন্তকারী দলটি গঠন করা হয় সেই সময়কার সিবিআই স্পেশ্যাল ডিরেক্টর রাকেশ অস্তানার অধীনে। তারপর থেকে গত চার বছর ধরে এই দুটি মামলার তদন্ত করেছে তাঁরা। চার বছর পর প্রথম কোনও মামলার তদন্তভার গেল অ্যান্টি-কোরাপশন ৬-এর হাতে। মনোজ শশীধরের সঙ্গে আইপিএস অফিসার গগণদীপ গম্ভীর (ব্যাচ ২০০৪) এবং এসপি নূপুর প্রসাদ এই মামলার তদন্তে যুক্ত রয়েছেন।
সুশান্তের মৃত্যুর ফরেনসিক রিপোর্ট, ফটোগ্রাফসহ সব তথ্য আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে হবে মুম্বই পুলিশকে। এদিন সুপ্রিম কোর্ট মুম্বই পুলিশকে সিবিআইয়ের সঙ্গে সবরকম সহযোগিতা করবার নির্দেশ দিয়েছে।