গত দু'দিন সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর তদন্ত গত দু-দিন উঠে এসেছে মাদক যোগের তত্ত্ব। শুধু ড্রাগ সেবন নয়, ড্রাগ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রিয়া চক্রবর্তী, তেমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে রিয়ার ডিলিট করা হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে। বুধবার রিয়ার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো।
মিডিয়ায় উঠে আসা একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য ও স্ট্রিং অপারেশনের তথ্য দেখে রিয়া চক্রবর্তীর গ্রেফতারির দাবি তুললেন সুশান্তের দিদি শ্বেতা সিং কীর্তি। তিনি বলেন, ‘কেন এখনও অপরাধীদের কাস্টডিতে নেওয়া হচ্ছে না, কীসের অপেক্ষা?’
ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লেখেন, ‘ গত ২ দিনে মিডিয়া যা কিছু তথ্য সামনে এনেছে তাঁদের তদন্তে তা দেখে স্পষ্ট- ১. রিয়া এবং গ্যাং সুশান্তকে ড্রাগ দিত এবং বেঁহোস করে রাখত মাসের পর মাস, যাতে ওকে কন্ট্রোল করে রাখতে পারে। আর্থিকভাবে ওকে নিঃস্ব করবার চেষ্টা করেছে। পরিবারের সদস্যরা যাতে ওর সঙ্গে দেখা না করতে পারে সেই ব্যবস্থাও করেছে রিয়া। যাতে কোনওভাবেও আমরা ওকে (সুশান্ত) উদ্ধার না করতে পারি’।
২. যখন ১৮ মে ভাই এইসব ছেড়ে নিজে চার্জ নিতে চেয়েছিল এবং পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। এই গ্যাং ভয় পেয়ে যায় এবং মেসেজ আদান-প্রদান করে যাতে ভাইয়ের আর্থিক কন্ট্রোল হাতে পায়।
৩. ৮ তারিখ (জুন) রিয়া আমার ভাইয়ের বাড়ি ছেড়ে চলে গেল। একটা আইটি টিম পাঠাল সব ডেটা সংগ্রহ করবার জন্য আমার ভাইয়ের থেকে। ওরা এসে ৮ হার্ড ডিস্কের সব তথ্য নিয়ে গেল, এবং ভাইকে হুমকি দেওয়া হল। এটা তো সিবিআইকে দেওয়া স্টেটমেন্টে ওরা চারজন বলেছে। ওই রাতেই দিশা মারা গেল'।
সুশান্তের প্রাক্তন ম্যানেজার দিশা সালিয়ানের মৃত্যু নিয়ও প্রশ্ন তুললেন শ্বেতা সিং কীর্তি।
একধিক টুইটেও শ্বেতা রিয়ার গ্রেফতারির দাবি তুলে প্রতিবাদ জানান কীভাবে জাতীয় টেলিভিশনে এসে সাক্ষাত্কার দিচ্ছেন রিয়া চক্রবর্তী, এটা অত্যন্ত 'নক্কারজনক ঘটনা' মত শ্বেতার। তিনি লেখেন, ‘আজ তক রিয়ার ইন্টারভিউ করছে ২ ঘন্টা ধরে এবং সেটা সম্প্রচার করবার প্ল্যান করছে জাতীয় টেলিভিশনে। এটা যদি ঘটে তাহলে সেটা মারাত্মক অপমানজনক ঘটনা এবং ১৩০ কোটি ভারতীয় গাড়ে একটা থাপ্পড় যারা আমার ভাইকে বিচার পাইয়ে দিতে লড়াই করছে’।
'ভারত সরকারের এই বিষয়টি দেখা উচিত যাতে একজন মূল অভিযুক্ত কোনওভাবেই এইভাবে পাবলিসিটি স্টান্টের জন্য সাক্ষাত্কার দিতে না পরে। গ্রেফতার করা হোক রিয়াকে'।
বুধবার সন্ধ্যায় NDPS আইনের আওতায় রিয়া এবং ইডির চিঠিতে উল্লেখিত সকলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো সূত্রে খবর নারকোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্স আইন, (Narcotic Drugs and Psychotropic Substances Act) ১৯৮৫-র আওতায় ২০,২২,২৭,২৯-এর মতো ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে রিয়া চক্রবর্তী ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। অর্থাত্ শুধু ড্রাগ সেবন বা ড্রাগ পাচার নয়, ব্যবসায়িক স্বার্থে ড্রাগের আদান-প্রদানের অভিযোগও আনা হচ্ছে রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। রয়েছে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের ধারাও। অভিযোগ প্রমাণ হলে সর্বনিম্ন ১০ বছরের হাজতবাস হবে রিয়া চক্রবর্তীর।