বম্বে হাইকোর্টে বিচারপতি এস পি কোটওয়ালের বেঞ্চে শুনানি শুরু হল রিয়া চক্রবর্তী ও শৌভিক চক্রবর্তীর জামিনের। নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর তরফে এই ভাইবোনের জামিনের বিরোধিতা করা হচ্ছে। আজ ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে চলছে শুনানি। এনসিবির তরফে পরিষ্কার জানানো হচ্ছে ‘রিয়া ও শৌভিক মাদক চক্রের অ্যাক্টিভ সদস্য, যাঁদের হাই সোসাইটির ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগ রয়েছে এবং মাদক পাচারকারীদের সঙ্গেও-তাই এঁদের জামিন দেওয়াটা তদন্তের গতিকে বাধাপ্রাপ্ত করবে’।
সোমবার রিয়া-শৌভিকের জামিনের আর্জির বিপক্ষে হাইকোর্টে হলফনামা জমা দিয়েছে এনসিবি, সেখানে স্পষ্টভাবেই এই কথাগুলির উল্লেখ করেছে। আপতত মুম্বইয়ের বাইকুল্লা জেলে বন্দি সুশান্ত মামলার মূল অভিযুক্ত রিয়া চক্রবর্তী,অন্যদিকে তালোজা জেলে বন্দি রয়েছে শৌভিক চক্রবর্তী। গত ২৩ সেপ্টেম্বর বম্বে হাইকোর্টে রিয়া-শৌভিকের জামিনের আর্জি দাখিল করেন তাঁদের আইনজীবী সতীশ মানেসিন্ধে। ওইদিনই সেশন কোর্টের তরফে রিয়া, শৌভিক সহ মামলার ছয় অভিযুক্তের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া হয় ৬ অক্টোবর পর্যন্ত। এর আগে গত ২৪ সেপ্টেম্বর বম্বে হাইকোর্টে রিয়া-শৌভিকের জামিনের প্রথম শুনানি হয়, সেখানে মানেসিন্ধে রিয়ার মামলায় এনসিবি তদন্তের জুরিশডিকশন নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন। রিয়া-শৌভিকের বিরুদ্ধে এনডিপিএস আইনের ২৭এ ধারা যোগ করা নিয়েও আপত্তি তুলেছিলেন মানেসিন্ধে। আদালতের তরফে এনসিবিকে লিখিত হলফনামায় জবাব দিতে বলা হয়েছিল- কেন তাঁরা রিয়া ও শৌভিককে জেলে রাখতে চায়।
সুশান্তের জন্য মাদক দ্রব্য সংগ্রহ করতেন রিয়া, সেই মাদকের আর্থিক লেনদেনও করতেন, এনসিবিকে দেওয়া বয়ানে এই কথা মেনে নিয়েছেন রিয়া। এনডিপিএস আইনের আওতায় ৮ (সি), ২০ (বি), ২৭ (এ), ২৮, এবং ২৯ নম্বর ধারায় গত ৮ সেপ্টেম্বর রিয়া চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো।
রিয়া নিজের জামিনের আর্জিতে জানিয়েছেন- ‘সুশান্ত শুধু ড্রাগ সেবন করত না, নিজের স্টাফেদের নির্দেশ দিত ওর জন্য মাদক সংগ্রহ করবার’। রিয়া আরও জানান- ‘যদি সুশান্ত আজ বেঁচে থাকত তাহলে ড্রাগ সেবেনের অভিযোগ উঠত তাঁর বিরুদ্ধে, এবং সেটার পরিমাণ অল্প হওয়ায় খুব বেশি হলে এক বছরের সাজা হত সুশান্তের এবং সেটি জামিনযোগ্য অপরাধ’।
২২ তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আজ রিয়া-শৌভিকের জামিনের বিরোধিতা করছে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো বলে খবর। তাঁদের কাছে প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক্স তথ্য- হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট,রেকর্ড রয়েছে যা মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ এবং হার্ড ডিক্স থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। মাদকের আর্থিক লেনদেনের প্রমাণও মিলেছে।
এনসিবি নিজেদের হলফনামায় বম্বে হাইকোর্টে জানিয়েছে- ‘রিয়া নিজের পার্টনার সুশান্তের ড্রাগ সেবনের বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিলেন এবং তা সত্ত্বেও উনি সেটি গোপন করেছেন। এবং এটি আশ্রয় দেওয়ার সমতুল্য হবে। নিজের বাড়িতেও উনি ড্রাগ সংগ্রহ করে রেখে দিতেন যা জঘন্য অপরাধ।
রিয়া-শৌভিকের পাশাপাশি আজ হাইকোর্টে এই মামলায় গ্রেফতার অপর তিন অভিযুক্ত স্যামুয়েল মিরান্ডা, দীপেশ সাওয়ান্ত এবং আবদুল বসিত পরিহারের জামিনের শুনানিও চলছে।