সুশান্ত সিং রাজপুতের আত্মহত্যার মামলায় সোশ্যাল মিডিয়ায় সিবিআই তদন্তের দাবি ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। অন্যদিকে এই মামলার তদন্ত জোরকদমে চালাচ্ছে মুম্বই পুলিশ। কেন আত্মহত্যা করেছেন সুশান্ত? সেই কারণ জানতে সবরকম প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারী অফিসাররা। সুশান্তের আত্মহত্যার রহস্য ভেদ করতে ইতিমধ্যেই ২৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এবার এই মামলায় পুলিশের নজরে বলিউডের দুই নামজাদা পরিচালক-শেখর কাপুর ও সঞ্জয় লীলা বনশালি।
সূত্রের খবর সুশান্তের আত্মহত্যার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই পরিচালক সঞ্জয় লীলা বনশালিকে শমন পাঠিয়েছে মুম্বই পুলিশ। আগামী দিনকয়েকের মধ্যেই তাঁকে বান্দ্রা থানায় হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। সুসান্তের জন্য কোনও প্রজেক্টেই একসঙ্গে কাজ করেননি সঞ্জয় লীলা বনশালি। তবে উল্লেখ্য রাম লীলা ছবিটি প্রথমে সুশান্ত সিং রাজপুতকে অফার করেছিলেন সঞ্জয়। রণবীর সিংয়ের বদলে সুশান্তই ছিল তাঁর প্রথম পছন্দ। বলিউডের অন্দর মহলে সেই সময়ই শোনা গিয়েছিল, যশ রাজ ফিল্মসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকবার কারণেই নাকি ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এই ছবিতে কাজ করতে পারেননি সুশান্ত। এই তথ্য গুলোই যাচাই করে দেখতে চায় পুলিশ। উল্লেখ্য সুশান্তের আত্মহত্যার পর পাটনার আদালতে যে সাতজন বলিউড ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে সেখানে রয়েছে বনশালির নামও।
বনশালির ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, সুশান্তকে শুধু রাম লীলাই নয়, এরপর আরও কয়েকটি ছবি অফার করেছিলেন পরিচালক। কিন্তু প্রত্যেকবারই কোনও না কোনও কারণে সেই প্রজেক্টের অংশ হতে পারেননি সুশান্ত।
জানা গিয়েছে এই মামলায় দ্বিতীয়বার জেরা করা হবে যশ রাজ ফিল্মসের কাস্টিং ডিরেক্টর শানু শর্মাকে। ২০১২ সালে যশ রাজ ফিল্মসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন সুশান্ত। তিনটি ছবি করবার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু শুদ্ধ দেশি রোম্যান্স ও ডিটেকক্টিভ ব্যোমকেশ বক্সীর পরেই সেই চুক্তি ভেঙে যায়। শেখর কাপুরের পরিচালনায়,যশ রাজের প্রযোজনায় পানি ছবিতে অভিনয়ের কথা ছিল সুশান্তের। ২০১২ সালে পানির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা সারলেও তিন বছর পর আচমকাই পানি থেকে সরে দাঁড়ায় যশ রাজ ফিল্মস। যার কয়েক মাসের মধ্যেই এই সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন সুশান্ত।
সুশান্তের আত্মহত্যার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে পানির পরিচালক শেখর কাপুরকেও। অভিনেতার মৃত্যুর পর সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কিছু বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন শেখর কাপুর। ইনস্টাগ্রাম লাইভে মনোজ বাজপায়ীকে শেখর কাপুর বলেন 'পানির প্রযোজক বলে ছিল, আমরা সুশান্তকে নিয়ে পানি তৈরি করব না,পানি তৈরি হবে না'। এছড়াও সুশান্তের মৃত্যুর পরেই একটি টুইট বার্তায় শেখর কাপুর নাম না করেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করান বলিউডের কিছু ব্যক্তিত্বকে। তিনি লেখেন, আমি জানি তুই কোন যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলিস। আমি জানি সেই সব মানুষের কথা যারা তোকে খুব বাজেভাবে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে।তুই আমার কাঁধে মাথা রেখে কেঁদেছিস।যদি শেষ ছ’টা মাসও আমি তোর পাশে থাকতাম..যদি তুই আমার কাছে অন্তত একবার ফিরে আসতিস। তোর সঙ্গে যা হয়েছে এর কর্মফল ওদের ভোগ করতে হবে। এটা তোর দোষ নয়’।
সুশান্তের আত্মহত্যার কারণ হিসাবে পেশাদার জগতের বিদ্বেষের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা। তাই শেখর কাপুরের থেকে উল্লেখযোগ্য সূত্রে মিলতে পারে বলেই মন করছে পুলিশ।