বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুম্বই পৌঁছানোর পর থেকেই কোমর বেঁধে সুশান্ত সিং রাজপুত মামলার তদন্তে নেমে পড়েছে সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী টিম। শনিবার সুশান্তের অ্যাপার্টমেন্টে গিয়ে ক্রাইম সিনের পুনঃনির্মাণ করা হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে। গতকাল সকাল থেকে লাগাতার জেরা করা হয়েছিল সুশান্তের রাঁধুনি নীরজ ও ক্রিয়েটিভ ম্যানেজার তথা ফ্ল্যাট মেইট সিদ্ধার্থ পিঠানিকে। ক্রাইম সিনের পুনঃনির্মাণের জন্যও সুশান্তের অ্যাপার্টমেন্টে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এই দুইজনকে। যাঁদের মধ্যে একজন (নীরজ) জীবদ্দশায় শেষবার সুশান্তকে দেখেছে এবং দুজনেই মৃত্যুর পরেও প্রথম সুশান্তের দেহ দেখে বলে জানা গেছে।
শনিবারের পর রবিরার সকালেও সিবিআই ফের জেরা করছে এই দুজনকে। এদিন সকাল সকাল সিবিআইয়ের খাঁটি ডিআরডিও গেস্ট হাউজে পৌঁছাতে দেখা যায় সিদ্ধার্থ পিঠানি ও নীরজকে। এই নিয়ে একটানা তিনদিন সিবিআইয়ের জেরার মুখে নীরজ। অন্যদিকে দ্বিতীয় দিন কেন্দ্রীয় সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদের মধ্যে পড়তে হচ্ছে সিদ্ধার্থ পিঠানিকে।
ক্রাইম সিনের পুনঃনির্মাণের পাশাপাশি শনিবার সুশান্তের অ্যাপার্টমেন্টের চতুর্দিক খতিয়ে দেখে সিবিআইয়ের ফরেনসিক টিম। ঘটনার প্রায় ৬৮ দিনের মাথাতেও কোনওরকম ফরেনসিক এভিডেন্স পাওয়া সম্ভবপর কিনা তা নিশ্চিত করতে চেযেছেন সিবিআইয়ের টিম। সূত্রের খবর এদিন সিবিআইয়ের প্রায় ২৫-২৭ জনের একটি টিম হাজির ছিল সুশান্তের বাড়িতে। সাতটি গাড়িতে শনিবার দুপুর ২.২৫ মিনিট নাগাদ বান্দ্রার কার্টার রোডের মাউন্ট ব্ল্যাঙ্ক অ্যাপার্টমেন্টে হাজির হন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা।
এদিন সুশান্তের মৃত্যুর তদন্তে প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কুপার হাসপাতালে পৌঁছাল সিবিআইয়ের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। মুম্বইয়ের এই হাসপাতালেই ১৪ জুন ময়নাতদন্ত করা হয়েছিল সুশান্তের। মুম্বই পুলিশ আগেই জানিয়েছিল, ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্টে কুপার হাসপাতালের পাঁচজন চিকিত্সক সহমত পোষণ করেছেন সুশান্তের মৃত্যু হয়েছে ‘ঝুলে পড়বার কারণে শ্বাসরোধ হয়ে’।
যদিও এই রিপোর্ট নিয়েও বেশ কিছু ধোঁয়াশা করেছে বলে খবর। কেন সুশান্তের অটোপসি রিপোর্টে উল্লেখ নেই মৃত্যুর সময় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিবিআই ? ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, AIIMS-এর ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সুধীর গুপ্তা জানিয়েছেন ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মৃত্যুর সময়সীমা বেঁধে দেওয়া আবশ্যিক। সুশান্তের ময়নাতদন্ত করা হয়েছিল অন-ক্যামেরা। সেইসব ভিডিয়ো ফুটেজ এবং সুশান্তের অটোপসি রিপোর্ট, ভিসেরা রিপোর্ট অনান্য আবশ্যিক তথ্য ইতিমধ্যেই সংগ্রহ করেছে সিবিআইয়ের টিম। যা যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে সুধীর গুপ্তার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ টিমের কাছে। জানা গিয়েছে সেই সব রিপোর্ট খতিয়ে দেখে আগামী তিনদিনের মধ্যে সিবিআইকে মেডিকো-লিগ্যাল ওপিনিয়ন দেবেন সুধীর গুপ্তা ও তাঁর টিম। আত্মহত্যাই করেছেন সুশান্ত নাকি কোনওরকম ফাউল প্লে-র সম্ভাবনা রয়েছে জানাবেন তাঁরা। তাঁদের রিপোর্টের উপর সিবিআইয়ের তদন্ত অনেকখানি নির্ভরশীল হতে চলেছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।